ওখানে নারিদে খুব খারাপ ভাষয় গালি দেয়া হয় এমনকি গায়ে হাতও দেয় অতি দুঃখের বিষয় কোনও নারী প্রতিবাদ
করার সাহস পায় না আর ভুলভালে করলেও সেই নারীর চাকরি কেড়ে নেয়া হয়,আপনি কি জানেন বাংলাদেশের
সেই কর্ম সংস্থাটির নাম কি ?
সেটা আর কোথাও নয় সেটা আমাদের দেশেরই পোশাক তৈরি কারখানাগুলো যাকে আমরা অনেকেই গার্মেন্টস বলে থাকি
আমরা হয়ত অনেকেই জানিনা তৈরি পোশাক কারখানায় ৮০ শতাংশের বেশি নারী শ্রমিক গালিগালাজ ও হুমকি এবং ধমকসহ বিভিন্ন ধরণের মানসিক নিপীড়নের শিকার হন।এমনকি অনেক সময় কারখানা পুরুষেরা নারীদের শাররীক নির্যাতন, টর্চারও করে
থাকেন।
আর এত কিছুর পরেও এসব অন্যায় অত্যাচারের বিরুদ্ধে কোন প্রতিবাদ করলে চাকরিচ্যুত করার হুমকি দেওয়া হয় নারী শ্রমিকদের।সম্প্রতি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্সটিটিউট অফ বাংলাদেশ স্টাডিজের শিক্ষক ড: জাকির হোসেন তার একজন সহকর্মীকে নিয়ে এই গবেষণাটি করেছেন।তিনি বলছেন ঢাকা এবং গাজীপুরে নারী শ্রমিকের ওপর চালানো গবেষণায় দেখা গেছে প্রায় ৮০ শতাংশের বেশি নারী শ্রমিক কর্মক্ষেত্রে কোনো না কোনো হেনস্থা এবং নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। তার মধ্যে সব থেকে বড় অংশটি হল মৌখিক নির্যাতনের শিকার।
বিশেষ করে ঢাকার পল্টন এবং তেজগাঁও এলাকার বেশির ভাগ পোশাক কারখানায় কর্মরত নারী শ্রমিকরা এ বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে চাননা।তবে ড: জাকির হোসেন বলেছেন ওই সব এলাকার বেশ কিছু শ্রমিদের সাথে কিছুক্ষণ কথাবার্তার পর একজন রাজি হয়েছে নিজে এবং তার কয়েকজন বন্ধু-সহকর্মীর সঙ্গে কথা বলিয়ে দিতে। শর্ত একটাই তাদের নাম এবং কারখানার নাম গোপন রাখতে হবে। তাদের কাছে জানতে চাইলে তাদের রোজকার অভিজ্ঞতার কথা।তারা বলেন লাইন চিফ ও সুপারভাইজার বাবা-মা তুলে বকা দেয়,অনেক খারাপ ধরণের বকা।বেশি বেশি কাজ চাপায় দেয়, না পারলে গালিগালাজ করে, গায়ে হাত দেয় এমন কি হাজিরাও কেটে নয়। অথচ বাংলাদেশের শ্রম আইনে এই নিয়ে কি বলা আছে ? জানতে চাওয়া হয় শ্রমিক অধিকার নিয়ে গবেষণা প্রতিষ্ঠান বিলসের সুলতান উদ্দিন আহমেদের কাছে।আইনে বলা আছে, পদমর্যাদা যাই হোক, কোন নারীর মর্যাদা হানি হয়, এমন কথা কর্মক্ষেত্রে তাকে কেউই বলতে পারেনা। কিন্তু নালিশ করলে পরে তারা প্রতিকার পান না, এটি একটি বড় সমস্যা।পোশাক কারখানায় শ্রমিকদের ওপর শারীরিক এবং মানসিক নিপীড়ন বন্ধের জন্য উদ্যোগ নেবার কথা অনেকদিন ধরে বলে আসছে মানবাধিকার সংগঠনগুলো।কিন্তু আজও এর সঠিক কোনও ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।তবে তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ শ্রমিকদের অভিযোগ শোনার জন্য একটি হটলাইন চালু করেছে, তবে তার কথা জানেনা শ্রমিকেরা।বেশিরভাগ কারখানাতেই অভিযোগ জানানোর কোন ব্যবস্থা নেই।
কিন্তু যেসব কারখানায় অভিযোগ জানাতে পারেন শ্রমিকেরা তার প্রেক্ষাপটে ব্যবস্থা কতটা নেয়া হয়? জানতে চাওয়া হয় অকু টেক্স গ্রুপ নামে একটি পোশাক কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুস সোবহানের কাছে।তিনি বলেন প্রমাণিত হলে অভিযুক্ত কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করার ঘটনাও ঘটেছে তার কারখানায়।অভিযোগ জানানোর বাক্স আছে। তাতে জমা পড়া অভিযোগ ক্রসচেক করা হয়। একটি কমিটি আছে, সেই সঙ্গে শ্রমিকদেরও একটি কমিটি আছে, দুটি মিলে বসে দেখে সমস্যা কি। আসলেই যার বিরুদ্ধে অভিযোগ, সেটি প্রমানিত হলে তাকে পদচ্যুত করা হয়। আর সেটি আমি বাহবা পাবার জন্য করিনা। কারখানার জন্য ঐ ব্যক্তি ক্ষতিকর এজন্য করি।তবে, মি. সোবহান স্বীকার করেছেন বেশির ভাগ কারখানার অবস্থাই তার প্রতিষ্ঠানের মত নয়।ফলে এই মূহুর্তে বাংলাদেশে যে প্রায় ৪৪ লাখ পোশাক শ্রমিক কাজ করেন তাদের বড় অংশটি প্রতিদিন কর্মক্ষেত্রে যে পরিস্থিতির শিকার হচ্ছে তা বন্ধে সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে পাশাপাশি কারখানার মালিকদেরও এগিয়ে আসতে হবে।
তথ্যসূত্র নিচের কিছু অংশ এবং সোবাহান সাহেবের ছবিটা বিবিসি বাংলা থেকে নেয়া হয়েছে।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই মার্চ, ২০১৮ বিকাল ৩:৪৬