ব্লগে সুশীল দেখলে একসময় গায়ের চামড়া জ্বলতো। কিন্তু এখন সময় পাল্টাইসে। সুশীল না হইয়া উপায় নাই। আমার "যামুনা" , "খামুনা" ভাষার পোস্টের জন্য যথেষ্ট লজ্জা পাইলাম। অনেকের মতো গুম না হইতে চাইলে এখন আমারে ও সুশীল "রেসিডেন্ট" হইতে হইবো। ভাবলাম একটা সাহিত্য দিমু , সুশীল ল্যাঙ্গুয়েজ ইউজ কইরা। আপনেরা দেখেন তো সব ঠিক হইলো নাকি !! বানান-টানান ভুল হইলে আওয়াজ দিয়েন কিন্তুক ...
পাগলা ঘেশু ( পাগলা দাশু না কিন্তুক )
একদা এককালে প্রত্যন্ত বঙ্গে সামুপুর নামক একটি এলাকা ছিলো। প্রত্যন্ত অন্ঞলে যা হয় , উহাতে একজন না একজন পাগল থাকে। পাগলের কাজ কিছু না , বাজারের লোকদের সহিত হাস্য তামাসা করা , দিগম্বর হইয়া রাস্তায় রাস্তায় ঘোরা , আর নতুন কেউ আসিলে তাহাদিগের মনোরন্জন করা। এলাকায় নতুন বিবাহ লাগিলে মেহমান আসিয়া প্রথমে ওই অন্ঞলের পাগলকে দেখিতে চায়। তখন অতিথিগনকে পাগল না দেখাইতে পারিলে অন্ঞলের মানসম্মান থাকে না। তাই সব অন্ঞলেই একজন না একজন পাগল থাকা বান্ঞনীয়। সামুপুর ও তাহার বিচিত্র ছিলো নহে। পাগলের নাম ঘেশু। মানুষ তাহাকে আদর করিয়া "গু ঘেশু" বলিয়া ডাকে। এই পাগল ছিলো ভদ্র পাগল। সারা বছর ঠান্ডাই থাকিত , শুধু মাঝেমাঝে পাগলামি বাড়িয়া গেলে দিগম্বর হইয়া হাতে গু নিয়া দৌড়াদৌড়ি করিত আরকি।
অন্য কেউ হইলে এতোদিনে পাগলা ঘেশুকে পিটাইয়া তক্তা বানাইয়া ফেলা হইতো , কিন্তু ঘেশুর পিতা এই এলাকার বিশিষ্ট জমিদার ব্যাক্তি , সদর রাস্তাটা তাহারই বানানো , তথাপি তাহার পাগল পুত্রকে কিছুই বলা যাইতেছে না। ঘেশুর পিতার ৪ বিবি আর অসংখ্য রক্ষিতার লিগাল-ইল্লিগাল পুত্র-কন্যার পরিসংখ্যান ভদ্রলোক নিজেও দিতে পারিবেনা , উহারা সব সুস্থ-অর্ধসুস্থ মস্তিষ্কের হইবার কারনে দেশ-বিদেশে পাড়ি দিয়াছে । বেচারা ঘেশু , পাগল হইবার কারনে ভিসা পাইতেছে না। তাই তাহাকে ন্যাংটা হইয়া গু হাতে নিয়া সামুপুরের রাস্তায় রাস্তায় ঘুরিতে হইতেছে।
ঘেশুর পিতার পয়সার কল্যানে বাড়িতে চাকর-চাকরানীর অভাব ছিলো না। কথায় বলে "বাঁশের চেয়ে কন্ঞি বড়" , ঘেশুর বান্দিরা যে দাপট নিয়া চলিত , ঘেশুর আপন ভগ্নিরা ও কোনোদিন ওই দাপট দেখায় নাই। আর চাকরগুলি চলিত রাজার হালে , যেন তাহারা ঘেশুর ভাই ( কিংবা ছিল ও কিনা কে জানে !! )। ঘেশু যখন গু হাতে নিয়া দৌড়াইতো তখন তাহার চাকররা ও পেছন পেছন ছুটিতো। একবার এক চাকরকে