কথায় আছে না নানা মুনির নানা মত। অনেক দিন থেকে নির্বাচিত পাতা নিয়ে নিয়মিত, অনিয়মিত, পুরাতুন ও নতুন ব্লগারদের মধ্যে ক্যাচাল লেগেই আছে। নির্বাচিত পাতা নিয়ে সবসময়ই ক্যাচাল থাকবেই কেননা প্রতিটি ব্লগারের নিজস্ব একটা স্বকীয়তা আছে। সেই সংগে আছে স্বকীয়তাকে প্রতিষ্ঠা করার জোর চেষ্টা। যখনই তার অতি প্রিয় পোষ্টটি প্রথম পাতা থেকে নির্বাচিত পাতায় ঠাঁই পায়না তখনই তার মনের ভিতর থেকে একটি অব্যক্ত বেদনার উদগিরন ঘটে যার বহিঃপ্রকাশ হয় নানা মতে।
নির্বাচিত পাতায় এমন অনেক লেখা আসে যেগুলো মানের দিক থেকে একেবারেই ভালো না তার পরও অবলীলায় ঠাঁই পেয়ে যাচ্ছে অথচ অনেক ব্লগার আছেন যাদের লেখার মান সত্যিকার অর্থেই উচ্চ তথাপী নির্বাচিত পাতায় ঠাঁই হয়না যা প্রকৃত পক্ষেই অযাচিত। যদি উচ্চ মানের লেখাগুলি নির্বাচিত পাতায় আসতো তাহলে নির্বাচিত পাতার শ্রীবৃদ্ধি হতো। আমি সকল ব্লগারে প্রতি সম্মান রেখে পোষ্টগুলো উল্লেখ করছি না।
কোন কোন পোষ্ট নির্বাচিত পাতাকে সমৃদ্ধ পারে আর কোন কোন পোষ্ট নির্বচিত পাতাকে সমালোচিত করে সে বিষয়ে অবশ্যই নির্বাচকদের আরো সতর্ক হওয়া উচিত। এখানে বলে রাখা ভালো, যে নির্বাচক মন্ডলী কোন বেতন ভুক্ত কর্মচারী নন। যেহেতু নির্বাচক মন্ডলী বেতনভুক্ত কর্মচারী নয় তাই তারা বাধ্য নয় কিম্বা দায়বদ্ধ নয়। সেই জন্য অনেক নির্বাচক হয়ত মনে করছেন কি করলাম, কেন করলাম অথবা কাদের জন্য করলাম এগুলো নিয়ে দায়িত্ববানরা মাথা ঘামান না। কিন্তু সব সময়ই মনে রাখতে হবে দায়িত্ব একবার নিলে তা যথাযথ ভাবে পালন করতে হবে নচেৎ সেই গুরুভার সেচ্ছায় ত্যগ করাই উত্তম কারণ দায়িত্ব কিন্তু দায়িত্বই।
নির্বাচক মন্ডলী আপনাদের সব সময় মনে রাখতে হবে আপনারা দায়িত্ব পেয়েছেন বলেই কিন্তু আপনারা অধিক যোগ্য একথা ভাবার কোন অবকাশ নেই। এমন অনেক ব্লগার আছেন যারা অত্যধিক জ্ঞানী, যোগ্য এবং নিজস্ব স্বকীয়তায় আলোকিত। তাদেরকে কতৃপক্ষ নির্বাচন করেনি বলেই তারা নির্বাচক হননি। নির্বাচক নিয়োগের ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষ অর্থাৎ মিস জানা নিজেই একটি গাইড লাইন দিয়েছে। এখন মিস জানার কথায় আসি : 'ব্লগ নির্বাচক' নির্বাচনের বিষয়টি আমরা অত্যন্ত আন্তরিকতা ও যত্নের সাথে করার চেষ্টা করেছি যাতে কোনরকম ভুল বোঝাবুঝি বা সন্দেহের সুযোগ না থাকে। এক্ষেত্রে আমরা প্রাথমিকভাবে যে বিষয়গুলি মোটামুটিভাবে বিবেচনা করেছি তা হলো:
ক) ব্লগে নিয়মিত অংশগ্রহণকারী (অর্থাৎ ব্লগের গতি প্রকৃতি এবং নিয়ম.নীতির সংগে পরিচিত এবং অভ্যস্ত ব্লগার)
