somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সমাজ তুমি আপডেট হও

২৪ শে এপ্রিল, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আপনি স্বীকার করেন কিংবা না করেন ইতিহাস কিন্তু বলছে যে,মানুষ একসময় গুহাবাসী ছিল।বর্তমানে সমাজ ব্যবস্থার নাম করে যে নিয়ম কানুনগুলো আমরা পালন করি কিংবা পালন করতে বাধ্য হই সেই নিয়মের অস্থিত্ব আদিম সমাজে ছিল না। আদিম মানুষেরা চরম মাত্রায় স্বাধীন ছিল সমাজের নিয়ম পালন করার বাধ্যবাদকতা হতে,কারন সমাজ নামে কোন ব্যবস্থার জন্ম তখনও হয়নি। মানুষের স্বভাবজাত বৈশিষ্ট্য হচ্ছে তার অবৈধ ইচ্ছাগুলোকে কোন ভাবে যদি চরিতার্থ করা যায় তবে সেই চেষ্টায় সর্বদা লিপ্ত থাকা। তাই অতি মাত্রার স্বাধীনতাকে ভোগ করতে যেয়ে অন্যর অধিকার হরণ করার প্রশ্নটি যখন আসল তখন এই সমস্যার সমাধানকল্পে সমাজ নামক একটি সিস্টেমের ডেবলাপমেন্ট হতে থাকল ক্রমে ক্রমে। আমরা আমাদের স্বাধীনতাকে স্বেচ্ছায় বিসর্জন দিলাম নিজেদের তৈরী বেড়াজালে। সামাজীকরন প্রক্রিয়ায় আসলেই আমাদের স্বাধীনতার জায়গাটুকু খর্ব হয়েছে কি না সেটি একটি বিশাল প্রশ্ন। অনেকেই হয়ত প্রশ্ন তুলতে পারেন এই কথা বলে যে,সমাজের জন্ম হয়েছিল পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তিকে মজবুদ করার জন্য কিন্তু সমাজের মানুষেরা অসামাজিক কর্মকান্ডের মধ্যমে সমাজকে কলুষিত করলে এই জায়গায় সমাজের দুষ কোথায়? তবে আমাদের সমাজের কিছু নিয়ম-কানুন যদি পরস্পরের সাথে কন্ট্রাডিক্ট করে কিংবা আমাদেরকে পিছনের দিকে নিয়ে যায় তবে সেই সকল নিয়ম কানুনের দায়ভার সমাজকেই নিতে হবে।
মাঝে মাঝে সমাজের কিছু নিয়মকে বড়ই অদ্ভুদ বলে মনে হয়। যেমন প্রেম করা নিয়ে আমাদের সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গিকে যদি একটু বিশ্লেষণ করি তাহলে দেখতে পাই একদিকে প্রেম সংক্রান্ত বিষয়গুলিকে ট্যাবু করে রাখা হয়েছে অপরদিকে প্রেমকেও অঘোষিতভাবে নিষিদ্ধ করে রাখা হয়েছে। এখানে বলে রাখি প্রেম বলতে কিন্তু আমি শুধুমাত্র বিবাহ বহির্ভুত নর-নারির প্রেমকে বুজাচ্ছি এবং সমাজ বলতে শুধুমাত্র ভার্সিটির ক্যাম্পাসকে কিংবা শহরের পার্ককে বুজাচ্ছি না। প্রেমের বিষয় নিয়ে প্রকাশ্য আলাপ আলোচনা আমাদের সমাজে নেই। ফলে নিষিদ্ধের প্রতি অকর্ষনকে স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য হিসেবে প্রকাশ করতে যেয়ে প্রেমের পরিমানের দিকেও আমরা পিছিয়ে নেই। প্রেমের পরিমান বাড়লেও এর প্রতি সমাজের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন হয়েছে বলে মনে হয় না। তাই সমাজের উচিত প্রেমকে নিয়ে প্রকাশ্য আলাপ আলোচনার সুযোগ করে দেয়া যেন মানুষজন এর উপকারিতা ও অপকারিতাকে একি সময়ে দৃশপটে নিয়ে এসে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। আর যদি সমাজ এই বিষয়টি নিশ্চিত করতে না পারে তবে প্রেম নিয়ে তার দৃষ্টিভঙ্গিকে পরিবর্তন করা। এই পরিবর্তনটুকু প্রেমকে সমর্থন করতে পারার সক্ষমতার বিষয়ে হতে পারে অথবা উপযুক্ত ব্যাখা দাড় করানোর মাধ্যমে প্রেমকে আরো ট্যাবু করার বিষয়ে হতে পারে।
সমাজের দ্বিমুখী অবস্থানের আর একটি উজ্জ্বল ক্ষেত্র হচ্ছে বিয়ে সংক্রান্ত বিষয় এবং বিয়ের পরিবেশ তৈরীর সাথে প্রেমকে গুলিয়ে ফেলা। আমাদের সমাজে বিয়ে করতে হলে বয়সের একটি বাঁধা আছে সেই বাঁধা কতটুকু যুক্তিযুক্ত সেই প্রশ্নে না গিয়ে যদি বিয়ের ব্যাপারটাকে আরো একটু গভীরভাবে দেখি তাহলে দেখব বয়সের পাশাপাশি সমাজে ইশটাবলিশ হও্য়া, উপার্জনের জায়গায় ভাল্লুকের মত পকেটের অধিকারী না হলে পরে সমা্জ সেই বিয়েকে সু-দৃষ্টি দিয়ে দেখবে না এবং ওই বিয়ের ব্যাপারে সমাজের মনোভাবেরও পরিবর্তন হবে না। প্রাপ্ত বয়সে বিয়ের বিষয়ে সমাজ যদি কোন ধরনের নিশ্চয়তা দিতে না পারে তবে ঐ সময়ে প্রেমের ব্যাপারে সমাজ কেন নাক গলাবে। প্রকৃতির নিয়মকে অস্বীকার করে প্রেম করাকে একদিকে সমাজ নিন্দনীয় হিসেবে দেখছে অপরদিকে বিয়ের ব্যাপারে স্থায়ী সমাধান দিতে পারছে না। ব্যাক্তি পর্যায়ে সমস্যা থাকলে সেটা ভিন্ন কথা তবে আমাদের সমাজের পুরো সিস্টেমেই এই ধরনের দ্বিমুখী অবস্থান তৈরী করে দেয়া আছে। আমরা সেই অলিখিত নিয়মকে না পারছি ভাঙ্গতে না পারছি মটকাতে। অতছ সমাজের নিয়ম কানুন মানুষেরাই তৈরী করেছিল নিজেদের সুবিধার কথা চিন্তা করে। আর এখন আমরা সুবিধা আর অসুবিধার মধ্যে আটকা পড়ে আছি নিজেদের তৈরি নিয়মকে মানতে যেয়ে। সমাজ বোদ্ধারা কবে বুজবেন একি সাথে দুইটি বিষয় প্যারালালি চলতে পারে না। হয়ত সমাজ বিয়ের ক্ষেত্রে তার অবস্থানের পরিবর্তন আনুক নয়ত প্রেমকে সীমাবদ্ধতার ক্ষেত্র হতে বের করে নিয়ে আসুক। পৃথিবী ছুটে চলছে পরিবর্তনের সাথে তাল মিলিয়ে আর আমরা আমাদের সমাজকে নিয়ে পড়ে আছি চার দেয়ালের কুয়ার মধ্যে। তাই বলে আমি বলছি না যে আমাদেরকে নিজেদের সত্তা বিসর্জন দিয়ে পশ্চিমের নকল করতে হবে। আমরা না হয় আরো নতুন কিছু করলাম,নতুনভাবে দেখলাম পুরো বিষয়টিকে। মহাবিশ্বের পরিবর্তনের ইতিহাস কি শুধুমাত্র পূর্ব-পশ্চিমের কিছু মানুষের হাতে বন্দি হয়ে থাকবে? আমরা কেন নিজেদের পরিবর্তন করতে পারবনা এবং সেই পরিবর্তনকে বিশ্ব ইতিহাসের পাতায় স্থান দিতে পারব না!
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে এপ্রিল, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৩২
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মত প্রকাশ মানে সহমত।