প্রশ্ন করা হইলো "তোর মালিক যে হাতে গু নিয়া জায়গায় জায়গায় ন্যাংটো হয়ে ঘুড়ে বেড়ায় , তোরা সাপোর্ট দিস কিভাবে ?" , শুনিয়া চাকর চোখ উল্টাইয়া কয় , "তো , তাতে কি। আমাদের ঠাকুর প্রকৃতিবাদী , প্রকৃতির দেয়া আবরণ ছাড়া বাকি সব বাহুল্য , তাই উনি তাহা পরিত্যাগ করিয়া চলেন। তাছাড়া গু ও তো প্রকৃতিরই অংশ। প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিয়া তা হাতে নিয়া ঘোরাটাই কি শোভন নহে । বিশিষ্ট শিক্ষিত মানুষের ব্যাপার , তোমরা বাপু বুঝিবে না। " তাহারই এক বান্দীকে জিজ্ঞাসা করা হইলো "তোর ঠাকুর যে সব কিছু দেখাইয়া দেখাইয়া হাটে , তুই পেছন পেছন ছুটিস কিভাবে , মেয়েমানুষ , লজ্জা লাগে না ?" শুনিয়া বান্দী সুধায় , "উহার জিনিস , উহা দেখায় , আমার কি ? আমি দৌড়ানের জন্য মাইনে পাই , দেখিবার জন্য নয়।"
ইদানিং ঘেশুর উৎপাত বড্ড বাড়িয়া গিয়াছে। উহার নিজের মানসম্মান জ্ঞান কম বলিয়া ব্যাপার নহে , মানী লোকের মান নিয়া টান দিতেছে বলিয়া সামুপুরে এখন সঙ্কট চলিতেছে। ইতোমধ্যে অনেক ভদ্রলোকের পরিবার মানসম্মান লইয়া পালাইয়া গিয়াছে। যাহারা মায়া কাটাইয়া যাইতে পারে নাই তাহারা ও খুব কষ্ট করিয়া টিকিয়া আছে। ভালবাসার সামুপুর , ছাড়িতে মন চায় না। তাছাড়া ভদ্রলোক যে কয়টা আছে তাহারা ও যদি একে একে অন্ঞল ছাড়িয়া চলিয়া যায় তো আশেপাশের এলাকার লোকজন সামুপুরকে "ঘেশুপুর" ডাকা শুরু করিবে কারন তখন এইখানে গু ঘেশু ছাড়া আর কেহই থাকিবে না।
ইহাদের প্রতিবাদ করিয়া ও লাভ হয়না। এলাকায় সুশীল ব্রাক্ষনসমাজ বাস করিতেছে। পূজা-অর্চনা করিয়া দিনযাপন করিবার কথা। তা না করিয়া তাহারা ঘেশুর বাপের অর্চনা করিতেছে। একহাড়ি রসগোল্লা আর একটা কাঁশার থালা পাইলেই তাহারা খুশি। এইদিকে নমশূদ্ররা গু এর গন্ধে মারা পড়ুক আর অন্ঞল ছাড়িয়া ভাগিয়া যাক , তাহাদের কি !! তাহারা অভিজাত "রেসিডেন্ট" মানুষ। বরং সামুপুর মানুষ ছাড়িয়া গেলেই ইহাদের লাভ। শুধু মুখ ফুটিয়া বলিতে পারিতেছে না "চলিয়া যাও"।
