এই রকম কোনো কোনো ডিসেম্বর শেষে আমাদের
বাড়ি ফিরবার তাড়া শুরু হইয়া যেতো…
আমাদের তখন শুধু শুধু মন খারাপ হতো
আমাদের তখন শুধু শুধু ভালো লাগতো না!
সেইসব ডিসেম্বরের বৃষ্টিহীন গাঢ়তর শীতের দিনগুলা
আমরা কাটায়া দিতাম মামা বাড়িতে…
সেইসব ভাপা পিঠা আর উরুম মুলা'র দিনগুলায়
আমরা ফররুখ মামার দোকানে নারুটি আনতে
যাইতাম। ফররুখ মামায় নারুটি সেঁকতো আর
কিছুক্ষণ কিছুক্ষণ পর ডাকতো, ভাগিনা…
আমি তখন মনে মনে বলতাম, ফররুখ আহমদ!
আমাদের সেইসব নারুটি কিনা আর ফররুখ
মামার 'ভাগিনা" শোনবার দিনগুলা আর নাই…
সেইসব ভাপা পিঠা আর দাওয়াত খাওয়ার দিনগুলা
আমরা, বল খেলার মাঠে হারায়া আসছি,
সেইসব গোদা বানবার দিনগুলা হারায়া আসছি…
মানুষ তো শুধু শুধুই সবকিছু হারায়া ফেলে, তবুও
সেইসব ডিসেম্বরের শীতগুলা হারায়া ফেলবার
আশৈশব বেদনা নিয়া আমরা বাড়ি ফিরে আসতাম।
আমরা তখন একটা রাতাকুরা নিয়া বাড়ি ফিরতাম
আমার বাবা বাড়িতে রাতাকুরা আনা পছন্দ
করতেন না। তিনি মলইর বিরিজ পার হইয়া
রাতাকুরার পা খুইলা দিতেন, আমরা আবার
কান্না শুরু করতাম, আমার মা-ও কান্না করতো।
আমরা সবাই কান্না করতে করতে বাড়ি ফিরতাম।
আমাদের সেইসব রাতাকুরাহীন বাড়ি ফিরবার
দিনগুলা হারায়া গেছে। সেইসব উরুম মুলা আর
ভাপা পিঠা খাওয়ার আশৈশব সব শীতকালগুলা…
আমরা হারায়া ফেলছি কোনো এক আমাকে কে!
৩১ ডিসেম্বর, '১৯৷ পৌষের রাত।
মিরপুর, ঢাকা।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ১০:১৭