এক. একটি স্বপ্ন ও কিছু কথা:
শীতের ঋতু। সূর্যের দেখা নেই ক'দিন ধরে। কুয়াশায় পুরো শহর ঢেকে গেছে। হাড়া কাঁপানো শীত। অন্য যেকোন দিন শহরটাতে আর সব দিনের মতোই খানিক নিরবতা বিরাজ করতো। সবাই যার যার কাজে ব্যস্ত থাকতো। কিন্তু তা নয়? আজ অন্য রকম একটা দিন। কারো কারো মুখে ইসলাম কায়েম হওয়ার হাসি, বিজয়ের হাসি। কারো কারো মুখে বাকস্বাধীনতা হারানোর দুঃখ, বেঁচে থাকার অধিকার হারানোর ভয়।
কনকনে শীত উপেক্ষা করে একে একে মানুষজন আসছে। কেউ ব্যানার হাতে, কেউ প্ল্যাকার্ড হাতে, কেউ গেঞ্জিতে লিখে। আর কিছু লোকের যেনো শীতই নেই।মুক্তির দাবির কাছে তাঁদের কাছে ওসব শীত গরম অতি তুচ্ছ ব্যাপার। তারা মাথায় লাল সবুজের পতাকা মুড়িয়ে উদোম বুকে লিখেছে,
"ব্লগার হত্যার বিচার চাই"
" বাকস্বাধীনতার অধিকার চাই"
ইত্যাদি..... ইত্যাদি..
একটা সুন্দর ছেলে। বয়স আঠারো পেরোয়নি বোধ হয়। তার তো এখানে থাকার কথা নয়। তার তো ওসব ব্লগার টগার বুঝে ওঠার কথা নয়। ছেলেটা মুখে টেপে লাগিয়েছে। তার বুকে লেখা,
"যদি তুমি চুপ থাকো তবে তুমি বেশ
যদি তুমি মুখ খোলো তবে তুমি শেষ"
বাকস্বাধীনতার অধিকার আদায়ের জজন্য, ব্লগার হত্যাকারীদের বিচারের দাবি নিয়ে রাজপথে জনতার ঢল নেমেছে। জনতার ঢল বলা বোধ হয় ঠিক হবে না। হাতে গোনা যাবে এমন অল্পসংখ্যক লোকের এই আন্দোলন। কোন রাজনৈতিক দলের মিছিল হলে তা অনেক বড় হয়ে উঠত। ফুলে ফেঁপে উঠত বস্তি থেকে ছেলেপুলে ধরে আনা হতো। জনপ্রতি ১০০-২০০ টাকার চুক্তিতে। সেই ভাড়াটে মানুষের আন্দোলনের ভয়ে সরকার কুকড়ে যেত। রাস্তার মোড়ে মোড়ে পুলিশ মোতায়েন করা হতো। সেই মিছিল একসময় বেগতিক হতো। গাড়ি ভাঙচুর হতো গাড়ি ও দোকান পাট। পুলিশ তখন তাঁদের থামাতে কাঁদুনে গ্যাস ছোঁড়ত, গরম পানি দেয়া হতো। একসম ফাঁকা বুলেটও করতে হতো।
মুক্তমনাদের আন্দোলন বড় হয়নি। তাঁদের ভাড়াটে লোল নেই। তাঁদের মিছিলে উগ্রতা নেই। তাঁদের মিছিলটা এতো ছোট্ট ও এত শান্ত যে আলাদাভাবে পুলিশ মোতায়েন করার দরকার হয় না। তবু সেই মিছিলের লোকজন ভয়ে ভয়ে থাকে। ব্লগার হবার অপরাধে, মুক্তমনা হবার অপরাধে না জানি কোনদিন তাঁদের শার্ট বুকের তাজা রক্তের রঙে লাল হয়ে যায়। কোনদিন জানি তাঁদের স্ত্রী হয়ে যায় স্বামীহারা। ফুটফুটে বাচ্চাটা তার বাবার আঙ্গুল ধরে স্কুলে যাবার আনন্দটা হারিয়ে ফেলে। চিরতরে হারিয়ে ফেলে তার প্রিয় বাবাকে।
দুই. ব্লগার সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা:
