somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

আনজির
আমি একা একা থাকতেই ভালবাসি- "ভালবাসি" কথাটা হয়ত ঠিক না... একা থাকতে থাকতে এমন হয়ে গ্যাছে। আমি সহজে কারো সাথে মিশতে পারি না। একবার মিশলে তাকে সহজে ছাড়তে পারি না। হয় বরাবর কথা বলি... নয়তো একেবারেই বলি না। আমার একটা কথাও যদি ভাল লাগে আপনার... এতেই নিজেকে ধন্

ওষুধ কোম্পানি কর্মিদের চুরি করতেও পাঠায়!!- ইনসেপ্টার দুই কর্মির কাজ

২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

নিজেদের বাজার ধরতে ওষুধ কোম্পানি... কি না করে! ওষুধ কোম্পানি গুলোর মাঝে আছে অসুস্থ প্রতিযোগিতা। আমরা সবাই তা জানি। কত রকমের উপহার তারা ডাক্তারদের দেয় তার কোনো ইয়ত্তা নেই। ফার্মাসি ওয়ালাদের সামনে দেয় বিশাল কমিশনের মুলা। আরও নানান কিছু...। কিন্তু আজ একটা ঘটনা দেখে পুরাই টাশকি খেয়ে গেলাম। কয়েকদিন যাবৎ আমি হাসপাতালে যাই। আমার পাশের বাড়ির একজন কে ভর্তি করেছি। উনার সাথে কেউ নেই। আমাকেই সব করতে হয়। গতকাল উনাকে হাসপাতালে রেখে রুমে আসলাম। ভাবলাম আজ শুক্রবার.. আজকে আর যাব না। আমার রোগীর কাছে কোনো মোবাইল নাম্বার নেই। তাই ফাইলে আমার নাম্বার টা লিখে এসেছি.. যাতে প্রয়োজনে যোগাযোগ করতে পারে। ঘুমাইছি রাত ২.৩০-এ। হঠাৎ মোবাইলে কল। রিসিভ করে জানতে পারলাম আমার রোগী ২.০০টার সময় বের হয়ে গেছে ওয়ার্ড থেকে। এখনো ফিরে আসেনি। পাশের বেডের একজন আমাকে কল দিছে। আমি মোবাইলে টাইম দেখলাম.. ৪.৩০ বাজে। এখনও ফজরের আযান পড়েনি। আমি হাসপাতালে ছুটে গেলাম। অনেক খুঁজাখুঁজির পর উনাকে পেলাম। বসে আছি। ওয়ার্ড বয় গুলার চোখে তখনও ঘুমের রেশ। নার্স একজন ঢুলুঢুলু চোখে মাত্রই কাজ শুরে করেছেন। লম্বামত এক ভদ্রলোক ওয়ার্ডে ঢুকলো। তার পিছনে আরেক জন। কিছু সময় এদিক ওদিক তাকাইলো। তারপর ই একজন রোগীর কাছে যায়... ফাইল খুলে .. আরেকজন চটপট ছবি তুলে ক্যামেরায়।


আমি প্রথম ভাবলাম হয়ত কোনো সাংবাদিক। পরে দেখি একই কাজ কয়েক জনের ফাইলে ও করতাছে। আমি ভাল করে তাকিয়ে দেখলাম তারা শুধু ব্যাবস্থাপত্রের ছবি তুলছে। আমার সন্দেহ হলো। আমার কমদামি মোবাইল দিয়ে এই অল্প আলোতেই একটা ছবি তুল্লাম। উনারা আমার ইউনিটেও আসলো.. এসেই ঝটপট কয়েকটা ছবি তুল্ল। আমি একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি দেখে.. হয়ত বিব্রত হল। তারাতারি অন্যদিকে চলে গেলো। আমিও পেছন পেছন গেলাম। দেখি এক রোগিকে খুব ভাব ধরে বলছে.. "এই তোমাদের ফাইল দেখা হয়েছে"। রোগী হয়ত ভেবেছে ডাক্তার। খুব আগ্রহ সহকারে ফাইল এনে দেখালো। আমি একটু এগিয়ে গিয়ে বল্লাম.. " ভাই আপনারা কী করেন?" বেটে মতো লোকটা একটু কাছুমাছু করে বল্লেন" আমরা ওষুধ কোম্পানির লোক ভাই।" পাশের লোকটা আমার সাথে হেন্ডশেক করলো। তারা কোন কোম্পানিতে কাজ করে আমি জিজ্ঞেস করলাম। বেঁটেমতো লোকটা বল্লো ইনসেপ্টাতে। আমি বল্লাম আপনারা যে কাজ করছেন এটাতো ঠিক না। উনি বল্লেন ভাই কোম্পানি আমাকে ঢাকা থেকে পাঠিয়েছে। ছেলেপেলেরা ঠিক মতো কাজ করছে কি না দেখতে এলাম। আমাকে জিজ্ঞেস করলেন আমি কি করি। উনি আমার হাত ধরেই আছেন। যেনো খুব বিব্রত। অন্যজন একটু দূরে দাড়ানো। আমি বল্লাম আমি স্টুডেন্ট। তখন যেনো উনি হাফ ছেড়ে বাঁচলেন। আমি উনার নাম জিজ্ঞেস করলাম। উনি বল্লেন উনার নাম শফিক। সাথে সাথে আইডি কার্ড বের করলেন। আমি বল্লাম "আইডি কার্ডের একটা ছবি তুলি?" উনি মন্ত্রমুগ্ধের মতো কার্ড বাড়িয়ে দিলেন। উনি বল্লেন.." হ্যাঁ হ্যাঁ তুলেন। আমার ক্যামেরা দিয়েও তুলতে পারেন (!!)।"" ছবি তুল্লাম।


