কি খবর? কি করো? আরে না না না, এখন না…(মোবাইলে কথা বলছিলাম, এমতাবস্থায় পিছন থেকে একজনের ডাক) “এই যে ভাই আপনাকে ডাকে” ।
– জী ভাই বলেন ।
– আচ্ছা আমার সাথে যে আপনার ধাক্কা লাগছে এটা কি তুমি লক্ষ্য করেছ ।
– জী না ভাইয়া ।
– কারও সাথে যদি ধাক্কা লাগে তো কি করতে হয় ।
– আসলে ভাইয়া আমি বুঝতে পারিনি যে আপনার শরীরের সাথে আমার ধাক্কা লাগছে, মোবাইলে কথা বলতেছিলাম তো । যাই হোক আমি sorry ভাইয়া । আসলে আমি বুঝতে পারিনি যে আপনার সাথে আমার ধাক্কা লাগছে ।
– হু ভালো ।
– কি করো তুমি?
– ভাইয়া আমি student পড়ালেখা করি ।
– ওহ আচ্ছা, ভালো । গ্রামের বাড়ি কোথায়?
– জী ভাইয়া ফরিদপুর ।
– কোন কলেজে পড়?
– ভাই Daffodil এ ।
– হু, ঢাকা থাকো কই?
– ফার্মগেট ।
– ফার্মগেট কোথায়?
– রাজা বাজার ।
– আমারে চিনো?
– জী না ভাইয়া ।
– কখনো টিভিতে, পেপারে আমারে দেখ নাই?
– না, আর দেখলেও মনে নেই ।
– আমার নাম জানো?
– না ।
– আমার কষ্ট লাগতেছে, তুই আমারে চিনিস না । আমার নাম বাবু, ধানমণ্ডির সবাই পিস্তল বাবু বলে চিনে, আর তুই আমারে চিনিস না ।
– ওহ ভাইয়া আসলে……
– শোন আমি যদি তোরে রাস্তায় ফেলে গুলি করে মেরে ফেলি । তাহলে কি তুই আমার কিছু করতে পারবি?
– না ।
– আমি যদি তোরে মারি তোর মা সারা জীবন কাদবে আর আমারে অভিশাপ দিবে ।
– হু ।
– তো তোরে আমি মারব না । তুই ছাত্র মানুষ পড়া লেখা করিস । তোরে যদি আমি বা আমার কোনো পোলাপান গুলি করে বা রস্তায় গাড়ির তলে ফেলে মেরে ফেলে তোর কি কিছু করার আছে?
– না । আচ্ছা ভাইয়া আমি Sorry । ঠিক আছে । আমি আসি ।
– দাঁরা, শোন এই ধানমণ্ডি এলাকায় কারও ক্ষমতা নাই আমার উপরে কথা বলে । (ভাই আপনি এখানে? শোন, ও ছাত্র মানুষ কখনো ঝামেলা করবি না । ঠিক আছে ভাই । যা ) । ওরা হচ্ছে আমার বাচ্চা-কাচ্চা । শোন ওরাতো মাথা নষ্ট পোলাপান । ওদের মিষ্টি খাওয়াইতে হয় । আর মিষ্টি খেতেতো টাকা লাগে ।
– ভাইয়া বুজলাম না ।
– মিষ্টি খাইতে টাকা লাগে
– হ্যাঁ । কিন্ত আমার কাছে তো টাকা নাই ।
– দেখি? এই দেখেন মানিব্যাগ খালি ।
– এটা কি? কত টাকা আছে কার্ডে?
– না ভাই কার্ডে কোন টাকা নাই । যা ছিল কলেজে দিয়ে দিছি আজ । আজ দিছিস? না দুইদিন আগে, এখন কোন টাকা নাই । আবার বাড়ি থেকে টাকা পাঠাবে তখন টাকা হবে ।
– আচ্ছা । ব্যাগে কি?
– ভাই বই-খাতা ।
– আর কি?
– আর কিছুই নাই?
– সত্যি আর কিছু নাই?
– আছে friend এর একটা Laptop ।
– কি লাপটপ?
– Hp ।
– core কত?
– জানিনা ।
– সত্যি জানিস না?
– সত্যি জানিনা ।
– laptop use করতে জানিস?
– একটু একটু ।
– বের কর ।
– ভাইয়া আপনি বুতেছেন না কেন আমারে ফোন করতেছে । বাসায় যেতে হবে ।
– আমি কি তোর laptop নিতে চাইছি ।
– না ।
– আচ্ছা ভাইয়া আপনার মোবাইল নাম্বারটা আমাকে দিবেন? যদি কখনো কোনো ঝামেলায় পরি আপনারে ফোন দিলাম… হু ফোন নাম্বার তো অবশ্যই দিব ।
– laptop টা বের কর । ভাইয়া এখন না ।
– আপনার ফোন নাম্বার টা দেন । আচ্ছা নে ০১৯xxxxxxx৫ ।
– ধন্যবাদ ।
– যদি কোন সমস্যা হয় ফোন দিবি ।
– জী ভাই । আসি ।
– যা ।
বলেই দ্রুত ওভার ব্রিজ পার হয়ে শুক্রাবাদ বাস স্ট্যান্ড থেকে রিক্সা নিয়ে সোজা রাজা বাজার, যদিও পকেটে একটা টাকাও নাই । কিছু দুর যাই আর পিছে ফিরে দেখি যে সন্দেহমুলক কেও আসে কিনা । কিছু দুর যাওয়ার পরে রিক্সা মামা medicine কিনবে । তাই ঔষধ এর দোকানের সামনে রিক্সা রাখল । আমার মনে হতে লাগলো এও মনে হয় তাদের দলের একজন । কিন্তু না । ঠিকমতো বাসার সামনে এসে পোওছালাম । বাসার নিচে দাড়িয়ে রাব্বি ভাইকে ফোন দিয়ে বললাম ২০ টাকা নিয়ে নিচে আসতে । তারপর রিক্সার টাকা দিয়ে সোজা রুম । ঘটনাটা রুমের সকলের সাথে share করলাম । সবাই একট আকটু হাসলো । কিন্তু আমি জানি যে, আমি কতটা ভয় পেয়েছি ।
এটি ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ঘটে যাওয়া একটি ঘটনা । এটি আমি প্রথম আলো ব্লগে প্রকাশ করেছিলাম ।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:৪৬