মন হলো বুদ্ধি এবং বিবেকবোধের এক সমষ্টিগত রূপ
যা চিন্তা, অনুভূতি, আবেগ, ইচ্ছা এবং কল্পনার মাধ্যমে প্রকাশিত হয়। আসলে মনের সার্বজনীন সঙ্গা প্রদান সম্ভব নয়। পুরোটাই আপেক্ষিক। আবার আমাদেরকে যা প্রভাবিত করে, প্ররোচিত করে এমন অনুভূতিও মনস্তাত্তিক কল্পনায় প্রভাব বিস্তার করে। তাই বলা যেতে পারে, যে ক্রিয়াগুলো আমাদের আলোড়িত করে সতেচন করে তাই হলো মন। অবশ্য এটাকে অপরিবর্তিত আধ্যাত্ম সত্তাও বলা যেতে পারে। যেহেতু এটা পুরোমাত্রায়ই আপেক্ষিক তাই এর কার্যকলাপও আধ্যাত্মিক। মানুষ কাউকে উপলব্ধি করতে চাইলে মানুষ ভাবে সে মন থেকেই করছে। কোন বিষয়ের প্রতি সম্পর্কিত হতে হলে মানুষের চিন্তা-চেতনা ধ্যান- ধারণা বা সুখ-দুঃখ অনুভতির প্রয়োজন হয় যা মানুষ মন থেকে শরীরের আচরণের মাধ্যমে বহিঃপ্রকাশ ঘটায়। মানুষের বেশকিছু জৈবিক চাহিদা রয়েছে। এগুলো পূরণ করার জন্য মানুষ বিভিন্ন সম্পর্কে যায় এবং নানা ধরনের আচরণ করে থাকে। জৈবিক চাহিদাগুলোর মধ্যে রয়েছে ক্ষুধা, তৃঞ্চা, ঘুম, যৌনতা ও রেচন প্রভৃতি। এ চাহিদাগুলো যখন পূরণ হয়ে যায়, তখন মানুষ মানবিক এবং বুদ্ধিবৃত্তিক নানারকম কার্যাবলী সম্পাদন করে থাকে।মন ও চেতনা একইরকম মনে হলেও প্রকৃতপক্ষে মন ও চেতনা এক নয়। যদিও চেতনা হল মনের স্বরুপ লক্ষণ। আর অচেতন মন একইসাথে অযুক্তিকর কিছু অদ্ভুত অবাস্তব চিন্তা ভাবনারও ভাণ্ডার। এইসব চিন্তা-ভাবনাগুলি কিছু সময়ে আমাদের চেতন মনে এসে আমাদের বিব্রত করে। অচেতন মনের এমন চিন্তা-ভাবনাগুলি আমাদের মন অথবা মস্তিষ্কের ভিতর থাকা প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পুনরায় অবচেতন মনে অবদমন করে।
Oxford living Dictionary অনুযায়ী মন হলো :The element of a person that enables them to be aware of the world and their experiences, to think, and to feel; the faculty of consciousness and thought.
মন সম্পর্কিত বিখ্যাত কিছু উক্তি :-
মানুষ দ্বিমনা। তার ভেতরে দুইটি মন আছে একটা খোলা মন একটা ভালো মন তার একটা অবজাত একটা অভিজাত তাদের একজন ছোটলোক একজন ভদ্রলোক।
_শ্রীসরলা দেবী
আমার মনই আমার ধর্মশালা
_টমাস পেইন
সন্দেহপ্রবণ মন এক বৃহৎ বোঝাস্বরুপ
_ ফ্রান্সিস ফুয়ারেলস
দুনিয়াতে মানুষের চেয়ে বড় আর কিছু নেই আর মানুষের মাঝে মনের চেয়ে বড় নেই।
_ স্যার উইলিয়াম হ্যামিলন
সমুদ্রের জীবনে যেমন জোয়ার-ভাটা আছে, মানুষের জীবনেও আছে। মানুষের সঙ্গে এই জায়গাতেই সমুদ্রের মিল।
_ হুমায়ূন আহমেদ
জন্মদিনের উৎসব করাটা বোকামি। জীবন থেকে একটা বছর ঝরে গেল, সে জন্যে অনুতাপ করাই উচিত।
_নরম্যান বি.হল
চিকিৎসকেরা যে ভুল করেন তা হল তারা মনের চিকিৎসা না করে শরীর সারাতে চান। যদিও মন আর শরীর অবিচ্ছেদ্য তাই আলাদা করে চিকিৎসা করা উচিত নয়।
