নারী ‘সুপার ওম্যান’ কেন্দ্রিক ছবি হলিউডে খুব কম হয়। হয়তো দর্শক পুরুষ সুপার হিরো দেখতে অভ্যস্ত বলে নারী কেন্দ্রিক ছবি নির্মাণে সাহস পায় না পরিচালক। তবে সুপার ওম্যান ঘরানার ছবিও যে দর্শকপ্রিয়তা পেতে পারে তার জলজ্যান্ত প্রমাণ গত ২ জুনে মুক্তি পাওয়া Wonder Woman ছবিটি।
বিশ্বের অন্যান্য দেশের সাথে বাংলাদেশেও মুক্তি দেওয়া হয়েছে ছবিটি। বসুন্ধরা সিটির স্টার সিনেপ্লেক্স এবং যমুনা ফিউচার পার্কের ব্লকবাসটার সিনেমাসে থ্রিডিতে উপভোগ করতে পারবেন ছবিটি। ১২৫ মিনিট ব্যাপ্তি ছবিটির পরিচালকও একজন নারী। প্যাটি জেঙ্কিন্স পরিচালিত ছবিতে কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন গ্যাল গ্যাডট। এর আগে গত বছর মুক্তি পাওয়া ‘ব্যাটম্যান ভার্সেস সুপারম্যান : ডন অব জাস্টিস’ সিনেমায় দেখা গেছে তার ওয়ান্ডার উইম্যানের অল্প স্বল্প ঝলক। তবে Wonder Woman ছবিটিতে মিস গ্যাডটের চরিত্রকে পরিপূর্ণ ভাবে প্রকাশ করা হয়েছে।
ওয়ান্ডার উইম্যান ছবির কাহিনী আবর্তিত হয় থেমিস্কিরা দ্বীপে বসবাসকারী অ্যামাজন সম্প্রদায়কে নিয়ে যেখানে শুধু নারীদের বসবাস। দেবতা জিউসের আশীর্বাদে সেখানে নারীদের গর্ভে শুধুমাত্র কন্যা শিশুর জন্ম হয়। দ্বীপের প্রিন্সেস ডায়ানা। তার মা কখনো চায়নি যে তার মেয়ে যুদ্ধ করে। কিন্তু ভেতরের যোদ্ধা মন কখনো দমিয়ে রাখতে পারেনি তাকে। বড় হবার সাথে সাথে যুদ্ধবিদ্যায় পারদর্শী হয়ে ওঠে সে। আর যুদ্ধবিদ্যায় পারদর্শী হবার লক্ষ্য একটাই। যুদ্ধের দেবতা এরিসকে পরাজিত করা। পুত্র এরিস পিতা জিউসের সাথে যুদ্ধে পরাজিত হয়ে আবার যুদ্ধ ঘোষণা দেয়। এরিসকে পরাজিত করার উদ্দেশ্যে জিউস অ্যামাজন সম্প্রদায়কে প্রতিষ্ঠা করেন এবং বার্তা দিয়ে যান যে এরিসকে পরাজিত করবে একজন অ্যামাজনিয়ান। সেই অ্যামাজনিয়ান আর কেউ নন, স্বয়ং ডায়ানা। পৃথিবীর সকল মানুষ থেকে দূরে সেই বিচ্ছিন্ন দ্বীপে একদিন ঢুকে পড়ে মানুষ। আর তার থেকেই ডায়ানা শুনতে পায় পৃথিবীর যুদ্ধ বিগ্রহ আর নিষ্পাপ মানুষের মৃত্যুর খবর। পৃথিবীর মানুষগুলোকে রক্ষা করতেই থেমিস্কিরা দ্বীপ থেকে বেরিয়ে পড়ে ডায়ানা। কিন্তু মানুষকে রক্ষা করতে গিয়ে যে কি চমক অপেক্ষা করে তার জন্য তা হয়তো ডায়ানা নিজেও আঁচ করতে পারেনি।
ছবিতে অভিনয়ের কথা বললে বলতে হয় সবাই মন প্রাণ ঢেলে অভিনয় করেছেন। ডায়ানা চরিত্রে অভিনয় করা গ্যাল গ্যাডটের অভিনয় ছিল নজরকারার মত। অবশ্য চরিত্র সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তুলতে অনেক পরিশ্রম করতে হয়েছে তাকে। ২০০৪ সালে মিস ইসরায়েল হয়ে মিস ইউনিভার্সে অংশগ্রহণকারী গ্যাডটকে নিয়ে অনেকে সন্দিহান ছিল চরিত্রটি ফুটিয়ে তুলতে পারবেন কিনা। কিন্তু ২০ বছর বয়সেই সামরিক বাহিনীতে যোগ দেওয়া এই অভিনেত্রী প্রতিটি দৃশ্যে নিজের মুনশিয়ানা যথাযথ ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। ছবিতে স্টিভ ট্রেভরের চরিত্রে অভিনয় করা ক্রিস পাইন সহ রবিন রাইট, ড্যানি হাস্টন প্রমুখ সকলের অভিনয় ছিল মনে গেঁথে থাকার মত।
ছবির শিল্প নির্দেশনা, পোশাক – সাজসজ্জা, অ্যাকশন, ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক সব মিলিয়ে একটা পারফেক্ট কম্বো।
সর্বোপরি বলতেই হয় Wonder Woman একটি মাস্ট ওয়াচ এবং পয়সা উসুল ছবি।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা জুন, ২০১৭ দুপুর ২:১০