ক্লাস সিক্স সেভেনে পড়ার সময় ব্লগার শব্দটা শুনলেই মনে হতো এমন অপরাধীর কথা যে চোর ডাকাতের চেয়েও খারাপ, সন্ত্রাসীর চেয়েও বেশি ভয়ংকর। এক কথায় মনে হতো তাঁদের মতো খারাপ লোক পৃথিবীতে নেই। হ্যাঁ, আমাদের বাংলাদেশে ব্লগারদের সম্পর্কে এমন ধারণা করাটাই অতি স্বাভাবিক ছিল। কারণ ব্লগারদের ফাঁসির দাবিতে জনতা আন্দোলন করতো। আবার সাধারণ মানুষ ব্লগারদের হত্যা করতো। (বলে রাখা ভালো, হত্যাকারী কখনো সাধারণ মানুষ নয়। তারা সন্ত্রাস)। ব্লগারদের খুন করা হলে জনতা উল্লাসে ফেটে পড়তো এবং হত্যাকারীদের বিচার হতো না। এখনো হয় না।
তো যাকে খুন করলে মানুষ খুশি হয়, আবার খুনীর বিচারও হয় না তাকে পৃথিবীর সবচে খারাপ, সবচেয়ে বড় অপরাধী ভাবাটা মোটেই অস্বাভাবিক নয়। ব্লগারকে অপরাধী না ভাবাটাই বরং অস্বাভাবিক।
ব্লগ সম্পর্কে পাঠ্যবই 'তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি'-তে প্রথম সঠিক ধারণা পাই। পাঠ্যপুস্তক কমিটির একটা ধন্যবাদ প্রাপ্য। নাহলে পরবর্তী প্রজন্মও আমার মতো ব্লগার সম্পর্কে নেতিনাচক ধারণা পোষণ করতো। হয়ে উঠতো ব্লগার বিদ্বেষী।
তিন. ব্লগ ও ব্লগিং, ব্লগার সম্পর্কে টুকিটাকি জেনে নিই:
ব্লগ(Blog) এর বাংলা প্রতিশব্দ হল অনলাইন ব্যক্তিগত দিনলিপি বা ব্যক্তিকেন্দ্রিক পত্রিকা। যারা ব্লগে লিখেন বা পোস্ট করেন তাঁদের বলা হয় ব্লগার। বিভিন্ন ধরণের ব্লগ আছে। ব্লগ, আর্টব্লগ, ছবি ব্লগ, ভিডিও ব্লগ ইত্যাদি।
চার. ব্লগের ইতিহাস:
"১৯৯৭ এর ১৭ ডিসেম্বর, "জর্ন বার্গার" নামক এক ব্যক্তি সর্বপ্রথম 'weblog' শব্দটির উদ্ভাবন করেন। পরবর্তীতে, 'পিটার মেরহোলজ' তার নিজস্ব ব্লগ পিটার্ম ডট কমে কৌতুক করে 'weblog' শব্দটিকে ভাগ করে 'blog' বলে সম্বোধন করেন ১৯৯৯ এর এপ্রিল বা মার্চের দিকে। তারপর থেকে 'blog' শব্দটির ব্যাবহার বাড়তে থাকে। ইভান উইলিয়ামস নামের এক ব্যক্তি blog শব্দটিকে যথাক্রমে 'বিশেষ্য' ও 'ক্রিয়াপদ'- দুভাবেই কাজে লাগান। তিনিই 'Blogger' কথাটির উদ্ভাবন করেন" [উইকিপিডিয়া]
বাংলা ভাষার প্রথম ও সবচে জনপ্রিয় ব্লগসাইট হল প্রিয় 'সামহোয়্যার ইন ব্লগ' যাদের স্লোগান বাঁধ ভাঙার আওয়াজ। ব্লগটি ২০০৬ সালে চালু হয়। প্রতি বছর ১৯ ডিসেম্বর ব্লগ দিবস পালন করা হয়। (একটি বিশেষ কারণে ২০১৯ সালে ২৫ ডিসেম্বর পালিত হয়েছে)
পাঁচ. ব্লগারের সীমাবদ্ধতা:
বাকস্বাধীনতারর নামে অনেকেই বিভিন্ন ধর্মকে নিয়ে ব্যঙ্গ করে থাকে।আমার ব্যক্তিগত মতামত হলো। মুক্তচর্চা খুব ভালো একটা জিনিষ। এর মাধ্যমে মানুষের সৃজনশীল চিন্তাভাবনা প্রকাশ পায়। চিন্তাভাবনায় আসে নতুনত্ব ও পরিপক্বতা। কিন্তু একজন ব্লগারের একটা সীমারেখা থাকা উচিৎ। শুধু একজন ব্লগারেরই নয়। প্রতিটা মানুষেরই এই সীমারেখা থাকাটা উচিৎ। সেই সীমারেখা হলো কেউ কোন ধর্মকে, ধর্মের প্রবর্তকে কোনরুপ কটুক্তি করতে পারবে না, অবমাননা করতে পারবে না। কেউ আমাদের নবী মুহাম্মদ (স) নিয়ে কটাক্ষ করতে পারবে না। আমরাও পারব না অন্য কোন ধর্ম নিয়ে কটাক্ষ করা। ধর্ম যার যার নিজের কাছে। যে যে ধর্মের সেই ধর্মে র উপাসনা পদ্ধতি নিয়ে ঠ্রাট্টা বিদ্রুপ করতে পারব না। কেউ কোন ধর্মের প্রতি অশ্রদ্ধা করব না।
এইটুকু সীমাবদ্ধতা থাকা উচিৎ। তাহলে কেউ অস্ত্র হাতে তুলে নিবে না। আর সীমাবদ্ধতা যদি কেউ অতিক্রম করেই থাকে তাহলে মানুষ নিজের হাতে আইন তুলতে যাবে কেন? কেউ বাকস্বাধীনতার সীমারেখা কিংবা মতামত প্রকাশের সীমাবদ্ধতা অতিক্রম করলে তার শাস্তি দিবে সরকার। কঠোর শাস্তি। (শাস্তি মানে মৃত্যু নয়, কোন অপরাধের শাস্তিই যেন মৃত্যু না হয়, সে ব্যাপারের অন্য একদিন বলব, কেউ এই বিষয়ে পোস্ট করার আগ পর্যন্ত প্যাঁচাল পারবেন না প্লিজ)
আর যদি কেউ আইন হাতে তুলে বা তুলে নিতে চায় তবে তাঁকে কঠোর শাস্তি দিতে হবে। দিতেই হবে। সেই শাস্তিও দিবে সরকার। আরেকটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জিনিষ হলো প্রত্যেককে ভিন্ন মত গ্রহণের ক্ষমতা বা গুণ অর্জন করতে হবে।
এমন যদি হয় তবে কেউ মতামত প্রকাশের নামে, ব্যক্তিস্বাধীনতার নামে অপচর্চা করতে পারবে না। আবার কেউ নিজের হাতে আইন তুলে নেয়ার সাহসও পাব না। আসুন এই বিষয়ে আমরা সচেতনা ছড়িয়ে দিই। সরকার যেন কোন কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে পারে আমরা এমন কিছু করি।
চার. ব্লগার ও লেখক:
সামু ব্লগের ২০১৯ সালের ব্লগ ডে পালিত হয়েছিল ২৫ ডিসেম্বর। ঢাকার বাইরে থাকায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারিনি। যদি যাবার কোন সঙ্গী পেতাম তাহলে চলে যেতাম। তো অনুষ্ঠানটি ফেসবুকে মাঝে মাঝে লাইভে দেখাচ্ছিলেন ব্লগার নীল সাধু ভাই। কিছু ভিডিও আপলোড করে। যেগুলো চোখে পড়েছে সবগুলোই দেখি। একজন ব্লগারের বক্তব্য খুব খুউব বেশি ভালো লেগেছিল। মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে শুনেছি। একটানা ৫-৬ বার শুনেছি। কিন্তু আফসোস পুরো বক্তব্যটি ছিল না। কারণ নীল সাধু ভাই একবার ব্লগারদের বক্তব্য, একবার খাবার দাবার ইত্যাদি দেখাচ্ছিলেন। এরপরও পুরো বক্তব্যের জন্য এক দুজন ব্লগারের নিকট খোঁজ নেই। কিন্তু পাইনি। কেউ কেউ পরামর্শ দিয়েছিলেন নীল সাধু ভাইয়ের কাছ খোঁজ করতে। কিন্তু ওনাকে নক করিনি। ওনি প্রকাশক মানুষ। বইমেলার বই নিয়ে নিশ্চয় ব্যস্ত সময় পার করছে। তাই তাকে বিরক্ত করতে চাইনি।