আমার রোগী একটা কারণে আমাকে ডাকলো। আমি চলে আসলাম। একটু পড়ে বের হয়ে তাদের কে আর খুঁজে পেলাম না। তারা ভোরের আলো ফুটার সাথে সাথেই চলে গেলো।

আর আমি ভাবলাম.. কোম্পানি বাজার ধরার অসুস্থ প্রতিযোগিতায় কর্মিদের চুরি করতেও পাঠালো!! তথ্য চুরি!!
যে ইন্টার্নি ডাক্তারগন এখানে ব্যবস্থাপত্র দেন... কোম্পানি হয়ত তাদের পূর্ণডাক্তার হওয়ার আগেই বিশাল উপহার পাঠাবে। একজন ডাক্তারকে অসৎ ইনকামের পথ চিনাবে। হয়ত এক সময় বাধ্য করবে অসৎ হতে।

হায় মুনাফা!!
হায় বাংলাদেশ!!
১৪টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আপনি শেষ কবে একটি বই পড়েছেন ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:২২


আজ ২৩ এপ্রিল, বিশ্ব বই দিবস। অনেকেই একে বলেন ‘বিশ্ব গ্রন্থ ও গ্রন্থস্বত্ব দিবস’। ইউনেসকোর উদ্যোগে ১৯৯৫ সাল থেকে দিনটি পালিত হয়ে আসছে বই, লেখক এবং কপিরাইট রক্ষার বার্তা নিয়ে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রেমিট্যান্সযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ৮:১৫

টাকা পাচারকারীদের ধরা খুব মুশকিল বলে উল্লেখ করে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কমিশনার মিঞা মুহাম্মদ আলি আকবার আজিজী বলেছেন, টাকা পাচারকারীদের যদি কোনোভাবে ধরতে পারেন, তাহলে ছাড় দেবেন না। আজ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মহাকাশের দূত ও সৌর শক্তির ভবিষ্যৎ প্রযুক্তি

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ৮:২০


মহাকাশের দূত ও সৌর শক্তির ভবিষ্যৎ প্রযুক্তি
সত্যজিৎ রায়ের কালজয়ী সৃষ্টি প্রফেসর শঙ্কু — তাঁর নাম শুনলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে বিজ্ঞানের আশ্চর্য সব আবিষ্কার, একেকটি কল্পনার জগৎ, আর রহস্যে ঘেরা... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিশুদের গুড টাচ ব্যাড টাচ শেখানো আপনার দায়িত্ব

লিখেছেন অপলক , ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ১১:৩৪

বর্তমানে বাংলাদেশে একক পরিবার বেশি। আগের যুগে যৌথ পরিবারে শিশুরা বয়োজৈষ্ঠ্যদের কাছে অনেক কিছু শিখত, নিরাপত্তা পেত। এখন সে সুযোগ অনেকটাই কম। কিন্তু পরিস্থিতি এমন হয়েছে যে, ৫ বছরের শিশুও... ...বাকিটুকু পড়ুন

সুন্নী না হয়ে জান্নাতি হওয়ার কোন সুযোগ নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৫ ভোর ৬:৫৯



সূরাঃ ১৭ বনি ইসরাঈল, ৭৭ নং আয়াতের অনুবাদ-
৭৭। আমার রাসূলদের মধ্যে তোমার পূর্বে আমি যাদেরকে পাঠিয়ে ছিলাম তাদের ক্ষেত্রেও সুন্নাত (নিয়ম) এরূপ ছিল। আর তুমি আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×