মহাপ্রয়াণে
কবি এম আহমদ আলী সাহিত্যরত্ন
সহসা শুনিনু মহাপ্রয়াণ কাব্য ভারতী নাই,
মহাশূন্যে আত্মা তাহাঁর চলে গেছে অমরায়।
ক্রন্দনরোলে ভরে গেছে আজ আকাশ যশোর ধাম,
তব পরিজন বন্ধু মহলে শুধু শোক আনজাম।
অবলাকান্ত শান্তির কোলে অমরায় তুমি আজ,
সাহিত্য সংঘ বক্ষে নেমেছে অথই বেদনা বাজ।
তুমি গেছ এই ধরণী হইতে ভস্মকণাতে মিশে,
সাহিত্যরথী, সাহিত্যগুরু, হারায়েছি মোরা দিশে।
সুদীর্ঘকাল তব আহবানে যশোর সাহিত্যসেবী
সাধনা করেছে তন্ময় চিত্তে বীণাপানী বাগদেবী।
নয়া বাংলার জ্ঞানী, গুনী বহু তব অভিনন্দনে,
লভিয়াছে নয়া জিন্দেগী সবে সাহিত্য ফুলবনে।
তোমাকে অনেকে নিন্দিল জানি ঘর ও বাহির হতে,
দৃকপাত তুমি করনিকো তাহে কোন দিন কোন মতে।
বেসেছিল ভাল বাংলা বিপ্লবী মহান শ্রীমধু মাইকেলে;
এত ভালবাসা বাংলা-ভারতে তুমি ছাড়া নাহি মিলে
‘মধুগিতি’ তব কীর্তি মহান মহাবির ‘সীতারায়’
‘হিরন্ময়ী’ নাটক তোমার রচনা যে অক্ষয়!
তুমি ‘যশোহর সাহিত্য সংঘ’ স্থাপি বাংলায়,
ধন্য করিলে যশোরবাসীকে সাহিত্য সাধনায়।
যে দেশে মানব মরে না কখনও তুমি সেই দেশবাসী,
আশীষ করিও তথা হতে নিতি সংঘেতে নেমে আসি।
তোমার আসনে কে বসিবে ভাবি সংশয়-সংকোচে,
কে দেবে শান্তিতে ভাই-বোনদের ব্যথা বিদগ্ধ রোজে।
এই কবিতাটি শ্রদ্ধেয় কবিরাজ অবলাকান্ত মজুমদারের মৃত্যুর পরের দিন তাঁর বাড়িতে পারিবারিক শোকসভায় পঠিত।
০৭-১০-১৯৫৭ ইংরেজী