খ) অপপ্রচার, ব্যক্তিআক্রমণ এবং বিভ্রান্ত সৃস্টি, অসততা (সব অর্থেই) ইত্যাদি বিষয়গুলোর সাথে যে ব্লগারের সম্পৃক্ততা নেই।
গ) স্বদেশ, সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতা এবং যেকোন ধর্ম-বর্ণ গোত্র নিয়ে বিরোধ বা বিরুদ্ধাচরণ এবং অস্থিরতার সাথে যুক্ত নন/ছিলেননা।
এরপর আমরা সেই ব্লগারদের ইমেইল করি এবং প্রতিউত্তরে তাঁদের সম্মতি, আগ্রহ ও দায়িত্বশীলতার প্রতিশ্রুতি পাওয়ার পর পোস্ট নির্বাচনের সুযোগ দেয়া হয়েছে।
আলোচনা সমালোচনা সবক্ষেত্রেই হবে এবং সবারই আলোচনা সমালোচনা করার অধিকার আছে কিন্তু তা নির্দিষ্ট একটি গন্ডির মধ্যে অবশ্যই হতে হবে নচেৎ নয়।
সংক্ষুব্ধ এবং বিক্ষুব্ধ অনেক ব্লগারই বলে বলে থাকেন নির্বাচিত পাতা উঠিয়ে দেওয়া হোক। ভালো কথা তবে আমাদেরকে অবশ্যই মনে রাখতে হবে -ধ্বংস সহজ, সৃষ্টি কঠিন।
লেখা নির্বাচন করে নির্বাচিত পাতায় ঠাঁই দেওয়ার ক্ষেত্রে আমার প্রস্তাবনা হলো- সকল ব্লগারদের রেটিং করতে দেওয়া হোক যখন কোন ব্রগারের লেখা মুল পেজে আসবে তখন একজন ব্লগার ক্লিক করে উক্ত লেখার মূল পাতায় চলে যাবেন। অতঃপর আলোচনা সমালোচনা যুক্তি তর্ক বিতর্কের মাধ্যমে রেটিং করবেন। এখানে বরে রাখা ভালো একজন ব্লগার একমাত্র একবা এই সুযোগ পাবেন। ফ্রন্টপেজে কোন রেটিং সিস্টেম ব্যবস্থা না রাখাই ভালো কারণ অনেকেই আলোচনা সমালোচনা যুক্তি তর্ক বিতর্ক না করেই রেটিং করবেন যাহা মোটেই কাম্য নহে। নির্দিষ্ট সংখ্যক রেটিং-এ উক্ত লেখাটি নির্বাচিত পাতায় স্বয়ংক্রিয় চলে যাবে। এখানে আর একটি কথা না বললেই নয় তা হলো সংশ্লিষ্ট লেখার ডান অথবা বাম দিকে ষ্টার থাকবে যাহা নির্দিষ্ট সংখ্যক রেটিং-এ সিলভার কিংবা গোল্ডেন হবে এবং ফ্রন্টপেজে তা দেখা যাবে। ফ্রন্টপেজে একটি স্ক্রল বার দেয়া যেতে পারে যাতে তারকা প্রাপ্তদের নাম ও রেটিং দেখা যায়। তারকা প্রাপ্তদের নাম ও রেটিং দেখে যে কোন ব্লগার কিংবা পাঠক সহজেই ব্লগে প্রবেশ করে দেখে নিতে পারবেন তার অবস্থান সেই সংগে দেখে নিতে পারেন নির্বাচিতদের অবস্থা।
কর্তৃপক্ষ বিষয়টি ভেবে দেখতে পারেন অথবা আরো সর্বাধুনিক কার্যকরি ব্যবস্থা গ্রহনের যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহন করতে পারেন। তাহলেই নির্বাচিত পাতা নিয়ে ক্যাচাল বন্ধ হবে বলে আমি আশা করি।
পরিশেষে ধন্যবাদ সবাইকে। সবাই ভালো থাকুন নিরন্তর।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে মার্চ, ২০১৪ সকাল ৯:৫৮