ভাইয়া , আমারতো পড়তে একদমই ভালো লাগেনা,
এসব হাবিজাবি পড়তে খুব বিরক্ত লাগে, খুব বোরিং প্রিপারেশন নেয়াটা ,
একদমই পড়া হয়নি ইউনিভার্সিটির জন্য,
এই 20 দিন কিভাবে পড়বো ?
আমার তো হবেনা, পরীক্ষা দিতে যেতেই ইচ্ছে হচ্ছেনা । দিয়ে কি লাভ ? হতাশ লাগছে খুব অন্যদের দেখে, এত পরিশ্রম করতে পারবোনা ইত্যাদি......... এমন কথাগুলোর উত্তর অনেক নিষ্ঠুরভাবেও দেয়া যায় আবার সহজভাবেও দেয়া যায় । যেকোনো স্বপ্ন দেখা অনেক সহজ কিন্তু স্বপ্নকে বাস্তবে পরিণত করাটা একটু কঠিনই বৈকি । আমার কাছে সবচেয়ে সহজ কাজ মনে হয় পরামর্শ দেয়া আর পরামর্শ নেয়া । শুধু সারাদিন হা করে পরামর্শ গিলে গেলাম আর তারপর ঘুমানোর আগেও চিন্তা করলাম স্বপ্নেও যেন কারো ভালো পরামর্শ শুনি আর পরামর্শ অনুযায়ী কাজের কোন খবর নেই এমন যেন না হয় । এই পৃথিবীতে একজনের সাথে আরেকজন মানুষের পার্থক্য হয় তার কর্মের মাধ্যমে । আর যেকোনো কাজের প্রতি কারও passion আর dedication থাকবে তখনই যখন তার প্রয়োজনীয়তা ও ঠ্যাকা থাকবে । যেমন - যে কখনো অভাব দেখেনি, কষ্ট দেখেনি সে কিভাবে এসবের মর্মার্থ বুঝবে । যেসব বাবা-মা তার সন্তানকে দুঃখ, কষ্ট, অভাব বোঝার সুযোগই দেয়না পরবর্তীতে তাদের পক্ষে নিজের সন্তানকে সত্যিকারের মানুষ হিসেবে গড়ে তোলা একটু কঠিনই হয় । যে ছেলে বা মেয়ের কোন কিছু করার কোন প্রয়োজন নেই সাধারণত সে কাজকে উপেক্ষা করতে চাইবে । বড় হবার তাগিদই মানুষকে বড় করে তোলে, নিজের পারিবারিক অবস্থা ও অবস্থানের কথা চিন্তা করে নিজেরই সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত যে জীবনে কি করলে তার জন্য ভালো হবে । আমার মতে কোন পেশাই খারাপ না, যে যেভাবে কোনো পেশায় উন্নতি করতে পারলে তার জন্য সেটাই বেস্ট পাওয়া । একজন মানুষের বেস্ট অভিভাবক সে নিজেই, যদি সে নিজেকে আর নিজের প্রয়োজনটাকে বুঝতে পারে । যার নিজের ভালো কিছু করার তাগিদ থাকবে, passion থাকবে সে যেকোনো মূল্যে তা অর্জনের চেষ্টা করবে, আর যার তাগিদ নেই সে কেন করবে ? পরিবারে বাবা-মা সন্তানদের ছায়া হয়ে থাকেন, কিন্তু কিছুটা বাস্তবতা তখনই অনুধাবন হয় যখন তারা থাকেন না, বিশেষ করে পরিবারের মূল উপার্জনক্ষম মানুষটি । জীবনে কতজনকে দেখলাম, আগে পড়াশোনা ভালো লাগতো না, কাজ করতে ভালো লাগতো না, আর এখন বাস্তবতার ছোঁয়ায় সবই ভালো লাগে, এখন প্রখর রোদে দৌড়াতে ভালো লাগে, ঝড়বৃষ্টিতে ছাতা ছাড়া দৌড়াতে ভালো লাগে, সকাল থেকে রাত অবধি একনাগাড়ে খাটতে ভালো লাগে আরও কত কত জানা অজানা অবাক করা ভালো লাগা । ইশশ, আগে যদি এটা করতাম, যদি ওটা করতাম , যদি সেটা হতো , ইশশ আর যদি এই দুর্ধর্ষ শব্দদ্বয় জীবনে যত কম ব্যবহার করতে পারবেন ততো ভালো । পড়তে ভালো লাগেনা, কাজ করতে ভালো লাগেনা ? ভাইরে আপনাকে দেখে খুব হিংসা হচ্ছে ? কেন একথা বললেন ? আপনার নিশ্চয়ই সবকিছু আছে, টাকাপয়সার অভাব নেই, ক্যারিয়ার নিয়ে চিন্তা নেই, বাবার অঢেল সম্পত্তি আছে ইত্যাদি । না ঠিক তা নয় । তাহলে নিশ্চয়ই বাবা-মা দুজনই উপার্জনক্ষম ? না সেটাও নয় নিশ্চয়ই পৈতৃক বড় ব্যবসা আছে ? না না, সেটা