_প্লেটো
যে মনের দিক থেকে বৃদ্ধ নয়, বার্ধক্য তার জীবনে আসে না।
_ফিলিপ ম্যাসিঞ্জার
সংসারে কারো ওপর ভরসা করো না, নিজের হাত এবং পায়ের ওপর ভরসা করতে শেখো।
_উইলিয়াম শেক্সপিয়র
ছোট ছোট মুখ জানে না ধরার দুখ, হেসে আসে তোমাদের দ্বারে। নবীণ নয়ন তুলি কৌতুকেতে দুলি দুলি চেয়ে চেয়ে দেখে চারিধারে।
_রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
মনের অনেক দরজা আছে, সেখান দিয়ে অসংখ্যজন প্রবেশ করে এবং বের হয়ে যায় তাই সবাইকে মনে রাখা সম্ভব হয় না।
_টমাস কেস্পিস।
আত্না কলুষিত হতে শুরু করলেই মন আকারে সুরু হতে থাকে
_রুশো।
একটা মন আর একটা মনকে খুজিতেছে নিজের ভাবনার ভার নামাইয়া দিবার জন্য, নিজের মনের ভাবকে অণ্যের মনে ভাবিত করিবার জন্য।
_রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
খাও পান করো আর ভালবাসো। কারণ জীবন ক্ষণস্থায়ী।
_বায়রন।
জীবনের নিগূঢ় সত্যটি হচেছ, কখনো এমন কোনো আবেগকে প্রশ্রয় না দেওয়া যা অশোভন।
_অস্কার ওয়াইল্ড।
শান্ত এবং পরিচ্ছন্ন জীবন স্বাস্থ্যরক্ষার উৎকৃষ্ট খাদ্যের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে।
_উইলিয়াম ল্যাং ল্যান্ড।
জীবন মানেই সাফল্য এবং সাফল্য মানেই দু্র্ভোগ।
_ভ্যানলুন।
জীবন ছোট বলেই মহান
_ডিজরেইলি।
একটি মহৎঅন্তর, পৃতিবীর সমস্ত মাথার চেয়ে ভালো।
_ বুলার লিটন
দুর্বল দেহ মনকে দুর্বল করে দেয়
_রুশো।
সুন্দর থাকা একটি সুন্দর রাজ্যে বসবাস করার আনন্দের মতো।
_ জন ওয়েসলে।
হোটেলের সেরা ব্যাপার হলো এটি নিজের ঘর নয়।
_জর্জ বার্নার্ড শ
সম্ভবই পলিমাটির দেশ বলিয়াই আমাদের জীবনের কোন ভাগে কোন বুনিয়াদ পাকা হইতে পারে না। মাটির উপরেও যেমন কোন চিহ্ন থাকে না, মনের ভিতরে তেমন স্মৃতি পুষিয়া রাখি না।
_মোহিতলাল মজুমদার
সকল সাধুই মজজা দেখতে পারেন, কিন্তু খুব কম সাধুই আছেন যারা চালাতে সক্ষম।
_মার্ক টোয়েইন
জীবন তৃপ্তি দেয় যতটুকু, অতৃপ্তি দেয় তার চেয়ে বেশি।
_ ক্রিস্টিনা রসের্ট
মন হল সবচাইতে বড় তর্কশাস্ত্রবিদ
_ ফিলিপস।
কল্পনাশক্তিই হল আত্নার দৃস্টিশক্তি
_সৈয়দ ইসমাইল হোসেন সিরাজী।
আমি তোমার চোখ দারা দেখি কিন্তু বুঝি মন দ্বারা
_ জন স্টিল
ধর্মগ্রন্থে মন ,অন্তর, আত্মা প্রভৃতি সম্পর্কিত বিভিন্ন উক্তি সমূহ :
“তারা আপনাকে রূহ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে। বলে দিনঃ রূহ আমার পালনকর্তার আদেশ ঘটিত। এ বিষয়ে তোমাদেরকে সামান্য জ্ঞানই দান করা হয়েছে।”
“And they ask you (O Muhammad SAW) concerning the Rûh (the Spirit); Say: ”The Rûh (the Spirit): it is one of the things, the knowledge of which is only with my Lord. And of knowledge, you (mankind) have been given only a little.”
