২০১৬ সালের ঈদ-উল-ফিতরে বরাবরের মত এবারো চ্যানেলে চ্যানেলে প্রচারিত হয়েছে অসংখ্য নাটক। সেই সকল নাটকগুলোর মধ্যে সেরা কিছু কাজ নিয়েই এই রিভিউ।
১) সেই মেয়েটা
সুন্দর, পরিপাটি, পরিচ্ছন্ন নাটক বলতে যা বোঝায় ‘সেই মেয়েটা’ তেমনি একটি নাটক। মিজানুর রহমান আরিয়ানের রচনা এবং পরিচালনায় নাটকটিতে কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন তাহসান খান এবং বিদ্যা সিনহা মিম । কাহিনীতে দেখা যায় হিমেল (তাহসান খান) বরাবরই মানুষের সেবা করতে পছন্দ করে, বিশেষ করে প্রাকৃতিক দুর্যোগে ত্রাণ প্রদান করে। এমনি এক ঘূর্ণিঝড়ে ত্রাণ নিয়ে হাজির হয় রসুলপুর নামের এক গ্রামে। সেখানে দেখা হয় অরণী (বিদ্যা সিনহা মিম) নামের এক ডাক্তারের সাথে যে কিনা গ্রামের দুস্থ মানুষদের সেবা করার জন্য আসে। কোন ভাবে হিমেল জানতে পারে যে এই অরণী হিমেলের ছোট বেলার হারিয়ে যাওয়া বন্ধু। এক সময় অরণীও জানতে পারে বিষয়টি, হয়ে পড়ে আবেগে আপ্লুত। কারণ হিমেলের কথা অরণীও মনে রেখেছে বড় হবার পরও । কিন্তু এদিকে দোটানায় পড়ে যায় অরণী। কারণ বাসা থেকে তিন মাস আগেই বিয়ে ঠিক করে রেখেছে তার বাবা মা।
নাটকে প্রত্যেকের অভিনয় ভালো ছিল, এমনকি পার্শ্ব চরিত্রগুলোর অভিনয়ও। সাজিদ সরকারের সঙ্গীতায়জন ছিল উল্লেখ করার মত। তাহসানের কণ্ঠে শিরোনাম সঙ্গীতও অসাধারণ লেগেছে। মন ছুঁয়ে গেছে পুরোপুরি।
২) রুপকথা এখন আর হয় না
শিহাব শাহীনের পরিচালনায় মুগ্ধ হলাম আবার। তাহসান, মম, মারজুক রাসেল এবং মুনিরা মিঠু অভিনীত ‘রুপকথা এখন আর হয় না’ নাটকের কাহিনী আবর্তিত হয় মুক্তিকে (মম) ঘিরে যে মাস্তানদের তাড়া খেয়ে গভীর রাতে দৌড়াতে থাকে। এদিকে আবিদ রায়হান (তাহসান) বিষয়টা দেখতে পেয়ে সামনে এগোয় এবং মমকে উদ্ধার করে, সেই সাথে তাকে বাসায় পৌঁছে দেয় নিজের গাড়িতে। এদিকে ভুল করে মুক্তি তার ব্যাগটা আবিদের গাড়িতে ফেলে আসে। মুক্তি ঠিক তার পরের দিন আবিদের ভার্সিটিতে যায় ব্যাগটা ফেরত আনতে। বলা বাহুল্য, আবিদ একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। সময়ের সাথে সাথে এক সময় আবিদ মুক্তির প্রেমে পড়ে যায়, বিয়ে করতে চায় তাকে। কিন্তু মুক্তি আবিদের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। বেরিয়ে আসে মুক্তির এক গোপন জীবনের কথা, সংগ্রামের কথা যা আবিদ কখনও কল্পনাও করেনি।
নাটকে প্রত্যেকের অভিনয় অসাধারণ ছিল। সঙ্গীতায়জন ভালোই ছিল। পুরনো ক্লাসিক ‘একবার যদি কেউ ভালোবাসতো’ গানটা তাহসানের কণ্ঠে নতুন করে শুনতে ভালোই লেগেছে। বলা বাহুল্য, অভিনেত্রী মমও গানটিতে কণ্ঠ দিয়েছেন। সেই সাথে প্রথমবারের মত আত্মপ্রকাশ করলেন সঙ্গীতশিল্পী হিসেবে।
