(উৎসর্গ: মাকে)
ধরে নিন,
আজ কিয়মাতের দিন।
পৃথিবীটা হাসরের ময়দান।
আমার মা এখানে আমার জন্য
আল্লাহর আরশের ছায়াযুক্ত স্থান।
অথবা এ পৃথিবীটা ঊষর প্রান্তর, মেঘহীন, ধু ধু মরুভূমি
আমা মা এখানে পাহাড়ের হৃদয় চুমি’
বয়ে চলা ছন্দময়, চঞ্চল
পাহাড়ি ঝরনাধারা। বয়ে চলছেন অবিরল
বাধাবন্ধনহারা।
বারোটা মাস একই ছন্দে, কলনৃত্যে ছোটেন,
জন্ম দিয়ে চলেছেন দুই ধারে তার অগণন মরুদ্যান।
কিংবা এ মরু প্রান্তরে উঠেছে সাইমুম ঝড়,
কোথাও আশ্রয় নেই,
বাতাসের তোড়ে
সবকিছু উড়ে
যেনো তুচ্ছ টুকরো খড়।
মা এখানে আমার জন্য সুরক্ষিত ইমারত,
কংক্রিটে বাঁধা ঘর।
না হয় ধরুন, জলবায়ু পরিবর্তনে
পৃথিবীটা ভরে গেছে লোনা জলে,
মহাবিশ্বের কোথাও পিপাসা নিবারণের জলটুকু নেই-
গ্রহ, নক্ষত্র, সপ্তর্ষিমণ্ডল, ধরণি ও নভোস্তলে।
মরণসম পিপাসায় বুকের ছাতি ফেটে যায়,
সবাই ছুটছে হন্যে হয়ে একটু শুধু খাবারযোগ্য মিষ্টি পানির জন্যে।
চারদিকে শুধু পানি আর পানি, পানের যোগ্য নয়,
পানি বিহনে সকলের মনে জাগছে মৃত্যুভয়।
আমার মায়ের স্নেহের আশিস সেথা স্নিগ্ধ সুশীতল
(তৃষিত হৃদয়ে আমার) পিপাসার মিষ্টি জল।
কিংবা এখানে লেগে গেছে নিরবচ্ছিন্ন খরা
চারদিকে জ্বলে রৌদ্রদাহ, ভিক্ষে মাগছে বসুন্ধরা
একটু ছায়া, একটু মেঘ, একটু বরষার,
পৃথিবীবাসি সমাধান খোঁজে পায়না কোনো উপায়।
আমার মায়ের হাতের এখানে ছোঁয়া বটবৃক্ষের সঘন নিবিড় ছায়া
দুঃখ তাপে দাহ্য আমি সেখানে কর্মক্লান্ত, অবসন্ন কায়া
জুড়াই পরম নির্ভাবনায়।
নয়তো ভাবুন,
অবনি ‘পরে লেগেছে নিদারুণ মহামারি,
কোথাও মেলেনা ওষুধ-বৈদ্য, ঘরে ঘরে আহাজারি
চলছে চিকিৎসা পাবার।
আমার মায়ের ভালোবাসা এ স্থলে আমার পরম মহৌষধি
অসুখ-বিসুখ দূর হয় সব, মা, কপালে হাতটা বুলান যদি
শুধু একবার।
অথবা সারা পৃথিবীটাই রাখাইন বা ফিলিস্তিন,
যেখানে হত্যাযজ্ঞ সারাক্ষন চলে বাছবিচারহীন,
চলে ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ, রাহাজানি, লুণ্ঠন আর খুন
মানবের অধিকার নেই সেখানে, নেই আইন ও কানুন
এই পরিবেশে মা আমার খোদার পরেই সবোর্চ্চ সত্তা
আমার জন্য মা পৃথিবী সকল নিরাপত্তা।