সেই ব্লগার হলেন সাহাদাৎ উদরাজী। তিনি বলছিলেন লেখক ও ব্লগারের পার্থক্য নিয়ে।ব্লগার ও লেখক সম্পর্কে আলাদাভাবে এর আগে কোনদিনই ভাবিনি। তো যাহোক, শাহাদাৎ ভাইয়ের মতামতের সাথে অনেকের দ্বিমত থাকতে পারেও। আমার নিজেরও খানিক আছে। কিন্তু সবমিলিয়ে বক্তব্যটি দারুণ লেগেছে। শাহাদাৎ ভাইয়ের মতে-
"লেখক এবং ব্লগার - এইই দুয়ের মধ্যে কিন্তু একটু তফাৎ আছে। একজন লেখক কিন্তু সব বিষয়ে লিখে ফেলতে পারে না। তিনি হয়তোবা কবিতা লেখেন কিংবা সাহিত্যের কোন শাখায় নাম করেন। কিন্তু ব্লগার যদি বলে থাকি তাহলে ঐ লোকটি হচ্ছে তাঁদের চেয়ে কয়েক হাজারগুণ স্বাধীন।অর্থাৎ সে যেকোন বিষয় নিয়ে লিখতে পারে। একজন ব্লগার মানেই হচ্ছে তার মতামত হবে সব বিষয়ে। যেকোন বিষয় দেখবে সে সেই বিষয়ে লিখতে পারে। সুতরাং ব্লগারের পরিচয় যেটা আমার কাছে মনে হয় সেটা হচ্ছে ব্যাপক পরিচয়। এবং এই পরিচয়টা মূলত অর্জন করার জন্য যে চেষ্টাটা করতে হয় সেটা কিন্তু একজন লেখক কিংবা সাংবাদিক বা অন্যান্য যত শাখা আছে সেই শাখার চেয়ে অনেক বড় একটা পরিচয়। একজন ব্লগার লিখতে যেয়ে পারিবারিকভাবে, সামাজিকভাবে এবং রাষ্ট্রীয়ভাবে যে সমস্যায় পড়েন একজন লেখক কিন্তু সেই সমস্যায় পড়েন না। যিনি কবিতা লিখেন, যিনি সাহিত্য লিখেন, গল্প লিখেন, উপন্যাস লিখেন তার জন্য সেই বাঁধাগুলো নেই। কিন্তু ব্লগার হিসেবে আমি যখনই মতামত লিখি আমাকে আমার পরিবার নিয়ে চিন্তা করতে হয়; আমাকে পুলিশ ধরে নিয়ে যাবে কিনা এটা চিন্তা করতে হয়, আমি রাস্তায় ঠিকমতো হাটতে পারব কিনা সেই চিন্তা করতে হয়। তো নানান বিষয়ে আমরা লিখি বলে আমাদের স্বাধীনতার ঐ ধারাটা কিন্তু অনেক উপরে। এই জন্য আমি আসলে নিজেকে ব্লগার পরিচয় দিতে ভালবাসি।"
সাহাদাৎ ভাইয়ের কথাগুলো শোনামাত্রই এই বিষয়ে একটা আর্টিকেল লেখার ইচ্ছে জাগে। কিন্তু আমি হিসাব ছাড়া অলস। তাছাড়া ইদানীং একটু বেশি খেলাধুলো করছি। তাই আর লিখতে পারিনি। ফেসবুক সূত্রে জানতে পারি গতকাল শাহাদাৎ ভাইয়ের জন্মদিন গেছে। ব্লগার শাহাদাৎ ভাইকে জানাই জন্মদিনের শুভেচ্ছা। বিলেটেড হ্যাপি বার্থডে।
ভাবলাম, শাহাদাৎ ভাইয়ের জন্মদিন উপলক্ষে এবার লেখাটা হয়ে যাক তবে। অর্ধেক লিখে থেমে যেতে হয়। আবারো বাঁধা সেই খেলাধুলা। আজকেও লেখা হতো না সম্ভবত যদি বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যকার টি টুয়েন্টি ম্যাচটা মাঠে গড়াত।
