নেপচুন হতে ফেরার পর থেকেই বুবু আমার কেমন যেন উদাস হয়ে গেছেন। সেখানকার রাজদরবারের মতো করে একটি কসমিক রশ্মির তৈরি সেতুর প্রতি অপূর্ণতা তাকে ভাল মতোই পেয়ে বসেছে। ইদানীং আবার বাম চোখেও কম দেখছেন। বুবুকে নিষেধ করেছিলাম আতশবাজির সামনে যেতে। কিন্তু তিনি কিছুতেই নিজেকে সংবরণ করতে পারলেন না। ইয়াংশু রাজার মহলের বাইরে কিছু এলিয়েন তারাবাতির মতো কি সব নিয়ে যেন খেলছিলো। সেখান থেকে স্ফুলিঙ্গ এসে পড়ল বুবুর বাম চোখে। সেখান থেকেই চোখের সমস্যার সূত্রপাত। প্লুটো গ্রহে বুবুর ছেলে নামকরা হাসপাতালে চাকরী করে। শুনেছি সে ওখানকার বড় প্যাথোলোজিস্ট। সেই বুবুকে নিয়ে গিয়ে চোখের চিকিৎসা করিয়ে আনলো। তারপরেও কোন উন্নতি নেই। ডাক্তাররা বলে দিয়েছেন সময় গেলেই সব ঠিক হয়ে যাবে।
দেশে বুবুর ভক্তকুলের অভাব নেই। সকলেই তার অন্ধভক্ত। বুবু যদি কখনও ঘোষণা করেন যে, সূর্য বলে কিছু নেই সব ক্ষমতা চাঁদের। তাহলে তার ভক্তকুল সেটা প্রমান করার জন্যই গবেষণা শুরু করে দিবে। মোন্ডল বাবুও তার তেমনই একজন অন্ধভক্ত। সে এসেছে বুবুর নেপচুন হতে প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে একটা সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজনের নিমন্ত্রণ নিয়ে। নেপচুন হতে ফেরার পর থেকেই লক্ষ্য করছি বুবু আমাকে বেশ ভরসা করা শুরু করে দিয়েছেন। সব কাজেই তিনি আমার পরামর্শ নিচ্ছেন।
-অপু তুই কি বলিস ? মোন্ডলের অনুষ্ঠানে আমার অংশ গ্রহন করা কি ঠিক হবে?
-বুবু আমি বলি কি; তারচেয়ে বরং, আপনি যে নেপচুন রাজার কাছ থেকে নূড়ি পাথরের মুকুটটা উপহার হিসেবে পেয়েছেন, সেটা নিয়ে একটা সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে বলে দেন মন্ডোলকে।
আমার প্রস্তাবে বুবুর মুখে খুশির ঝিলিক দেখতে পেলাম। যেন তিনি এমন কিছুর জন্যই অপেক্ষা করছিলেন। নিজ থেকে বলতে লজ্জা পাচ্ছিলেন। তিনি আসলে মনে মনে চাচ্ছিলেন যেন তার হয়ে কেউ প্রস্তাবটা উত্থাপন করুক। আর বুবুর সাথে থাকতে থাকতে আমিও বুবুর প্রতিটা নিঃশ্বাসের সাথে পরিচিত হয়ে গেছি। বুবুর মনের কথা আমার চেয়ে ভাল আর কে বুঝবে ? আমি মন্ডোলকে সব কিছু বুঝিয়ে দিলাম।
মন্ডোলদের ওখানে নতুন একটি মন্দির করা হয়েছে। সংবর্ধনার পাশাপাশি বুবুকে দিয়ে মন্দিরের উদ্ভধোন করানোর উদ্দেশ্যে মন্দিরের সামনেই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হলো। যথাসময় আমরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে গেলাম। বুবু পুরো অনুষ্ঠানে মাথায় ইয়াংশু রাজার দেয়া নূড়ি পাথরের মুকুটটা পরে রইলেন। সবার আগে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে ভাষণ দিলেন মন্ডোল বাবু। তিনি তার ভাষণের পুরোটা জুড়েই বুবুর মুকুট সম্পর্কে নানান দিক তুলে ধরলেন। এমন মুকুট পাওয়ার সৌভাগ্য কেবল মাত্র আমাদের বুবুরই হয়েছে। এটা আমাদের দেশের জন্য গৌরবময় এক অধ্যায়ের সূচনা করেছে। তারপর ভাষণ দিলেন আমার বুবু। তিনি তার দীর্ঘ ভাষণের শেষে এক পর্যায় এলাকার উন্নয়নের জন্য জুপিটার গ্রহ থেকে কিছু এলিয়েন আনিয়ে দেবেন বলেও সকলকে আসস্ত করলেন। তারপর ফিতা কেটে মন্দিরের উদ্ভধোন করলেন। মন্ডোল বাবু ভীষণ রসিক প্রকৃতির। আমাদের জন্য জলসার আয়োজন করে রেখেছেন। বুবু অবশ্য তাতে আপত্তি করলেন না। জলসায় পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে প্রখ্যাত নৃত্য শিল্পী কুহেলিকাকে নিমন্ত্রণ করা হয়েছে। সেই সাথে আমাদের দেশের প্রখ্যাত কণ্ঠ শিল্পী মিনা খাতুনকেও আনা হয়েছে। জলসা শুরু হলো মিনা খাতুনের গান দিয়ে। আমি বুবুর পাশেই বসেছি। প্রথমটায় বসতে না চাইলেও বুবুর নির্দেশে পরে পাশেই বসতে হলো। মিনা খাতুন তার সুরেলা কণ্ঠে গান গাইছে।
আকাশ সুন্দর, বাতাস সুন্দর,
তার চেয়ে বেশি সুন্দর; আমার এই এলোকেশ,
এসো প্রিয়া, কাছে এসো, আপন করে নাও আমাকে,
রয়ে যাক দুজনাতে ভালোবাসার রেশ...