নমশুদ্ররা মারাত্মক সঙ্কটে পড়িয়াছে। এই মুহুর্তে তাহাদের উচিৎ নিজেদের মতো আলাদা জায়গা বানাইয়া নেয়া। যতদিন তার স্বামর্থ না হয় মাটি কামড় দিয়া পড়িয়া থাকা। অহেতুক অভিমান করিয়া কি হয় তা সাত বছরের ছোট্ট ন্যাড়া বুঝিতে পারিতেছে না। আগে সে ঘুড়ি-নাটাই লইয়া পাঁচিলের উপর বসিয়া থাকিত। বড়দা দের গ্রুপ কাজ হইতে ফিরিয়া আসিলে একসাথে ঘুড়ি উড়াইত। স্কুলের পরীক্ষা চলার সময়ও ন্যাড়া মনের সুখে ঘুড়ি উড়াইয়াছে , ঘুড়ি ফাসাইয়া ফেলিলে বড্ডারা আসিয়া ছাড়াইয়া দিয়া গিয়াছে মনে করলে ন্যাড়ার জ্বিভে জল চলিয়া আসে। দিদিরা কলশী কাঁখে লইয়া পুকুরে আসিত। ছড়া করিত , গান গাইত। কি সুন্দর গান !! এখন তারা পুকুরে ও আসে না। বান্দীকূল ঘেশুর কাপড় ধুইতে ধুইতে পুকুরপাড় নোংরা করিয়া দিয়াছে। মানুষ তো মানুষ , কাক ও কাছে ভিড়িতে পারেনা এমন দুর্গন্ধ। বড্ডারা গেল মাসে সামুপুর ছাড়িয়া চলিয়া গিয়াছে। বড্ডা বাল্যকালে বুদ্ধিমানই ছিলো , কিন্তু বয়স হইবার সাথে সাথে বুদ্ধি বাড়াবাড়ি রকমের কমিয়া গিয়াছে। বেশী বাড়াবাড়ি হইলে একটা কড়ই ডাল ভাঙিয়া ঘেশুর পশ্চাৎদেশে ঢুকাইয়া দেওয়াই কর্তব্য কিন্তু তাহা না করিয়া মানসম্মানের খাতিরে পলায়ন করিবে কেন ? ন্যাড়া মাথা চুলকায় আর ভাবে , বড় মানুষগুলি এতো বোকা হয় কেন ?
পাঁচিলের উপর ন্যাড়া বসা। হাতে ঘুড়ি-নাটাই। সামনে ঘেশু , নিজের বিষ্ঠা নাকের কাছে লইয়া গন্ধ শুকিতেছে। ন্যাড়ার ইচ্ছা হয় নাটাইটা ঘেশুর পশ্চাৎদেশে ঢুকাইয়া দেয় , যা হইবার হইবে। তাকে-তাকে আছে , একটু সুবিধা করিতে পারিলেই হয়।
===============================
"সামুপুরে" থাকতে হইলে "গু ঘেশু" রে সহ্য করাই লাগবে। এইটার বিকল্প নাই । পাঁচিলের উপর বসে থাকা ন্যাড়া ছেলেটা একবার নতুন একটা জায়গা বানানোর কথা বলছিলো। মানুষ তারে যদিও কটাক্ষ করলো , সে কিস্তু হাল ছাড়ে নাই। স্বল্প স্বামর্থ , গুটিগুটি হাত-পা নিয়া যতদূর সম্ভব নিজের তাগিদে চেষ্টা করতেসে। হয়তো কোনো একদিন একটা জায়গা বানাইয়া ও ফেলবে। কিন্তু লোকজন না থাকলে লোকালয় আর কবরস্থানের মধ্যে কোনো পার্থক্য থাকে না। তাই সে সামুপুরের লোকদের কাছে বিনীতভাবে অনুরোধ করতেসে যে কোনো অবস্থাতেই তারা যেন কোনো এক্সট্রিম ডিসিশন না নেয়। দিন পাল্টাবে , সামুপুরে না হোক অন্য কোথাও। তারা যেন অভিমান নিয়া জায়গাটা ছেড়ে না যায়। যে কয়দিন ঘেশুর গু ছোড়াছুড়ি থাকে সেই কয়দিন পরে তারা যেন আবার সরব হয়ে ওঠে। এই কথা গুলান আখসানুল ভাই , তামিম ইরফান ভাই , শওকত হোসেন মাসুম ভাই সহ আরও অনেকের জন্য যাদের একটা লেখার জন্য পাঁচিলের উপর বসে থাকা ছেলেটা অপেক্ষা করে।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৯ সকাল ১০:০০