গতকাল একটা স্বপ্ন দেখেছি। ব্লগার বিষয়ক স্বপ্ন। (১) স্বপ্নের প্লটেই লেখা হয়েছে। লেখাটা হয়তো বা এখনই সম্পন্ন হতো না। কিন্তু স্বপ্নের স্মৃতি ভুলে যাব বিধায় এবার আর দেরি করতে চাইনি।
বন্ধদের সাথে যুক্তি তর্ক করছি। কিছু কিছু দর্শনে আমি খুব বিশ্বাসী, এবং ওগুলোকেই সঠিক বলে মনে হয়। ওই বিশ্বাসটা এমন যে আমি যখন কোন মুসলিম এর সাথে তর্ক করি তখন তাঁদের মনে হবে আমি নাস্তিক অথবা অজ্ঞেয়বাদী অথবা যদি মুসলিম হয়েও থাকি আকিদ্বা ঠিক নেই। আবার নাস্তিকের সাথে কথা বললে তারা ভাবে আমি আর সব মুসলিমদের মতোই একজন। আমার অবস্থানটা আমি ঠিক বুঝাতে পারি না। নাস্তিক্যবাদ ও ধর্মে আমার যে দর্শন ও বিশ্বাস এর পক্ষে যুক্তি দাঁড় করালেও সেগুলোকে অকাট্য হিসেবে প্রমাণ করতে পারি না। কিংবা উগ্রপন্থী মুসলিমদের ভয়ে সেই কথাগুলো ঠিকমতন প্রকাশ করতে পারি না। মাঝেমধ্যে একটু আধটু প্রকাশ করলেও পাল্টা যুক্তিতে তা খন্ডন হয়ে যায়।
স্বপ্নে দেখেছি 'অঘোষ' না কি নামে যেন একজন ব্লগারকে হত্যা করা হয়েছে। নামটা ঠিক মনে নেই। ঢাকার কোথাও ব্লগারদের একটা আন্দোলন হচ্ছে। এই ঘটনায় পুরো দেশ উত্তাল। সব জায়গায় এই বিষয়ক আলোচনা। টেলিভিশন এর প্রধান সংবাদই এই ব্লগার হত্যা নিয়ে। আমি তর্ক করছি বন্ধুদের সাথে। এবং এমনভাবে তাঁদের বুঝাতে সক্ষম হয়েছি যে আমার যুক্তিগুলো অকাট্য, সঠিক ও যথার্থ। বন্ধুরাও চুপ হয়ে গেছে। আমার যুক্তি মেনে নিয়েছে।
কিন্তু স্বপ্নে বন্ধুদেরকে দেয়া আমার দর্শনের সেই ব্যাখ্যাগুলো একটুও মনে নেই। স্বপ্নের পুরোটুকু মনে থাকার কোন পদ্ধতি থাকলে খুব উপকার হতো।
শেষ কথা:
যদিও বা একজন আদর্শ ব্লগারের গুণাবলী অর্জন করতে পারিনি এখনও, যদিও ব্লগিং জগতে মাত্রই বিচরণ করেছি, বাকি আছে অনেকটা পথ..... তবু.. তবু শাহাদাৎ ভাইয়ের কথাগুলো শোনামাত্রই আমার চোখে মুখে আনন্দের ছাপ পড়েছিল, গর্বের রেখা পরিস্ফুট হয়েছিল। মুখ থেকে আস্তে করে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিঃসৃত হয়েছে একলাইনের ছোট্ট একটা বাক্য "আমি গর্বিত আমি ব্লগার"
লেখাটা উৎসর্গ করলাম ব্লগার শাহাদাৎ উদরাজী ভাইকে।
বিঃদ্রঃ শাহাদাৎ ভাইয়ের ব্লগার ও লেখক সম্পর্কে মতামতটা ট্রান্সক্রিপ্টেড। কয়েকটি শব্দ আমি বুঝিইনি। ভুল হতে পারে। ভুল পেলে ধরিয়ে দিবেন ও ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। ধন্যবাদ।
আকতার আর হোসাইন [২৬-০১-২০২০]
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে জানুয়ারি, ২০২০ রাত ১২:২৮