ডোনাল্ড ট্রাম্প ও বাংলাদেশের লোকেদের অভাবনীয় জ্ঞান ,
রাস্তার পাশে চা পান করতে গিয়েছিলাম । চায়ের দোকানদার হরমুজ আলী তার নিয়মিত খদ্দের রিক্সা চালকদের উদ্দেশে বললেন আচ্ছা ট্রাম্পে কি হোয়াইট হাউস ছাড়বো ? একজন রিক্সা চালক বললেন হালায় মনে অই ঝামেলা করবো । আর একজন বললো ছাড়বো কেমনে হের্ বৌ মেলানিয়া হেরে তালাক দিবো । একজন বললেন বাইডেন কঠিন চিজ হালায় ট্রাম্পের ঘাড়ে ধইরা বাইর করবো । আমি অবাক হয়ে গেলাম আমাদের দেশের লোকদের আমেরিকার রাজনৈতিক নেতাদের নাম ও রাজনৈতিক জ্ঞান এর বহর দেখে ।
অফিসের পিওন আমাকে বললো স্যার আমেরিকার গণতন্ত্র মনে হয় বিপদে । এইবার আমি নিজেই বিপদে পরে গেলাম । গণতন্ত্র নিয়ে আমি প্রকাশ্যে কোনো কথা বলার সাহস রাখি না শেষে আবার কোন ঝামেলায় গায়েবি হামলা মামলার আসামি হয়ে যাই। চাকুরী রক্ষায় গণতন্ত্রের অসীম গুরুত্ত্ব। বাইরে অন্যদের ও দেখি চাপা স্বরে এইসব নিষিদ্ধ চর্চা নিয়ে আলোচনা করে , কিন্তু অফিসে একদল এক নেত্রী একথা খুব জোরে জোরে বলে যেন বসের কানে যায়। আমিও এইসব আসল নকল মনের মানুষদের সুরে জ্ঞান গায়,জোরে জোরে খুব চাপাবাজি করি বাংলাদেশ হচ্ছে গণতন্ত্রের বেস্ট জায়গা । আজকাল ভোট কেন্দ্রে মানুষ যেতে চায় না কারণ তারা জানেন যাহা বাহান্ন তাহাই তিপান্ন । গেলেও যে রেজাল্ট না গেলেও তাই। আমার ভোট কে দিয়েছে সেটা জানার চেষ্টা করি না কারণ আমাদের গণতন্ত্রে রাত জেগে যে কর্মকর্তা আমাদের মৃত ও জীবিত মানুষদের ভোটের ব্যবস্থা করেছেন ও করবেন উনি মহান । উনি নিজে কষ্ট করে অন্যের কষ্ট কমিয়ে দিচ্ছেন। ভাই আমি জানি আপনারা আমাকে দালাল ভাবছেন । ভাই দেশের পিওন থেকে সচিব পর্যন্ত সবাই যে কথা বলে আমি হতভাগা একা তার বিরুদ্ধে যেয়ে কি বিপদে পড়বো। আপনি কি আমার জেলে থাকা অবস্থায় আমার পরিবারের চাউল কিনে দেবেন না বাচ্চার দুধ ? মামলার খরচ জানেন ? উকিল পকেট কাটবে না পকেট শুদ্ধ প্যান্ট নিয়ে নেবে । যে একবার উকিলের পাল্লায় পড়েছে সে কেসের নাম শুনলে ভয় পাবে । আমাদের মত প্রকাশের স্বাধীনতা আছে তার প্রমান আমরা আমেরিকার নির্বাচন নিয়ে গবেষণা করি কেউ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কেস খায় না। কি উদার দেশে আমাদের বসবাস। আমাদের মত আছে তা দেশের জন্য প্রকাশ ও দ্বিমত করার সুযোগ নাই তাই নিজেদের গণতন্ত্র নিয়ে আলোচনা করি না। ঐযে ডাক্তার যেমন নিজের চিকিৎসা করতে পারেন না । আমাদের ছি:ই ছি স্যার বলেছেন আমরা পাঁচমিনিট ভোট গণনা করি আর আমেরিকার লাগে পাঁচ দিন। লজ্জায় আমেরিকার লোকদের মরে যাওয়া উচিত কিনা আপনারাই বলুন । ছি:ই ছি স্যারকে নিয়ে গেলে ভোটের আগে ফল প্রকাশ করে ওদের মাথা ঘুরিয়ে দিত। আমাদের মেধার দেশ , মেধাবী ড্রাইভার মালেক কোটিকোটি টাকার মালিক হয়েছেন । আমেরিকার জনগণ আহাম্মক ভোট দেয় সরকার পরিবর্তনের জন্য আর আমরা ভোট দেই গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা রক্ষা করার জন্য , আমাদের মত আমেরিকার লোকদের ভোট দিয়ে দেয়ার মত লোক নাই কি দুঃখ কি দুঃখ কি লজ্জা কি লজ্জা ।
আমাদের রিক্সাওয়ালার কত জ্ঞান , রিক্সায় চড়ে একবার আমেরিকা , বা ইন্ডিয়ার প্রসঙ্গ তুলবেন দেখবেন আলোচনা কাহাকে বলে কত প্রকার ও কি কি ? রিক্সা গাড়ির সাথে ধাক্কা খেয়ে ছিটকিয়ে যদি নিচে পড়ে না যান তাহলে শুনবেন মোদী থেকে বাইডেন , ট্রাম্প মিলানিয়ার লেটেস্ট খবর।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই নভেম্বর, ২০২০ রাত ১০:১৩