তিলোত্তমা,
তোমার পত্রে যে শব্দ ছিল, যেগুলো বর্ণ বনেছে;
খাম খুলতেই হুরমুর করে বেরিয়ে এল সামনে !
“কেমন আছো ?” , বলে উঠল একজন, সেই শুরু ।
গতকাল পুরোটা রাত কেটেছে তাদের সাথে গল্প করে ।
পত্রে তুমি যে সুর পাঠিয়েছো, গেয়ে শোনালো আরেকজন,
আফসোস সাথে টেপ রেকর্ডার ছিল না ! নইলে-
তুলে রাখতাম । আরেকজন গল্প শোনালো তোমার পাড়ার,
ঐ যে শ্যামল আর প্রীতির প্রেম নিয়ে কিছুদিন আগে যে হৈচৈ হলো না;
তা ই বলল । আমি মন্ত্রমুগ্ধের মত শুনে চলছিলাম।
কেমন আছো তুমি ?
বৃষ্টিতে ভিজো আগের মতন ?
গুন গুন করে রবীন্দ্র বাজে এখনো কন্ঠে ?
অমলের চটপটি, কলেজ মোড়ের সমুচা –
এখনো কি তৃপ্তি লাগায় প্রাণে ?
নাকি সব বাদ দিয়েছো ?
এদের নিয়ে কিছু বললে না যে এবার !
রাগ করেছো নাকি মন খারাপ ?
জানতে ইচ্ছে করে ।
পত্রে শুধু গল্প পাঠিয়েছো , নিজের কথা বললে না যে !
মাসী কি এখনো পাত্র দেখে চলছে তোমার ?
পিসির ছেলেটা কি এখন প্রেমপত্র লেখে না সাতটা গোলাপে ?
তার দু একটার উত্তর দিয়ো , তার জন্য না হোক গোলাপ সমীপে !
নাকি এখন আর দেয় না !
জানো , ড্রয়ার খুলতে সেদিন তোমার ডাইরীটা পেলাম,
‘১৩/৫ করমচাঁদ ল্যান, কলকাতা’ ঠিকানাটা সেদিন
আর আমায় ঘুমুতে দেয়নি,
সারা রাত আমি পাগলের মতন হেসেছি, কেঁদেছি !
আচ্ছা তুমিও কি কাঁদো ? হাসো এখন আনমনে ?
পত্রে কিছু লিখবো না এবার ঠিক করেছি ,
তোমার জন্য কতগুলো খাম পাঠালাম,
শুধু নীল রঙের টা ছাড়া, ঐটা আমার !
তুমি আবার ভুল বুঝো না ।
কেউ না জানুক তুমি তো জানো,
শরতের কোন এক গোধুলীতে ছেলেটি প্রেমে পড়েছিল
নীলের । সাদা মেঘের দলের মাঝে এক টুকরো নীলের !
মনে আছে এখনো ?
ভালো থেকো । দার্জিলিং এর বৃষ্টিরা খুব মিস করছে তোমায় !
পারলে একটু সময় দিও ওদের !
ইতি
সুনীল
সভ্যতা মানসিক নিরাময় কেন্দ্র, শিমলা ।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে মে, ২০১৬ দুপুর ২:২০