গানের সুরে আত্মহারা হয়ে আমার বুবু হাত তালি দিচ্ছেন আর বলছেন আহা ! বেশ !! বেশ !!! বেশ !!!!
তারপরেই শুরু হলো কুহেলিকার নাচের পর্ব। নাচ দেখে মনে হলো যেন পেখম তুলে কোন ময়ূর নাচছে। আমার খর বুকে নুপুরের ঝংকার এসে বার বার আঘাত করতে লাগলো। কিন্তু আমার এই ব্যাকুলতা বুবুর চোখকে এড়াতে পারলো না। বুবু মন্ডোলকে ডেকে কি যেন ইশারা করলেন। বুবুর ইশারায় মন্ডোলকে মাথা নাড়াতে দেখে বুঝে গেলাম; আমার ব্যাকুলতা নিরসনে, উষ্ণতার মায়াডোরে শীতের কুহেলিকার ব্যবস্থা করা হবে। আমি বুবুর দিকে তাকিয়ে কৃতজ্ঞতার হাসি হাসলাম। বুবু আমাকে জলসায় বসিয়ে রেখে কাজের অযুহাত দেখিয়ে চলে গেলেন।
জলসা শেষ হতে হতে অনেক রাত হয়ে গেল। মন্দিরের পেছনেই মন্ডোল বাবুর গেস্ট হাউস। সেখানেই কুহেলিকার জন্য থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আমাকে কুহেলিকার ঘর দেখিয়ে দিয়ে মন্ডোল চলে গেল। আমার মস্তিষ্কে যেন নুপুরের ঝংকার প্রতিধ্বনিত হয়েই চলেছে। আয়নার সামনে বসে কুহেলিকা তার চুলের বেণী ছাড়াচ্ছে। দরজায় দাড়িয়ে হালকা করে কাশি দিতেই মিষ্টি হেসে আমার দিকে ফিরে বলল, এসো।
-কেমন দেখলে আমার নাচ?
-ভাল লেগেছে।
-শুধুই ভাল লেগেছে?
-না খুব ভাল লেগেছে।
-আর কিছুই ভাল লাগেনি?
কথাটা বলেই মিষ্টি করে একটু হাসলো কুহেলিকা। সেই হাসিতে যেন হাজারটা শেল এসে বিঁধলো আমার বুকের ভেতরে।
-তোমাকে দেখে মনে হচ্ছে বেশ লজ্জা পাচ্ছ ? কি আর একবার নাচবো নাকি? এখনতো কেউ নেই। শুধু তুমি দেখবে। মনের তৃষ্ণা মিটিয়ে উপভোগ করবে এই কুহেলিকার নাচ !
আমি নির্বাক হয়ে দাড়িয়ে আছি। শুধু অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রয়েছি ওর মায়াবী চোখের দিকে। টেবিলের উপরে রাখা মদের বোতল থেকে অল্প কিছু মদ ঢেলে আমার দিকে গ্লাস এগিয়ে দিলো। তারপর আমার মুখের কাছে ওর মুখ রেখে, আমার চোখে চোখ রেখে ফিসফিসিয়ে বলল, “নাচবো?” সঙ্গে সঙ্গে যেন আমার বুকের ভেতরে বিদ্যুৎ খেলে গেল।
আমি ওর হাত ধরে বললাম, “আমি তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছি কুহেলিকা”
জানিনা আমার কথাটা শোনার পর ওর ভেতর কি প্রতিক্রিয়া হলো। শুধু হাত ছেড়ে দিয়ে বলল, “চলে যাও প্লীজ! কুহেলিকাকে ভালোবাসতে নেই। আমার জন্মই হয়েছে বিন্দু বিন্দু জল হয়ে ঝরে পরার জন্য”
-আমার খরতায় নাহয় তুমি বিন্দু বিন্দু জল হয়েই ঝরলে ? কি ঝরবেনা ?
