
একটা গরীবের পুলা ঢাকা শহরে আসছে পড়াশুনা করতে। আইসা এইখানের ভাবচক্কর দেইখা তার মাথা নষ্ট। লুকাল পুলাপাইন তারে ডাকে মফিজ, খেত, ভুদাই। মাইয়ারা তারে দেইখা হাসে। সে আড়ষ্ঠ থাকে। তার বাপের অনেক ট্যাকা নাই। পড়াশোনার খরচ কেমনে চালাইব সেই চিন্তায় তার মাথা নষ্ট। কোথায় অল্প পয়সায় থাকা-খাওয়া যাইবো সে জানে না। এই পোলাটা কিন্তু জামাত-শিবিরের পটেনশিয়াল ভিকটিম। তারা কখনও বড়লোকের উড়নচন্ডী পুলাপাইন টার্গেট করে না। তাগো লক্ষ্য সহজসরল পুলাপাইন যাগো ব্রেইনে সফলভাবে তাগো প্রোগ্রাম ইন্সটল করা যাইবো। এরপর এই পোলার কাছে দূত যাবে। তারে ভালো ভালো কথা বলা হবে। থাকার জন্য মেস দেওয়া হবে, একটা টিউশনিও যোগাড় কইরা দেওয়া হবে। যতদিন বেতন না পায় ততদিন প্রয়োজনে ধারকর্জও দেওয়া হবে। শর্ত একটাই, তারে নামাজ পড়তে হবে, ইসলামী বইপত্র পড়তে হবে, সেগুলা নিয়া আলোচনা সভায় (যেইটারে পাঠচক্রও বলে অনেকে) যাইতে হবে, কথা বলতে হবে।
খুবই গ্রহনযোগ্য একটা ডিল এইটা, অবহেলার কোনো কারণ ওই পুলার থাকতে পারে না। সে শুরুতে জানবে না তার সঙ্গে ছায়ার মতো লুকজন লাইগা থাকবে, তারে ডেইলি একটা ডায়েরিতে তার জীবনযাপন প্রসঙ্গে লিখতে হবে। এই সময়টাতেই তারে বইলা দেওয়া হবে কার সঙ্গে মিশতে হবে কার সঙ্গে মিশা যাবে না। এই পোলা গোলাম আযম, মওদুদীর বই পইড়া ইসলামের অনেক আলোকিত (!) দিক সম্পর্কে জানবে, ইসলামের অনেক সিপাহসালার সম্পর্কে জেনে তার বুকে ঈমানী জোশ বাড়বে, তারপর তার হাতে তুইলা দেওয়া হবে আল-কোরআন। তুমার জন্য অনেক করছি আমরা। এইবার আমাদের জন্য কিছু করো। তুমি মুসলমান, এইবার কোরআন ধইরা শপথ করো কখনও আমাগো ছাইড়া যাবা না।
এই পর্যায়ে আইসা তার মাথায় ঢোকানো হবে এই দেশে ইসলাম কায়েমের জন্য কি করে নাই তাগো নেতারা। আর তাগো নেতাগো ঠেকাইতে ভারতের দালাল আওয়ামী লীগ সবসময় কি করে। এই যে যুদ্ধাপরাধ হাবিজাবি এইসব আওয়ামী লীগের ইসলামের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ। তারা ধর্মনিরপেক্ষতার নামে ধর্মহীনতা কায়েম করতে চায়। এইসব ঠেকানোর জন্যই তারা জেহাদে নামছে। জেহাদে সব জায়েজ। খুন কইরা ম্যানহোলে ফেইলা দেওয়া পর্যন্ত।
সিস্টেমিটেকালি ওই পোলা আস্তে আস্তে জেহাদী হইয়া গেছে। সে বুঝে তার নেতারা একেকজন খলিফায়ে রাশেদিনের মতো উজ্জ্বল ব্যক্তিত্ব। তাগো নামে যা খারাপ প্রচার সেইটা আওয়ামী লীগের, আর যারা বলে তারা সব আওয়ামী লীগ। ওইসব বিশ্বাস করা মানে গুনাহ। ঈমান নষ্ট হয়। দেশপ্রেম ঈমানের অঙ্গ- এই নীতিটা সে বারবার ভাঙ্গে জামাতি ঈমান বজায় রাখতে।
