পুঁজিবাদের শত্রু চার জন : মাওবাদী-বামপন্থী (এখানে বামু), ইসলামী সন্ত্রাসবাদ, কাজে ফাঁকি দেয়া শ্রমিক আর সরকার নিজে | আমি বিস্তারিত ভাবে একে একে এদের সম্বন্ধে বলছি |
মাওবাদী-বামপন্থী
বামুরা পুঁজিবাদের আদর্শগতভাবে শত্রু | এরা সব সময়ই সাম্যের সমাজের স্বপ্ন দেখে আর দেখায় | কিন্তু ওই সাম্যের সমাজ পৃথিবীতে নাতো কোনদিন ছিল , না কোনদিনও হবে | রাশিয়াতে আর চীনে পুঁজিবাদ জয়লাভ করেছে | বাম বিশ্বের বেশিরভাগ দুনিয়াতেই পুঁজিবাদ ঢুকেছে | কিউবা আর ভিয়েতনামেও ঢুকেছে | এথেকেই বুঝা যায় যে সাম্যের সমাজ কতটা অলিক কল্পনা | বামুরা এই কল্পনার ফেরিওয়ালা | এরা বিশ্বের সর্বত্র পরাজিত হয়ে এখন বাংলায় ঘাঁটি গেড়েছিল | সেই ঘাঁটিও ভেঙ্গে গেল | মানুষকে ঠকিয়ে বেশিদিন চলা যায় না | আজও বামুরা বিশ্বাস করে যে সাম্যের সমাজ সম্ভব | এর জন্য এরা হিংসাত্মক কাজ আগেও করেছে, এখনো করছে | মাওবাদীরা হলো হিংসাত্মক বামু |
ইসলামী সন্ত্রাসবাদ
এইটা আরো ভয়ঙ্কর | গত ১৪ ১৫ বছরে সারা বিশ্বে এই মুসলিম সন্ত্রাসবাদ বহু ব্যবসার কোটি কোটি টাকা ক্ষতি করেছে | টুইন টাওয়ার ধ্বংস গোটা বিশ্বের বানিজ্যিক ভিতকে কাঁপিয়ে দিয়েছিল | তারপরে ইরাক আর আফগানিস্তান যুদ্ধ, লিবিয়ার যুদ্ধ, সিরিয়ার ক্রমাগত চলতে থাকা যুদ্ধ এতে মধ্যপ্রাচ্যের দেশীয় ব্যবসা আর বিদেশী বিনিয়োগ উভয়েই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে | ভারতে মুম্বাই হামলা পর্যটন ব্যবসায় জোরদার আঘাত হেনেছে | বিদেশের মাটিতে যতগুলো হামলা হয়েছে এতেও সেদেশের ব্যবসার ক্ষতি হয়েছে | ভারতে বিভিন্ন ধর্মস্থানগুলোতে হামলা এবং কাশ্মিরে চলতে থাকা হামলা পর্যটন ব্যবসার বিরাট ক্ষতি দেকে এনেছে আর পর্যটন ব্যবসার সাথে যুক্ত অনুসারী ব্যবসারও ভালোরকম ক্ষতি হয়েছে | এদের পুঁজিবাদ বিরোধিতার কারণ হলো ধর্মীয় | এরা মনে করে দুনিয়াবী কোনো কিছুরই দরকার নেই | তাই পুঁজিবাদ খুবই খারাপ জিনিস কারণ পুঁজিবাদ দুনিয়াবী | অতএব পুঁজিকে গুলি মার আর বেহেস্তে যাবার জন্য জিহাদ কর : এই হলো ছাগুদের মন্ত্র | কাফেররা চুলোয় যাক |
কাজে ফাঁকি দেয়া শ্রমিক
এরা হলো গরিব মানুষ | এদের গপ্প হলো যে এদেরও জীবন আছে অতএব এদের সবেতন ছুটি দিতে হবে | সবেতন ছুটি একটি অন্যায় কথা কারণ এখানে মালিক টাকা দিচ্ছে অথচ শ্রম পাচ্ছে না | এটা মালিক শোষণ | দ্বিতীয়ত এরা কাজে এসে কাজ করে না , ঘন্টার পর ঘন্টা ফোনে সুখ দুঃখের গল্প করে | কাজ করলেই ওভার টাইম চায় |তৃতীয়ত পুজোর সময় একমাসের মাইনে বোনাস দিতে হবে | কিন্তু কেন ? একমাসের কেন ? ১৫ দিনের কেন নয় ? সেটা বিচার্য নয় | এরা তো কেউ জেনুইন শ্রম দিচ্ছে না , ফাঁকি দিচ্ছে , তাহলে ? উত্তর নেই | চতুর্থত এইসব গরিব মানুষেরা এক একটি পাকা চোর | কারখানার জিনিসপত্র চুরি করে বেছে টু পাইস কমাবার ধান্দা সর্বদা আছে | এতে মালিকের দারুন লস হয় | এরা পুঁজিবাদের আরেক শত্রু |
সরকার
ইনি পুঁজিবাদের সবচেয়ে বড় শত্রু | ইনি এনার লাল ফিতের ফাঁসে সমস্ত প্রজেক্ট আটকে রেখে দেন | ঘুষ না খেলে এনাদের রাতের ভাত হজম হয় না | একবার তো টাটা বলেই ফেলেছিলেন যে টেলিকমের লাইসেন্স পেতে তাকে অনেক টাকা ঘুষ দিতে হয়ে ছিল | এছাড়া আছে টেন্ডার নিয়ে খামখেয়ালী | যদি ভালো ঘুষ দিতে পার , টেন্ডার তোমার | ব্যবসার পরিকাঠামো ইনি ভুলেও উন্নত করবেন না বা পুরো তৈরী করবেন না | ফলে ব্যবসায়ীদের বড়ই অসুবিধা | আর এনাদের ট্রেড ইউনিয়ন আছে ছোট ছোট ইসুতে কারখানা অচল করে দিতে এক্সপার্ট | নানারকম আইনের ফাঁসে জনগনের স্বার্থরক্ষার নামে মালিকদের শোষণ চলে | কখনই কন্ট্রোল মালিকদের হাতে যাবে না | এনাদের মহিমা অপার |
উপরোক্ত চারটি শত্রুর কারণে কখনই পুঁজিবাদের যথাযথ বিকাশ সম্ভব হয় নি | প্রকৃত পুঁজিবাদীদের এই শত্রুগুলোকে আগে নিকেশ করতে হবে | তবেই পুঁজিবাদের প্রকৃত বিকাশ সম্ভব হবে |
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৯:৪৬