— (সুরা বনী ইসরাঈল, ৮৫)
আল্লাহ্ এবং শেষ বিচারের দিনে যারা বিশ্বাস করে, এমন কোন লোককে তুমি দেখবে না, তাদেরকে ভালোবাসতে, যারা আল্লাহ্ এবং তাঁর রসুলের বিরুদ্ধাচারণ করে; যদিও তারা তাদের পিতা, কিংবা পুত্র, কিংবা আত্মীয় স্বজন হয় (১)। এদের হৃদয়ে আল্লাহ্ ঈমানকে সুদৃঢ় করেছেন (২), এবং তাঁর পক্ষ থেকে রূহু দ্বারা তাদেরকে শক্তিশালী করেছেন (৩)। এবং তিনি তাদেরকে বেহেশতে প্রবেশ করাবেন, পাদদেশে যার নদী প্রবাহিত, সেখানে তারা [ চিরদিন ] থাকবে। আল্লাহ্ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট হবেন এবং তারাও আল্লাহ্র প্রতি সন্তুষ্ট হবে (৪)। এরা হলো আল্লাহ্র দল (৫)। সত্যই, এরাই আল্লাহ্র সেই দল যারা প্রশান্তি লাভ করবেন। “
“You (O Muhammad SAW) will not find any people who believe in Allâh and the Last Day, making friendship with those who oppose Allâh and His Messenger (Muhammad SAW ), even though they were their fathers, or their sons, or their brothers, or their kindred (people). For such He has written Faith in their hearts, and strengthened them with Rûh (proofs, light and true guidance) from Himself. And We will admit them to Gardens (Paradise) under which rivers flow, to dwell therein (forever). Allâh is pleased with them, and they with Him. They are the Party of Allâh. Verily, it is the Party of Allâh that will be the successful.”
—(সূরা মুজাদালা, ২২)
“তিনিই সৃষ্টি করেছেন মরণ এবং জীবন (১), যেনো তিনি পরীক্ষা করতে পারেন তোমাদের মধ্যে কর্মে কে উত্তম (২)। এবং তিনি ক্ষমতায় পরাক্রমাশালী। বারে বারে ক্ষমাশীল (৩)।”
“Who has created death and life, that He may test you which of you is best in deed. And He is the All-Mighty, the Oft-Forgiving;”
— (সূরা মুলক, ০২)
“হে প্রশান্ত আত্মা! চলো তোমার রবের দিকে,এমন অবস্থায় যে তুমি (নিজের শুভ পরিণতিতে) সন্তুষ্ট (এবং তোমরা রবের) প্রিয়পাত্র। শামিল হয়ে যাও আমার (নেক) বান্দাদের মধ্যে এবং প্রবেশ করো আমার জান্নাতে।”
— [সূরা আল ফাজর : ২৭-৩০]
কোরানে অন্তর সম্বন্ধে যা বলা হয়েছে :-
إِنَّ فِي ذَٰلِكَ لَذِكْرَىٰ لِمَن كَانَ لَهُ قَلْبٌ أَوْ أَلْقَى السَّمْعَ وَهُوَ شَهِيدٌ ﴿ق: ٣٧﴾
এতে উপদেশ রয়েছে তার জন্যে, যার অনুধাবন করার মত অন্তর রয়েছে। অথবা সে নিবিষ্ট মনে শ্রবণ করে। (৫০: ৩৭) الَّذِينَ يُجَادِلُونَ فِي آيَاتِ اللَّهِ بِغَيْرِ سُلْطَانٍ أَتَاهُمْ كَبُرَ مَقْتًا عِندَ اللَّهِ وَعِندَ الَّذِينَ آمَنُوا كَذَٰلِكَ يَطْبَعُ اللَّهُ عَلَىٰ كُلِّ قَلْبِ مُتَكَبِّرٍ جَبَّارٍ ﴿غافر: ٣٥﴾
যারা নিজেদের কাছে আগত কোন দলীল ছাড়াই আল্লাহর আয়াত সম্পর্কে বিতর্ক করে, তাদের একজন আল্লাহ ও মুমিনদের কাছে খুবই অসন্তোষজনক। এমনিভাবে আল্লাহ প্রত্যেক অহংকারী-স্বৈরাচারী ব্যক্তির অন্তরে মোহর এঁটে দেন। (৪০: ৩৫)
وَلَقَدْ ذَرَأْنَا لِجَهَنَّمَ كَثِيرًا مِّنَ الْجِنِّ وَالْإِنسِ لَهُمْ قُلُوبٌ لَّا يَفْقَهُونَ بِهَا وَلَهُمْ أَعْيُنٌ لَّا يُبْصِرُونَ بِهَا وَلَهُمْ آذَانٌ لَّا يَسْمَعُونَ بِهَا أُولَٰئِكَ كَالْأَنْعَامِ بَلْ هُمْ أَضَلُّ أُولَٰئِكَ هُمُ الْغَافِلُونَ ﴿الأعراف: ١٧٩﴾
আর আমি সৃষ্টি করেছি দোযখের জন্য বহু জ্বিন ও মানুষ। তাদের অন্তর রয়েছে, তার দ্বারা বিবেচনা করে না, তাদের চোখ রয়েছে, তার দ্বারা দেখে না, আর তাদের কান রয়েছে, তার দ্বারা শোনে না। তারা চতুষ্পদ জন্তুর মত; বরং তাদের চেয়েও নিকৃষ্টতর। তারাই হল গাফেল, শৈথিল্যপরায়ণ। (৭: ১৭৯)
বাইবেলে উল্লেখ রয়েছে ‘আর তিনি তোমাদের কাছে চিরকাল থাকবার জন্য আরো একজন সাহায্যকারী পাঠিয়ে দেবেন। আর সে সাহায্যকারীই সত্যের রুহ’’ [যোহন-১৪ : ১৬, ১৭]
বাইবেল বলে, “যখন প্রাণিক দেহ আছে, তখন আত্মিক দেহও আছে।” (১ করিন্থীয় ১৫:৪৪) ঈশ্বরের বৈশিষ্ট্য সম্বন্ধে ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বাইবেল স্পষ্টভাবে জানায়: “ঈশ্বর আত্মা।” (যোহন ৪:২৪) আত্মার এক ধরনের জীবন রয়েছে, যা আমাদের থেকে অনেক আলাদা আর মানুষ তার চোখ দিয়ে তা দেখতে পায় না। (যোহন ১:১৮) এ ছাড়া, অদৃশ্য আত্মিক প্রাণীরাও রয়েছে। তারা হলেন দূত অর্থাৎ “ঈশ্বরের পুত্ত্রেরা।”—ইয়োব ১:৬; ২:১.
