গল্পটি ধূর্ত শিয়াল ও বোকা এক কুমিরকে নিয়ে। এই ধূর্ত শিয়াল কুমিরকে বোকা পেয়ে বারবার
ঠকায়। ঠকতে ঠকতে এক সময় সেই কুমির কিছুটা চালাক হয়ে পড়ে। একদিন সেই শিয়াল
সাঁতরে নদী পার হতে যায়। তখন বাগে পেয়ে সেই কুমির শিয়ালের পা জাপটে ধরে। শিয়াল নদীর
স্রোতকে শুনিয়ে শুনিয়ে হাসতে হাসতে বলে, ‘দেখো দেখো স্রোত ভাইয়া, কুমিরটি এখনো সেই
আগের মতোই বোকা রয়ে গেছে। আমার পায়ে না ধরে লাঠিতে ধরে বসেছে।’ এমনভাবে জব্দ হওয়ার পরেও শিয়ালের হাসি দেখে কুমির আরো বিভ্রান্ত হয়ে পড়ে। শিয়ালের পা ছেড়ে দিয়ে লাঠিটি জাপটে ধরে। তখন হাতের লাঠি ফেলে রেখে ধূর্ত শিয়াল দ্রুত নদী পার হয়ে যায়।
জনগন যেন সেই বোকা কুমির! যাকে বোকা পেয়ে ধূর্ত শেয়াল বারবার ঠকায়। ঠকায় দশ টাকা সের চালের ক্ষুধায়, ঠকায় ঘরে ঘরে চাকুরী ছুতায়, ঠকায় শেয়ার বাজারে, পদ্মা সেতুতে! ঠকায় নির্বাচনে, গনতন্ত্রে...
এভাবে ঠকতে ঠকতে বোকা কুমির কিছুটা চালাক হয়ে পড়েছে, ফেসবুক-ব্লগে এ নব্য চালাক কুমিরেরা স্ট্যাটাস দিয়ে শেয়াল ধরছে বটে তবে সমস্যা হলো অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তাদের ধরাটা শেয়াল নয় বরং শেয়ালের বাড়িয়ে দেয়া পা!!
সম্প্রতি ভারতীয় জনতা পার্টি বিজেপির অন্যতম শীর্ষ নেতা সুব্রাক্ষণিয়ম স্বামী বাংলাদেশের কাছে এক তৃতীয়াংশ ভূখণ্ড দাবি করায়, চালাক কুমিরেরা স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে ফেসবুকে-ব্লগে সুব্রাক্ষণিয়ম স্বামী আর ভারতের তীব্র প্রতিবাদ করছে ঠিকই, তবে পরিহাস হলো সেটা শেয়াল নয় বরং শেয়ালের লাঠি!
আমি ভাবছিলাম- ১৭৫৭ সালে পলাসীর আম্রকাননে ইস্ট-ইন্ডিয়া কম্পানীর আগ্রাসন নিয়ে যতটা সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছিলো তার এক শতাংশও যদি ইস্ট-ইন্ডিয়ান দালাল মীর জাফরদের নিরবতা সম্পর্কে নেয়া হতো তবে বাঙলা-বিহার-উড়িষারের স্বাধীনতার সূর্যটা ডুবতো না!
আজ ভারতের আগ্রাসন নিয়ে নব্য চালাক কুমিরেরা ১৭৫৭'র মতোই সচেতন! এবং নিখিল ভারতের নিরবতার দালালদের প্রশ্নে অবচেতন! স্বাধীনতার সূর্য কি আর গগনে থাকবে??
লক্ষ্যনীয়, সুব্রাক্ষণিয়ম স্বামীর এ বক্তব্যের পর বাংলাদেশের সরকার কি ভারতীয় দুতাবাসে কোন ব্যাখ্যা চেয়েছে?
উত্তরঃ না!
পররাষ্ট্র মন্ত্রানালয় কি কোন প্রতিবাদ করেছে?
উত্তরঃ না!
এ নিরবতা কি ঐতিহাসিক গোধুলী লগ্নের ইংগিত নয়?
তাই, ডিয়ার কান্ট্রিমেট, প্লিজ ওয়েক আপ।
সার্বভৌম্তের প্রশ্নে নিরব থাকা শেয়ালকে বাদ দিয়ে লাঠি ধরতে যাবেননা!
স্বাধীনতার সূর্য অস্তমিত হবার পূর্বেই চিনে নিন দালালরূপি শেয়ালদের। এদের ধরুন এবং ডুবিয়ে দিন। নইলে এরা স্বাধীনতার সূর্যই ডুবিয়ে দেবে....