২০০৬ সাল। পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ি। আমি ক্লাসের সবচেয়ে ছোট ছিলাম। অন্যদের সাথে আমার বয়সের পার্থক্য ছিল সর্বনিম্ন দেড় থেকে দুই বছরের মত। মানে ক্লাস থ্রিতে পড়া স্টুডেন্টদের মত আমার বয়স!
আমাদের গ্রামে পড়ালেখা করতো এমন বড় ভাই বোনের সংখ্যাটা গুনলে ৬-৭ জনের বেশি হবে না। আছমা নামের এক আপু ছিলেন। ওনি অনেক সময় ম্যাগাজিন পড়তেন। আর আমি ক্লাস ওয়ানে থাকতেই পত্রিকা পড়তাম। ভালো লাগতো।।
তো আমি আছমা আপুদের বাসায় মাঝে মধ্যে যেতাম। ওনার কাছ থেকে নতুন কোন গল্প শোনার জন্য, অথবা পড়ার জন্য।।
একদিন আমার চাচাতো বোন মিনা আপা একদিন বলল, ইউনূস নামেই কে জানি নোবেল পেয়েছে।
শোনেই গেলাম আছমা আপুর বাসায়। তিনি শোনালেন ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নোবেল পাওয়ার গল্প। আর কিছু বুঝি বা না বুঝি এতটুকু বুঝতে পেরেছিলাম যে, এই নোবেলটা সাধারণ কোন জিনিস না। এইটা খুব বিরল একটা জিনিস যা খুব বেশি ভালো মানুষ বা খুব বেশি ব্রিলিয়ান্টরা পেয়ে থাকে। আর এটার মর্যাদা রাজকীয়।
বাংলাদেশের একটা মানুষ, বাংলাদেশ এর একটা প্রতিষ্ঠান সেই রাজকীয় নোবেল পেয়েছে খবরটা শোনে যা খুশি হয়েছিলাম এটার তুলনা হয় না। যদি সেই সময়ের সাথে তুলনা করি, তাহলে বলবো তামিম ইকবাল জহির খানকে ডাউন দ্য উইকেটে এসে ছক্কা মারার পর যে পরিমাণ খুশি হয়েছিলাম, ড. ইউনূসের নোবেল জয়ের গল্প শোনে এর চেয়ে খুব বেশি কম খুশি হয় নাই।
কিন্তু এই মানুষটার ওপর সুদের ট্যাগ দিয়ে ঘৃণা ছড়ালো প্রথমে মৌলভিরা। তারপর ওয়ান ইলেভেনের ঘটনার জন্য বাংলাদেশ এর প্রধান দু'টি রাজনৈতিক দল এই লোককে মূলহোতা মনে করে ওনাকে পর্যাপ্ত সম্মান দেয় নাই।।।
এখন কোন এক অজানা কারণে আবারও ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে সরকার দলীয় লোকেরা ড. ইউনূসকে নিন্দা ও ঘৃণা ছড়ানো হচ্ছে। ওনার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের বিষয়ে মন্তব্য করব না। কিন্তু এক পক্ষ ওনার নামে মিথ্যা রটাচ্ছে। মানবজমিনের একটা রিপোর্ট কমেন্টে দিবো। চাইলে দেখে নিতে পারেন।
তবে বর্তমান সরকার দলের প্রধান বিরোধী দল ড. ইউনূসের পক্ষে আছে। কিন্তু আপাতদৃষ্টিতে যা মনে হয়, ওনারা পক্ষে আছেন রাজনৈতিক স্বার্থেই।
মৌলভিদের আর রাজনৈতিক দলের নোবেলবিজয়ী ব্যক্তির প্রতি ঘৃণা ছড়ানো আর শিক্ষক শ্রেণীর কারো দ্বারা ঘৃণা ছড়ানোর মাঝে অনেক পার্থক্য আছে।
পাশ্চাত্যের অক্সফোর্ড যাকে বলা হয়, সেই ঢাবির মতো শিক্ষকেরা যখন ড. ইউনূসের নোবেল প্রত্যাখানের দাবি করে তখন বুঝে নিতে হয় যে দেশে আর শিক্ষিত লোকের বড়ই অভাব।
প্রবাদ আছে। যে গুণীর কদর নেই, সে দেশে গুণীর জন্ম হয় না।
ড. ইউনূসকে নিয়ে কখনো লিখেছি কিনা পড়ে না। আজকে তাঁর দুর্দিনে না লিখেও থাকতে পারলাম না। আশা করছি, তিনি এই দুর্দিন কাটিয়ে ওঠবেন।
মানবজমিনের রিপোর্ট: যেভাবে চলছে ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধ প্রচারণা
অনেক দিন ধরেই ব্লগে নেই আমি। আশা করছি সবাই ভালো আছেন। আমি কেন লগ ইন করতে পারলাম না বুঝলাম না। পাসওয়ার্ড রিসেট করেছি। কিন্তু অন্য কোন ব্রাইজার দিয়ে লগ ইন করতে গেলে আবার পাসওয়ার্ড রিস্টে দিতে বলছে। অন্যদেরও কি এমন সমস্যা হচ্ছে?
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ রাত ১:১২