৩) শেষ দৃশ্যের আগে
স্বরজ দেবের রচনা এবং জামিল আশরাফ খান নয়নের পরিচালনায় রোম্যান্টিক ঘরনার নাটক ‘শেষ দৃশ্যের আগে’ । নাটকটিতে অভিনয় করেছেন নাইম, অপর্ণা, আরজে নীরব, মুনিরা মিঠু প্রমুখ। নাটকের কাহিনী আবর্তিত হয় তন্বী (অপর্ণা) এবং রাশেদকে (নাইম) ঘিরে যাদের পারিবারিক ভাবে বিয়ে ঠিক করা হয়। কিন্তু তন্বী বিয়ে করতে চায় না কারণ তার ভালবাসার মানুষ আরেকজন। অন্যদিকে রাশেদও কেন যেন তন্বীকে সাপোর্ট করে। তাই সে তন্বীর ভালোবাসার মানুষকে খুঁজতে তার সাথেই ঘর ছেড়ে পালায়।
নাটকে প্রত্যেকের অভিনয় মন কেড়ে নিয়েছে । দৃশ্যায়নও চোখে পড়ার মত। ভালো লেগেছে শিল্প নির্দেশনাও। তবে আবহ সঙ্গীতের দিকে আরেকটু নজর দিলে বোধ হয় ভালো হত।
৪) কথোপকথন
মিজানুর রহমান আরিয়ানের রচনা এবং পরিচালনায় নাটকের নাম ‘কথোপকথন’। নাটকের কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন তাহসান, মিথিলা এবং অপূর্ব। অতিথি চরিত্রে ছিলেন মৌসুমি হামিদ। কাহিনীর প্রেক্ষাপটে দেখা যায় অনিক (অপূর্ব) কিছুটা প্লেবয় ধরণের যে কিনা বিভিন্ন মেয়ের সাথে ফোনে কথা বলে তাদের পটিয়ে সাময়িক সময়ের জন্য প্রেম করে বেড়ায়। এদিকে অনিকের রুমমেট ফারহান (তাহসান) যে কিনা অনিকের উল্টো। কখনও প্রেম করেনি। আর অনিকের মত মেয়ে পটানোর ব্যাপার তো আরও দূরের ব্যাপার। অনিক এত্ত এত্ত মেয়ের মধ্যে সামিরা (মিথিলা) নামের একটি মেয়ের সাথেও কথা বলে। কিন্তু ভাগ্যক্রমে সামিরার ফারহানের সাথে সম্পর্ক তৈরি হয়। আবার এদিকে প্লেবয় অনিক সত্যি সত্যি সামিরাকে ভালোবেসে ফেলে। কাহিনী মোড় নেয় অন্য দিকে।
বরাবরের মত এবারো পরিচালক আরিয়ান সুন্দর এবং পরিচ্ছন্ন নাটক উপহার দিয়েছেন। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক, শিরোনাম সঙ্গীতও ভালো ছিল। সেই সাথে ক্যামেরার কাজ এবং শিল্প নির্দেশনাও ছিল চোখে পড়ার মত।
৫) হাইওয়ে
নোবেল এবং মৌ জুটিকে অনেক দিন পর ক্যামেরার সামনে দেখলাম, তাও নাটকে। তাই নাটকটা দেখার আগ্রহ একটু বেশী ছিল। মেহেদী হাসান জনির পরিচালনায় হাইওয়ে নাটকটির কাহিনী আবর্তিত হয় মেঘলা এবং ধ্রুবকে ঘিরে যারা ভিন্ন ভিন্ন কারণে ঘর পালায়। মেঘলার বাবা অনেক বড় শিল্পপতি। কিন্তু বড়লোক বাবার টাকায় জীবন চালাতে চায় না মেঘলা। নিজে কিছু করতে চায়। কিন্তু মেঘলাকে কিছুতেই চাকরী করতে দিবে না তার বাবা। অন্য দিকে ধ্রুব ঘর পালায় কারণ তার রুটিন মাফিক জীবন যাপন ভালো লাগে না, ভালো লাগে না অফিসে যেতে।
