*হুজুর এক খিলি পান মুখে পুরতে পুরতে জানাল, ‘ওই পোলাডার উপরে ইবলিশের ছায়া আছে। খালি ছবি আঁকে আর চুপচাপ বইয়া থাকে।’
*পরাণের মাঝে মাঝে রক্তে প্রবল ঢেউ ওঠে। ঢেউ নাকি বিষ? সবকিছু অসহ্য মনে হয় তার কাছে। বাংলা মদের বোতল আর তাকে দমিয়ে রাখতে পারে না। পরাণ তখন মাংসাশী হয়ে ওঠে। ঠিক তখনি মালতীর ডেরায় হানা দেয় সে।
*বুঝতে শেখার পর সে নিজেকে আবিষ্কার করেছে এতিমখানার চার দেয়ালের মাঝে। সেই শীতল আর রুক্ষ দিনগুলোতে সে ছিল একেবারেই নিঃসঙ্গ। খেলাধুলা করতে তার ভালো লাগত না। অন্যদের সাথে সে মিশতে পারত না। চুপচাপ একা একা বসে থাকত।
*আগে ফাগুন আসত প্রকৃতিতে তারপর তার দোলা লাগত মানুষের মনে। এখন প্রকৃতি শহুরে মানুষের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে দূরে পালিয়ে বেঁচেছে। তাই ফাগুন আসে মানুষের পোশাকে, কদাচিৎ মনেও হয়ত তার দোলা লাগে।
*নির্জন এই ষ্টেশনে মায়া-মমতার যে অকৃত্রিম প্রদর্শনী হয়ে গেল, তারচেয়ে মূল্যবান বস্তু পৃথিবীতে কি আর কিছু আছে? মূল্যবান এবং দুর্লভ! কতটা দুর্লভ তা নীলয়ের চেয়ে ভালো আর কে জানে?
*শৌনক যে তরীকে বিয়ে করতে চেয়েছিল, সেই তরী আর নেই। এই তরী বরফের মতো শীতল আর কুয়াশার মত অস্পষ্ট।
*কী মেয়েরে বাবা। দেখে তো ভাল মানুষ মনে হয়। কিন্তু পেটের মধ্যে এক্কেবারে জিলিপির প্যাঁচ ভরা! এ মেয়ে নিশ্চিত আগের জন্মে কোনো জিলিপি ওয়ালার বউ ছিল। এ জন্মে একে জিলিপির দোকানের বাবুর্চির কাজ দেওয়া উচিত। তাহলে ব্যবসা রমরমিয়ে চলবে।
*বাঁইচে থাকতি হলি দিনে তিনবার খাইতে হয়। আর সেই খাবার কিনতে টাকা লাগে। তুই দিস সেই টাকা? ঐ বাবুরাই আমাকে টাকা দেয়।’
*স্নেহা ম্যাডামের নির্দেশে পরাণ ডোমের হাত চলে নিখুঁত হিসেবে। ফাঁক হয়ে পেটের ভেতরটা, আলগা হয়ে যায় বুকের খাঁচা, দক্ষ নাবিকের মতো ডাক্তার স্নেহার চোখ চষে ফেরে শরীরের প্রতিটি কোণ। কোথায় লুকিয়ে আছে ভয়ংকর মৃত্যুর ইঙ্গিত। কোথায় সূত্র ফেলে গেছে সে?
পরাণ ডোমের পোস্টমর্টেম
জনরা- রহস্য-মনস্তাত্ত্বিক গল্প সংকলন
প্রকাশক- নহলী
প্রাপ্তিস্থান- নহলী স্টল, লিটল ম্যাগ চত্বর, বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ!
বি... দ্র... আজ সন্ধ্যা সাতটার সময় লিটল ম্যাগ চত্বরে বইটির মোড়ক উন্মোচন । সবার আমন্ত্রণ রইলো!
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সকাল ১১:৫৪