মেয়েটির ফাইনাল পরীক্ষা চলছে।পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে বিয়ের প্রস্তাব আসে।মেয়েটির আব্বু আম্মু দেশের বাইরে থাকা স্বত্তে কি মনে করে মেয়েটির বাবা(চাচা) প্রস্তাব গ্রহণ করে ফেলেন।তাই একদিন মেয়েটিকে ছেলের বাড়ির লোকেরা দেখতে আসে।মেয়েটি শুকনো এবং চেহারা দেখতে ভালো না বলে ছেলের মায়ের পছন্দ হয় নি। তারপরও কি মনে করে পছন্দ হয়েছে বলে আংটি পরিয়ে যায়। ছেলের পরিবার থেকে এত তাড়াতাড়ি বিয়ের তারিখ ফেলা হয় ছেলের পরিবার কেমন তা খোঁজ নেয়ার সময়টুকু পায়নি মেয়ের পরিবার।তাই বিয়েটা হয়ে যায় পনেরো দিনের মধ্যেই।
#বিয়ের পর মেয়েটির সংসার ভালোই চলছিলো।হঠাৎ বিয়ের উনিশ দিনের মাথায় মেয়েটির পিঠে ব্যথা উঠে। ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়া হলে ওরা কয়েকটা টেস্ট দেয়।টেস্টের রিপোর্ট নিয়ে যাওয়া হয় একজন মেডিসিন বিশেষজ্ঞের কাছে। তিনি রিপোর্ট দেখে জানান ছয় (৬) এর একটা চাকা দেখতে পাচ্ছি তবে সেটা টিউমার না রক্তের চাকা সেটা বুঝতে পারছি না আপনারা বরং একজন গাইনি ডাক্তার দেখান এবং তিনি ডাক্তারের নাম ও বলে দেন। তখন ডাক্তারের চেম্বারে ছিলেন মেয়েটি, মেয়েটির আব্বু এবং ছেলেটি। পরে ডাক্তার মেয়েটিকে দেখে এবং পিঠে কেন ব্যথা হচ্ছে তার জন্য আরেকটি টেস্ট দেয় আর ঐ রিপোর্টটি নিয়ে ডাক্তার এর কাছে যান মেয়েটির আব্বু।তখন ডাক্তার জানান ঐ রিপোর্টটিতে অর্থাৎ পিঠে কোনো প্রব্লেম নেই।
#দুইদিন পর আবার মেয়েটির ব্যথা উঠলে তাকে বড় গাইনি বিশেষজ্ঞের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। তিনি টেস্ট দেন এবং রিপোর্ট দেখে জানান মেয়েটিকে তাড়াতাড়ি অপারেশন করতে হবে। কেননা তার টিউমার হয়েছে এবং এটি নয় (৯)এ চলে গেছে তাড়াতাড়ি অপারেশন না হলে মেয়েটিকে বাচানো যাবে না।আলহামদুলিল্লাহ মেয়েটির অপারেশন সাকসেসফুল হয়।ডাক্তার বলেও দিছে আল্লাহ চাইলে বেবি হওয়াতে কোনো প্রব্লেম হবে না।
#কিন্তু এখানেই শেষ না। এই অপারেশন মেয়েটির জিবনে অভিশাপ হয়ে দাঁড়ায়। ছেলেটির মাও একটা সুযোগ পেলেন।ছেলেটির পরিবার বলাবলি করতে থাকে এটা নাকি বিয়ের আগের প্রব্লেম মেয়েটির বাবা,মা লুকিয়ে বিয়ে দিছে। ছেলেটি স্বয়ং চেম্বারে থেকেও বলে মেয়েটির আব্বু লুকিয়েছেন।অথচ যেই রিপোর্ট শেষে করানো হয়েছিল এবং যেটাতে কোনো প্রব্লেম ছিল না ওই রিপোর্টটাই নিয়ে ঢুকেছিল মেয়েটির আব্বু। ছেলেটির নিজের মূর্খতার কারনে তার মা বাবা পরিবার পরিজনের কাছে মেয়েটির আব্বু ছোট হয়। একদিন ছেলেটি বাধ্য করে মেয়েটিকে মেয়েটির বাবা মা যেন ছেলেটির বাবা মার কাছে ভুলের জন্য মাফ চায়।মেয়ের মুখের দিকে চেয়ে মেয়ের কান্না সহ্য করতে না পেরে ওরাও মাফ চায় বিনা দোষে।কোনো বাবা মা চায় না তার সন্তানের এত বড় অসুখ লুকাতে।গরিব হলেও চেষ্টা করে চিকিৎসা করাতে অথচ ছেলেটির পরিবার ধরেই নিল এটি বিয়ের আগের অসুখ।কিন্তু একবারও ভাবলো না ওরা মা বাবার কাছে মেয়ের বিয়ের থেকে জিবনের মূল্য বেশি।মেয়েটির পরিবার অসুখটি লুকিয়ে রাখলে আল্লাহ তাদেরকেও ছাড়বে না এইটা মনে রাখা উচিত ছিল।
#অপারেশন পরে মেয়েটিকে তার বাবার বাড়ি পাঠিয়ে দেয়া হয়।কেননা ছেলেটির মা সহ্য করতে পারবেন না ছেলে বউ এর পানি বইছে(সেবা)। আঠারো দিন পরে কি মনে করে মেয়েটিকে শশুড় বাড়ির লোকজন নিয়ে যায়।কয়েকটা দিন ভালোই কাটে । তারপর ছেলেটি দেশের বাইরে চলে যায়।যদিও যাওয়ার কথা ছিল পনেরো দিন পর কিন্তু তাকে পনেরো দিন আগেই পাঠানো হয়।যাওয়ার পর তাদের দুইজনের মধ্যে যোগাযোগ বেশ ভালোই ছিল। ছেলেটি সময় সময় কি করছে, কখন ডিউটি তে যাচ্ছে, কখন খাচ্ছে সব জানাতো।একদিন ছেলেটি মেয়েটিকে না বলে না কল দিয়ে ডিউটিতে চলে যায়। মেয়েটি চিন্তায় পড়ে যায় কি হল এই ভেবে।ছেলেটিকে ম্যাসেজ করে বাট কোনো রিপ্লাই আসে না। পরেরদিন সন্ধ্যায় ছেলেটি কল দিয়ে বলে ভাবি আমেরিকা নিয়ে তোমার রিপোর্ট দেখিয়েছে।তুমি নাকি বেবি ক্যারি করতে পারবে না এবং টিউবে চলে গেলে ছয় মাসে সিজার করতে হবে। তুমি বরং ভাবির থেকে এক দুই বছর সময় চেয়ে নাও আর বলো ভাবি তোমারো বোন আছে আমাকে বোন ভেবে না হয় কয়েকটা দিন সময় দাও। আর বলবে আমি তোমার সাথে কথা বলি না দুইদিন থেকে। তখন মেয়েটি বললো আমাকে তো ভাবি বিয়ে করেনি সময় চাইলে তুমি চাইবে তাছাড়া ভাবিতো এই বিষয় নিয়ে আমাকে কিছু বলেন নি আমি কি করে হঠা্ৎ এই কথা বলবো। তখন থেকে ছেলেটি কথা বলা বন্ধ করে দেয়।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই নভেম্বর, ২০১৯ রাত ২:২৯