“তুমি নিজ আত্মা পাঠাইলে তাহাদের সৃষ্টি হয়।” (গীতসংহিতা ১০৪:৩০) এই আত্মা স্বয়ং ঈশ্বর নন কিন্তু এক শক্তি যেটাকে ঈশ্বর তাঁর ইচ্ছা সম্পাদন করতে পাঠান অথবা ব্যবহার করেন। এর দ্বারা, ঈশ্বর পার্থিব আকাশমণ্ডল, পৃথিবী এবং জীবিত সমস্ত বস্তু সৃষ্টি করেছিলেন। (আদিপুস্তক ১:২; গীতসংহিতা ৩৩:৬) তাঁর আত্মাকে বলা হয় পবিত্র আত্মা। যারা বাইবেল লিখেছিলেন সেই মানুষদের অনুপ্রাণিত করতে ঈশ্বর তাঁর পবিত্র আত্মা ব্যবহার করেছিলেন। (২ পিতর ১:২০, ২১)
ভগবদগীতায় বলা হয়েছেঃ
অবিনাশী তু তদ্বিদ্ধি যেন সর্বং ইদং ততম্।
বিনাশং অবিনাশ্যস্য ন কিঞ্চিৎ কর্তুমর্হসি।।
“সমগ্র শরীরে পরিব্যাপ্ত রয়েছে যে অক্ষয় আত্মা, জেনে রেখো তাকে কেউ বিনাশ করতে সক্ষম নয়।” (ভ.গী.– ২/১৭)
“ভূমিরাপোহনলো বায়ুঃ খং মনো বুদ্ধিরেব চ।
অহঙ্কারং ইতীয়ং মে ভিন্না প্রকৃতিরষ্টধা।।”
“ভূমি, জল, বায়ু, আকাশ, মন, বুদ্ধি এবং অহঙ্কার- এই অষ্ট প্রকারে আমার ভিন্না জড়া প্রকৃতি বিভক্ত।” (ভ.গী. ৭/৪)
ন জায়তে ম্রিয়তে বা কদাচিন্ নায়ং ভূত্বা ভবিতা বা ন ভূয়ঃ । অজো নিত্যঃ শাশ্বতোহয়ং পুরাণো ন হন্যতে হন্যমানে শরীরে ॥২০॥
“আত্মার কখনও জন্ম হয় না বা মৃত্যু হয় না, অথবা পুনঃ পুনঃ তাঁর উৎপত্তি বা বৃদ্ধি হয় না৷ তিনি জন্মরহিত শাশ্বত, নিত্য এবং পুরাতন হলেও চিরনবীন। শরীর নষ্ট হলেও আত্মা কখনও বিনষ্ট হয় না।” (ভ. গী. ২/২০)।
অপরেয়মিতস্ত্বন্যাং প্রকৃতিং বিদ্ধি মে পরাম্।
জীবভূতং মহাবাহো যয়েদং ধার্যতে জগৎ।।
“হে মহাবাহো ! এই নিকৃষ্টা প্রকৃতি ব্যতীত আমার আর একটি উৎকৃষ্টা প্রকৃতি রয়েছে। সেই প্রকৃতি চৈতন্য-স্বরূপা ও জীবভূতা; সেই শক্তি থেকে সমস্ত জীব নিঃসৃত হয়ে এই জড় জগৎকে ধারণ করে আছে।” (ভ.গী. ৭/৫)
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে মার্চ, ২০১৭ বিকাল ৩:০০