পথেদের যে ভাষা, সেইসব ভাষা তো আমরা
এখনো বুঝে উঠতে পারি নাই। এইসব ভরা-
ভর্তি ফাগুনের রাতে কোথাও কোথাও ব্যাঙ
ডেকে উঠলে আমরা নস্টালজিক হইয়া যাই।
আমাদের তখন স্কুলবেলা মনে পড়ে, ল্যাংটা
সাঁতার আর কাকভাত তুলে আনার সেইসব
আইলপথগুলা, সেইসব পাথরকুচি পাতাগুলা,
যেইসব পাতাদের কাঁটাগুলা কানি আঙুলের
নিচে ঢুইকা চুপচাপ বইসা থাকতো, আমরা
কাউরেই দেখাতে পারতাম না--সেইসব পাতা
আর আইলদের কথা মনে পড়ে। ঘোরলাগা
বৃষ্টিদের কথাও। আমরা কোনো কোনো এই
রাতজাগা বৃষ্টির দিনে কই মাছ ধরতে যেতাম।
কই মাছ যেমনে ধরতে হয়-- নামে একটা বই
আমরা যে কেউই চাইলেই লিখতে পারি, তবুও
আমাদের মতন এত গভীর মনসংযোগ দিয়া
কেউ কই মাছ ধরতে যাবে বলে আমার মনে
হয় না। আমরা তবুও কই মাছের গল্প-টল্প করি।
কেন করি, সেইসব শুধু পথেরা জানে। পথেরা
আরো জানে কখন কখন ব্যাঙ ডেকে উঠবে--
আর সেইসব ব্যাঙেদের কর্কশ ডাক উপেক্ষা
করে উড়ে যাবে কিছু উদ্বায়ী কদম ফুলের ঘ্রাণ।
আমাদের তখন কদম ফুল ছিড়বার কথা মনে
পড়ে। কদম ফুল ছিড়বার সাথে সাথে পৃথিবীর
পথ ধরে ধুলাবালির গান গাইতে গাইতে বৃষ্টিরা
আইসা নামে। বৃষ্টিদের আসবার কথা আমরাও
কিছু কিছু জানি। তবে পথেরাই সবটুকু জানে…
এমন অনেক কিছুই আমরা জানি না, যেইসব
সবকিছু শুধু পথেরাই জানে। পথেরা কি কি সব
জানে, সেইসব আমরা কিছুই জানি না। আমরা
শুধু জানি, কদম ফুল ছিড়বার দিন আসলে বৃষ্টি
হয়। বৃষ্টির সাথে কদম ফুলের কি রকম সম্পর্ক
সেইসব কথা কার কাছে গিয়া জানি? আমি তাই,
পাথরকুচি পাতা আর দূর্বাঘাসের আইলের কাছে
ফিরে যাচ্ছি। কানি আঙুলের কাঁটাগুলার কাছে।
০৪ মার্চ, ’২০। ফাগুনের রাত।
মিরপুর, ঢাকা।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা মার্চ, ২০২০ দুপুর ১২:২২