শৈশব হচ্ছে রঙবেরঙের ফুল, ফুলের বাগান,
প্রজাপতি দিন, গল্পময় রাত- জেগে থাকলে মায়ের মুখে হরেক রকম গল্প শোনা, আর ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে সেই স্বপ্নের দেশে ঘুরে বেড়ানো, রামধনু সকাল, আর ...খাটটাকে মাঠ বানিয়ে, সারা বাড়িটাকে পৃথিবী ভেবে, দিনময় যেমন ইচ্ছা নতুন খেলা বানিয়ে ক্লান্তিহীন খেলে যাওয়া।
যদি হাতটা বাড়াই আকাশটাকে ছুঁয়ে ফেলি আর আগুন কে খেলনা ভেবে ধরে ফেলি।
শৈশব একটা অমীমাংসিত উত্তরহীন হাজার প্রশ্নের মহাকাব্য, মিথ্যা উত্তরটাকে সত্য জেনে নিজের মনে উত্তর খুঁজে পাওয়ার সীমাহীন প্রশান্তি।
শৈশব আমার ডানা-হীন ডানায় ভর করে মেঘ রাজ্যে মেঘ কন্যার সাথে পুতুল খেলা, অথবা প্রজাহীন রাজ্যে নিজে রাজা সেজে রাজকীয় চলন-বলন, তারপর হঠাৎ মায়ের গুরু-গম্ভীর কণ্ঠ-বাবা পড়তে বসো, বড় হয়ে ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার হতে হবে না?...... আমার আর পুতুল খেলা হয়না, রাজা সাজাও হয়না, সবাই না হয় না জানুক কিন্তু আমার মা ও কি বোজে না ওসব আমি হতে চাইনি........................
আমি হতে চেয়েছিলাম লাঠিয়াল, গ্রামময় ঘুরে ঘুরে যে লাঠি খেলা দেখাবে, হতে চেয়েছিলাম বেদুইন বালক যে তেজী ঘোড়া ছুটিয়ে দিগন্ত কাঁপিয়ে পারি দেবে তেপান্তরের মাঠ, হতে চেয়েছিলাম ছোট্ট ডিজ্ঞি নোকার মাঝি যে উত্তাল ঊর্মি ঠেলে, তটিনীর নূপুরের ছন্দে কাটিয়ে দেবে সারাবেলা, অথবা হতে চেয়েছিলাম রাখাল বালক, যে সবুজ সাগরে মায়াবী হাওয়ায় সুবোধ গরু নিয়ে চষে বেরাবে সবুজ দিগন্ত আর হাতে থাকবে বাঁকা বাঁশের বাঁশী, ভ্রমর ধার নেবে সেই বাঁশীর সুর............
তারপর...... স্বপ্নের খাট কুড়ে কুড়ে খায় ব্যস্ততার ঘুণপোকা, সীমাহীন স্বপ্ন শালিক বন্দি হয় বাস্তবতার নির্মম খাঁচায় ,স্বপ্ন বুনোহাঁস ডিম পারে ক্ষুধার্ত জমিনে, বাচ্চা ফোটার আগেই সেই ডিম খেয়ে ফেলে অভুক্ত বুনোহাঁস, বিদগ্ধ প্রজাপতি খুজে বেড়ায় রক্তমধু কর্পোরেট বাগানে.....................
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১২ বিকাল ৫:৪৭