চাকরি সন্ধানে সহায়তা করার মতো সরকারি প্রতিষ্ঠান নেই বলেই চাকরির বাজারে প্রতারণা বেশি৷ নিয়োগের বিজ্ঞাপন ভুয়া, কোম্পানি ভুয়া, চাকরি প্রত্যাশী আবেদনকারীদের বিশ্বাস অর্জনের জন্য লিখিত পরীক্ষা ও মেডিক্যাল চেকআপ সম্পন্ন করা, ঘুষ আদান প্রদান, ভুয়া নিয়োগপত্র নিয়ে বিড়ম্বনা অহরহ ঘটছে৷
পোশাক খাতের ৩২ শতাংশ কারখানায় শ্রমিক-কর্মচারীদের নিয়োগ ও পরিচয়পত্র দেয়া হয় না। খুলনায় হিমায়িত চিংড়ি রপ্তানি শিল্পের ৯৭ শতাংশ শ্রমিককে নিয়োগপত্র দেয়া হয় না। ২৩ শতাংশ কারখানা নারী শ্রমিকদের মাতৃত্বকালীন ছুটি দেয় না। চাকরি স্থায়ীকরণে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ দীর্ঘদিনের। চাকরি অস্থায়ী রেখে ফায়দা লুটে মালিক আর বঞ্চিত হয় চাকরিরতরা। দীর্ঘদিন ধরে অস্থায়ী ভিত্তিতে কাজ করে তাদেরকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে স্থায়ী নিয়োগ দেয়ার নিয়মও মানা হয় না।
চাকরির আগে- টাকা-পয়সা কেমন দেবে? এই প্রশ্নের জবাবটাই সহজে মিলে না। আর পরে কেমন আয় কর? এ প্রশ্নেও নিরব থাকতে হয় অথবা সরব হলে বলতে হয় অনেক কথা; বলা যায় না বেতনের অঙ্কটা। বেতন এতটাই কম যে, উচ্চারণ পর্যন্ত করতে পারেন না। অবস্থাটা এমন ব্যবসা ভালো চললে সব কৃতিত্ব পলিসি মেকারদের আর ফ্লপ করলে ব্যর্থতার সব দায়ভার অধীনস্তদের।
যেসব বড় কর্তাদের অবস্থান এবং কর্মকান্ডের কারণে কর্মস্থলে সহকর্মীদের মুখ থেকে হাসি চলে যায় তারা অধম। বিস্ময়কর রকম দ্রুততায় মালিকের কাছের লোকে পরিণত হওয়ার যোগ্যতা তৈল দিতে সক্ষম চাটুকারদেরই একটু বেশি থাকে। যোগ্যতা ও দক্ষতার গুণেও কিছু হয় সেটা ব্যতিক্রমই বলা চলে। শুধু আঞ্চলিক পরিচয়ের সুবাধে আনাড়ি কারো বড় দায়িত্ব পাবার উপযুক্ত হয়ে যাওয়ার দৃষ্টান্ত মিলে অনেক অফিসেই।
বিস্ময়করভাবে নবাগতরা অনেক অফিসে অসহায় হয়ে পড়ে। অফিসগুলোতেও দুটো ভাগ। একদল নেওয়ার পক্ষে, আরেক দল বিপক্ষে। এই পক্ষ-বিপক্ষের কারণ নতুনের সম্পর্কে ভালো-মন্দ মূল্যায়ন নয়। পক্ষ-বিপক্ষের বিভক্তি সম্পূর্ণ রাজনৈতিক। একদল আওয়ামীপন্থী, আরেক দল আওয়ামীবিরোধী। কে কার মাধ্যমে এসেছে সেটাই যেন মূখ্য, অথচ মাধ্যমের মতাদর্শ থেকেও যে ভিন্ন হতে পারে যিনি এসেছেন তা মতাদর্শ; এই ভাবনা যেন অনুপস্থিত।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:০৫