নেই । আপনার এসব কিছু নেই তবে বসে আছেন কেন, জীবনে মোটামুটি ভালোভাবে বাঁচার জন্য রাস্তা তো ২ টিই দেখি ( মতান্তরে ৩ টি ), হয় চাকুরী অথবা ব্যবসা । যেকোনো একদিকে তো মনোযোগ দিতে হবে , মানে এই ২ টির যেকোনো একদিকে সফল হবার জন্য আপনার তো ঝাঁপিয়ে পড়া উচিত । ৩ নাম্বার রাস্তাতে নাহয় নাইবা হাঁটলেন ( ৩ নাম্বার রাস্তা হচ্ছে নিজের পূর্বপুরুষ কে স্যালুট আর কুর্নিশ করে মুচকি একটা ভিলেইনি হাসি দিয়ে তাদের রেখে যাওয়া সম্পত্তি ভক্ষন শুরু ) । আপনার আশেপাশে অনেকেই তাদের MAXIMUM দিয়ে চেষ্টা করে যাচ্ছে, তাদের সাথে পেড়ে উঠতে চাইলে বসে থেকে কিভাবে সম্ভব ? আর আপনাকে দেখে তো উন্মাদ বা পাগল বলে মনে হচ্ছেনা, আজকাল পাগলও নাকি নিজেরটা ভালোই বোঝে, আপনি তো আর পাগলের থেকেও নিম্নে নেই ? বসে বসে সময় নষ্ট করছেন কেন ? নিজেকে ভালোভাবে বুঝতে হবে, নিজের capacity, limitation , family and surroundings এর কথা চিন্তা করে যেটা আপনার জন্য করলে বেস্ট হয় সেটা অর্জনের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে । কত মানুষ না খেয়ে পরিশ্রম করে জীবনে বড় পজিশনে যাচ্ছে আর আপনি খেয়েদেয়ে দিব্বি আরামসে ঘুরে বেড়াচ্ছেন আর কে কি করছে, কার মুরগী কয়টা ডিম পেড়েছে, কার ছাগল কয়টা কাঁঠালপাতা খেয়েছে, কোন বাড়ির পেছনের বাঁশঝাড়ে শেয়াল থাকে, কার গাড়ির আর মোবাইলের ব্র্যান্ড কোনটা এসব নিয়ে গবেষণা করে বেড়াচ্ছেন । জীবনে হতে চেয়েছিলাম অনেক স্মার্ট, এখন ফেরিওয়ালা সদরঘাট এমন যেন না হয় । প্রতিটি মানুষের যে যেখানেই থাকুক না কেন সেখান থেকেই জীবনে অনেক বড় কিছু করার সুযোগ রয়েছে, দরকার শুধু ইচ্ছার । আপনি কিছু করতে চান , নাকি আপনি চান না ? এই চাওয়া না চাওয়াটা নির্ভর করে নিজের ওপর , Once u decide strongly , the work is half done. খুব বিচক্ষণ যারা তারা সময়ের কাজ যথাসময়েই শেষ করে, জীবনে যে সময়ে যেটা করনীয় সেটা করতে পারলে ভালো কিছু অর্জন করার রাস্তাটা অনেকটা সহজ হয়ে যায় । যেকোনো কিছু উদ্দেশ্য করে পরিশ্রম করা শুরু করলে খুব ভালমতো করা উচিত , নাহলে শ্রম দেয়ারই কোন দরকার নেই । ওইসব আধা আধা শ্রম দিয়ে খুব ভালো একটা output আসেনা । ঠিক তেমনি যেকোনো পরীক্ষাকে উদ্দেশ্য করে স্টাডি শুরু করলে অনেক আগে থেকেই স্টাডি শুরু করা উচিত যেন পরীক্ষা আসার অনেক আগেই মোটামুটি একটা প্রস্তুতি হয়ে যায় । বড় কিছু হবার অসীম আকাঙ্ক্ষাই মানুষকে বড় করে তোলে, সাথে চেষ্টাটা একান্ত আবশ্যক । বাসায় এবং আশেপাশের মানুষজনের কাছে নিজের কোন পরিচয়টিতে নিজে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবেন নিজেই সিদ্ধান্ত নিবেন -- লোকে বলবে অমুকের ছেলে/মেয়ে নাকি অমুকের বাবা-মা ? কোনটি বেশি আনন্দের ? দ্বিতীয়টিতে আপনি ভালো কিছু করলে সবচেয়ে বেশি খুশি হবেন এই পৃথিবীতে আপনার বাবা আর মা । এছাড়া আপনি তো পার্টে থাকবেনই । যে সঠিকভাবে শ্রম দিবে তার সাথে শ্রম না দিয়ে পারাটা বেশ কঠিনই তাইনা । চেষ্টা চালিয়ে যান, সফলতা কোন না কোনোভাবে আসবেই, কখনো হাল ছাড়া যাবেনা, হতাশ হওয়া যাবেনা ।