ব্লগার ভাইয়েরা, এইযে রাতদিন আপনারা ছাগু বইলা যাগোরে পোন্দাইতেই আছেন তাগো প্যাটার্নটা কখ্নও বুঝার চেষ্টা করছেন? উপরের লগে বহুত মিলে। তারা যা লিখে যা বলে, কোনোটা তার নিজের কথা না। শেখানো কথা। কে শিখাইছে? জামাতে ইসলামীর নেতারা। আর তারা শুধু ইসলাম পালনের নামে এইগুলা মাইনা চলে। নাইলে তো বেইমানী হইয়া যাবে। কোরআনের মতো পবিত্র গ্রন্থ ছুইয়া তারা শপথ করছে, এখন আর পিছু ফেরার উপায় নাই। তাছাড়া যখন তারা ঢাকা শহরে আনাকানাচে উদভ্রান্তের মতো ঘুরতেছিলো তখন কে আইসা দাড়াইছিল পাশে? জামাতে ইসলামী, ইসলামী ছাত্র শিবির- ইসলামের সৈনিকরা।
গোলাম আযম, মতিউর রহমান নিজামী, মুজাহিদ, কামারুজ্জামানরা এই যে সিস্টেমেটিকালি এগোরে পয়দা করছে, কিজন্য করছে? আজকের এই সময়টার জন্য করছে। তারা ইসলামের নামে কাজ করতেছে এই কাহিনী বইলা কোটিকোটি টাকা তারা আনছে বিদেশ থিকা। আবার সেইটাকায় নিজেগো আখের গুছাইছে। এই আখের গুছানো মানে কিন্তু শুধু বৈষয়িক না। তারা নলা সাইজা থাকে মানে এই না যে তারা কোটিকোটিপতি না, তাগো সন্তানরা বিদেশে জজব্যারিস্টারি ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ারিঙ পড়ে না। নিজামীর এক পোলাতো পাকিস্তান মিলিটারিতে আছে। এই আখের গুছানোর মধ্যে কিন্তু এই বিনিয়োগটাও আছে। তাদের অনুগত কিছু ক্রিতদাস তৈরি। এরা বিনাপ্রশ্নে তাগো সব অর্ডার মানবো, খুন করতে বললে খুন করবো, মিথ্যা বলতে বললে মিথ্যা বললো, গীবত করতে বললে গীবত করবো। সবই ইসলামের নামে।
তাই এই যে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ঠেকাইতে আর এই সরকারকে জালিম হিসাবে দেখানোর জন্য এই যে পোলাগুলা জানপানি কইরা খাটতেছে, তাগো দিকটাও দেখতে হইবো। শত বুঝাইলেও তাগো চোখ খুলবো না। কারণ তারা তাগো ঈমান বন্ধক রাখছে জামাতে ইসলামীর কাছে। ডক্টর ফসটাস নামে একটা উপন্যাস ছিলো আমাগো অনার্সের পাঠক্রমে। সেই লোক শয়তানের কাছে আত্মা বিক্রি করছিলো। এই লোকগুলারও আত্মা বিক্রি হইয়া গেছে। একমাত্র খোদা ছাড়া কারো ক্ষমতা নাই তাগোর এই ভুল সংশোধন করার। আমরা বড়জোর তাগোরে প্রতিরোধ করতে পারবো। মজার ব্যাপার হইলো যুক্তিসঙ্গত আলোচনায় তারা কখনোই আসবে না। কয়দিন আগে শিবিরের যে বিদ্রোহটা হইছিলো, সেইটার পরিনাম সম্পর্কে অনেকেই জানে না। খুব ভয়ঙ্কর পরিনাম। খুব গোপনে। খুব নিখুত। যাহোক। আমরা আমাদের চেষ্টা তো করতেই পারি। আর কিছু না পারি খোদারে দুই হাত তুইলা ফরিয়াদ করতে পারি যে এই পোলাডির চক্ষু খুইলা দাও খোদা, তাগোরে সত্যিকার ঈমান দাও। শয়তানের না।