শুধু একটু দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে, কোন জবাব না দিয়ে কুহেলিকা জানালার কাছে গিয়ে দাঁড়ালো। আনমনে অন্ধকার আকাশের দিকে তাকিয়ে রইল। কুহেলিকা কাঁদছে। চোখের এই অশ্রু ধারায় বাঁধা দেয়ার কোন সাধ্য আমার নেই। তাই ওকে ওর মতো করে একাকী কাঁদতে দিয়ে আমি চলে এলাম।
ভোর বেলা বাড়ি ফিরে দেখি বুবু ঘরের ভেতর পায়চারী করছেন। চোখে মুখে বিষণ্ণতা। সারা রাত ঘুমাননি বোঝা যাচ্ছে। আমাকে দেখেই ক্রোধে ফেটে পরলেন।
-অপু মঙ্গল গ্রহের সেনা সদর থেকে ই-মেইল এসেছে তুই আমাকে জানাস নি কেন?
আমি চুপ করে রইলাম। সাধারনত বুবু যখন রাগ করেন তখন কোন কথা বলিনা। রাগের মাঝে কথা বললেই বুবুর রাগ আরও কয়েকগুন বেড়ে যায়। তখন তার আর হিতাহিত জ্ঞান থাকেনা। মুখ দিয়ে বাজে বাজে কথা বলা শুরু করে দেন। এটা অবশ্য বুবুর দোষ না। মাঝে মাঝে উচ্চবাচ্য না করলে ভয় থাকেনা। আর ভয় পাওয়ানোটা বেশ জরুরী। নাহলে ঠিক মতো আধিপত্য বজায় রাখা যায় না। তবে আমার সাথে কখনও বুবু উচ্চবাচ্য করেন না। বুবুও জানেন যে, তিনি যখন বকা ঝকা শুরু করেন তখন আমি কোন কথা বলিনা।
-কি হলো জানাস নি কেন? তুই কি জানিস এটা কত গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়? যাই হোক এখন কি করবো তাই বল? একদম চুপ করে থাকবি না। নাকি সব কথা এক রাতেই ঐ নর্তকীর সাথেই বলে এসেছিস?
-বুবু সারা রাত ঘুমাইনি। ভীষণ ঘুম পাচ্ছে। তাছাড়া এখন মাথাটাও কাজ করছেনা। ঘুমালে হয়ত ঠাণ্ডা মাথায় বিষয়টা নিয়ে ভেবে একটা সিদ্ধান্ত নেয়া যাবে।
-অপদার্থ একটা কোথা থেকে যে আমার ঘাড়ে এসে জুটলো! যা ঘুমাতে যা। ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে স্বপ্নে ঐ নর্তকীর নাচ দেখ। যা করার আমাকেই করতে হবে।
বুবুকে ঘুমের কথা বলে ঘরে এসে ল্যাপটপটা অন করলাম। মঙ্গলের সেনা সদরে ই-মেইল করে দিলাম। ই-মেইলের ভাষ্য অনেকটা এই রকম;
ধন্যবাদ আপনাদের, বিষয়টা সম্পর্কে আমাদের অবগত করার জন্য। যত শীঘ্রই সম্ভব কিছু এলিয়েন ফোরস পাঠান। প্ল্যানেট এক্স থেকে আগত যে নয়জন এলিয়েনের কথা বলেছেন, আশা করবো খুব শীঘ্রই ওদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা আপনারা নেবেন। আমাদের দেশের পক্ষে এই নয়জন এলিয়েনের সাথে মোকাবেলা করা সম্ভব হবে না।
ই-মেইলটা পাঠিয়েই একটা ঘুম দিলাম। কিন্তু কিছুতেই ঘুম আসছেনা। ঘুমাতে গেলেই কুহেলিকাকে ভেবে ভীষণ ভাবে অস্থির হয়ে পড়ছি। সেও নিশ্চয় এখন আমাকে ভেবে উদাস দৃষ্টিতে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে। ভাবতে ভাবতে কখন যে ঘুমিয়ে গেছি টের পাইনি। বুবুর হাক ডাকে ঘুম ভেঙে গেল। ঘুম থেকে উঠে দেখি প্রায় সন্ধ্যা হয়ে গেছে।
-অপু শীঘ্রই আয়। টিভিতে দেখ খবরে কি দেখাচ্ছে?