লিখেছেন অনুপম বলছি, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:২৭

আওয়ামী লীগ আমলে সমাজের একটা অংশের অভিযোগ ছিলো, তাদের নাকি মত প্রকাশের স্বাধীনতা নাই। যদিও, এই কথাটাও তারা প্রকাশ্যে বলতে পারতেন, লিখে অথবা টকশো তে।

এখন রা জা কারের আমলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আত্নমর্যাদা!

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৪৩

রেহমান সোবহান একজন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। তার বাড়ি থেকে বিদ্যালয়ের দূরত্ব প্রায় ৬ কিলোমিটার। রেহমান সাহেব এমন একটি বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতেন যা খুব নির্জন এলাকায় অবস্থিত এবং সেখানে যাওয়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাঁঠালের আমসত্ত্ব

লিখেছেন বিষাদ সময়, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭

কাঁঠালের কি আমসত্ত্ব হয় ? হয় ভাই এ দেশে সবই হয়। কুটিল বুদ্ধি , বাগ্মিতা আর কিছু জারি জুরি জানলে আপনি সহজেই কাঁঠালের আমসত্ত্ব বানাতে পারবেন।
কাঁঠালের আমসত্ত্ব বানানের জন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

ট্রাম্প বলেছে, বাংলাদেশ পুরোপুরি এনার্খীতে, তারা মাইনোরিটির উপর অত্যাচার করছে।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৬



৩ দিন পরে আমেকিকার ভোট, সাড়ে ৬ কোটী মানুষ ভোট দিয়ে ফেলেছে ইতিমধ্যে; ট্রাম্পের জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা শতকরা ৫১ ভাগ। এই অবস্হায় সনাতনীদের দেওয়ালী উপক্ষে ট্রাম্প টুউট করেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। অ্যাকসিডেন্ট আরও বাড়বে

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৯



এরকম সুন্দরী বালিকাকে ট্র্যাফিক দায়িত্বে দিলে চালকদের মাথা ঘুরে আরেক গাড়ির সাথে লাগিয়ে দিয়ে পুরো রাস্তাই বন্দ হয়ে যাবে ।
...বাকিটুকু পড়ুন

×