বুবুর চোখে মুখে খুশির ঝিলিক লক্ষ্য করলাম।
-আমি ঘুম ঘুম চোখে টিভির পর্দায় তাকালাম।
নদীতে প্ল্যানেট এক্স থেকে আগত নয়জন এলিয়েনের মৃত দেহ পাওয়া গেছে। কিন্তু হত্যাকারীদের শনাক্ত করা যায়নি। তবে সন্দেহ করা হচ্ছে যে, এই নয়জন এলিয়েনদের নিয়ে আসা হয়েছিল বিশেষ কোন ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে। যা নিয়ে তদন্ত করা হবে যে, কেন এই এলিয়েনরা এসেছিল; যদিও হত্যাকারী কে বা কারা ছিল এই নিয়ে রহস্যের ধুম্রজাল থেকেই গেল।
এদিকে বেশ কয়েকদিন যাবৎ বুবু তার উত্তর পাড়ার জমিটা নিয়ে বড়ই ঝামেলার মধ্যে আছেন। ওখানকার জমিদার শ্রাবণ চৌধুরীর মৃত্যুর পর তার স্ত্রী মিসেস নন্দিনী চৌধুরীর দাবি অনুযায়ী সেই জায়গার মালিক তারই হবার কথা। কিন্তু শ্রাবণ চৌধুরীর মৃত্যুর পর বুবু আদালতের শরণাপন্ন হন। সেখানে জমির দলিলপত্র দেখিয়ে প্রমান করেন যে ঐ জায়গা তার পৈত্রিক সম্পত্তি। এই জন্য অবশ্য তাকে কিছু টাকা পয়সা খরচ করতে হয়। বুবুর এই একটা জীবন দর্শন আমার খুব ভাল লাগে। জন্ম থেকে শুরু করে মৃত্যুর পর কাফনের কাপড়টা পর্যন্ত টাকা ছাড়া কেনা অসম্ভব। টাকার বিনিময়ে সব কিছুই সম্ভব। কিন্তু মিসেস নন্দিনী চৌধুরীও ছেড়ে দেবার পাত্রী নন। হাজার হোক তিনি একজন জমিদারের স্ত্রী। তিনিও তার দাবিতে অটল রইলেন। এই নিয়ে বেশ কিছুদিন যাবৎ তিনি বুবুর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চালিয়ে আসছেন। ষড়যন্ত্রের চূড়ান্ত প্রক্রিয়া হিসেবে তিনি তার বাহিনী নিয়ে বুবুর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে বসলেন। আর এই যুদ্ধের জয় নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সাহায্যের জন্য প্ল্যানেট এক্স গ্রহের উদ্দেশ্যে যাত্রা করলেন।
পরিস্থিতি মনে হচ্ছে অনুকূলের বাইরে চলে যাচ্ছে। কিছুতো একটা করতেই হয়। লাল টেলিফোনটা হাতে তুলে নিয়ে ১০১ নাম্বারে ডায়াল করলাম।
-ডেল্টা ফোরস? আমি অপু বলছি।
-স্যার !
-শ্রাবণ চৌধুরীর ছেলে কিশোরকে গ্রেফতার করো। একেবারে মেরে ফেলার কোন দরকার নেই। শুধু ডান পায়ের হাড়টা ভেঙে দাও। অনেক বাড় বেড়েছে ছেলেটার!
-স্যার ! আর কোন নির্দেশ ?
-আপাতত এতটুকুই। বাকিটা পরে জানাচ্ছি।
-স্যার ! আপনার জন্য একটা ম্যাসেজ এসেছে।
-কে পাঠিয়েছে ?
-স্যার ! সেন্ডারের নাম লেখা আছে কুহেলিকা।
-ম্যাসেজটা আমাকে এক্ষুনি ফরোয়ার্ড করো।
-স্যার !
ফোনের লাইনটা কেটে দিয়ে ল্যাপটপটা অন করলাম। কুহেলিকার ম্যাসেজ।
যদি কখনও বসন্ত আসে ভুলে কি যাবে তোমার কুহেলিকাকে?
ম্যাসেজটা পড়ে চোখের পানি ধরে রাখতে পারলাম না। আজ বৃষ্টি হলে খুব ভাল হতো। খুব চিৎকার করে কাঁদতে ইচ্ছে করছে।