নাটকের পুরো কাহিনী হাইওয়ে ধরেই এগোয়। তবে কাহিনীটা ভালো লাগেনি, মাঝে মাঝে বিরক্তি ধরে গেছে। তবে একমাত্র ভালো লাগার ব্যাপার ছিল চিরতরুন জুটি মৌ-নোবেলের অভিনয়।
৬) টুইয়েনটি ওয়ান টুইয়েনটি এইট
শিক্ষক এবং ছাত্রীর অসম প্রেম নিয়ে নাটক টুইয়েনটি ওয়ান টুইয়েনটি এইট । এতে কেন্দ্রীয় দুই চরিত্রে অভিনয় করেছে অপূর্ব এবং শায়লা সাবি। পরিচালক মিজানুর রহমান আরিয়ান এটি রচনাও করেছেন বলে দাবী করলেও হিন্দি সিরিজ পেয়ার তুনে কেয়া কিয়ার ছায়া পাওয়া গেছে এতে। নাটকের কাহিনী আবর্তিত হয় সাবিকে ঘিরে যে সিনিয়র ছাত্রদের Rag এর শিকার হয়ে নিজের অলক্ষে প্রোপস করে বসে অপূর্বকে যে কিনা ভার্সিটির শিক্ষক। পরবর্তীতে সাবি অপূর্বর প্রতি দুর্বল হয়ে পড়ে। কিন্তু শিক্ষক হিসেবে অপূর্ব কখনও চায় না এই সম্পর্ক। ফলে ঘটে যায় এক দুর্ঘটনা।
নাটকের নির্মাণ শৈলী ভালো ছিল। অপূর্ব এবং শায়লা সাবির অভিনয়ও ভালো লেগেছে। তবে পার্শ্ব চরিত্রগুলো অভিনয়ে আরেকটু মনোযোগী হলে ভালো হত।
৭) রুপকথা
মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজের নাটক ‘রুপকথা’। আর এতে অভিনয়ে অভিষেক হল সঙ্গীতশিল্পী হৃদয় খানের। কেন্দ্রীয় চরিত্রে আরও আছেন তিশা। নাটকের কাহিনী আবর্তিত হয় হৃদয় খানকে ঘিরে যে কিনা মেয়েদের পটাতে ওস্তাদ। বন্ধুর পাল্লায় পড়ে সে তিশাকে পটাতে যায়। তিশা মেয়েটা কিছুটা চুপচাপ স্বভাবের, পড়াশুনা নিয়েই সব সময় থাকে, ক্লাসের কারো সাথে পারতপক্ষে কথা বলে না। তাই তাকে পটানো একটু চালেঞ্জিং। কিন্তু কিভাবে যেন পটিয়ে ফেলে। আর পটাতে গিয়ে নিজেই তিশার প্রেমে পড়ে যায় হৃদয়। কিন্তু ঘটনা মোড় নেয় অন্য দিকে।
কাহিনীতে কোন নতুনত্ব পাইনি। এই ধরণের প্লটের আরও অনেক নাটক নির্মিত হয়েছে। পরিচালকের কাছে এক্সপেকটেশন একটু বেশী ছিল। অভিনয়ের কথা বললে, তিশা বরাবরের মত ভালো করেছেন। তবে হৃদয় খানের অভিনয়টা ঠিক মন ছুঁতে পারে নি। অনেক জায়গায় মনে হয়েছে শুধু মুখস্ত ডায়লগ ডেলিভারি দেওয়া হয়েছে।
৮) লাভ ইউ বলি নি
রোম্যান্টিক কমেডি ঘরনার নাটক ‘লাভ ইউ বলি নি’। নাটকের পরিচালনায় ছিলেন মেহেদী হাসান জনি। অভিনয় করেছেন অপূর্ব, শ্রাবন্য , কায়েস চৌধুরী প্রমুখ। নাটকে দেখা যায় তূর্য (অপূর্ব) একটি অফিসে নতুন জয়েন করে আর সেখানেই পরিচয় হয় বাঁধনের (শ্রাবন্য) সাথে। কিন্তু বাঁধন তূর্যকে দেখতে পারেনা। এদিকে অফিসের বসের সাথে নিজের ভালো লাগার মানুষের ব্যাপার শেয়ার করে তূর্য মেয়েটির পরিচয় গোপন করে। বসও তুর্যকে ভালো ভালো সাজেশন দেয়। কিন্তু এক সময় দেখা যায় সেই বসই বাঁধনের বাবা।
মোটামুটি ধাঁচের ছিল নাটকটি। আরও হাস্যরস যোগ করা যেত বোধ করি।
৯) অনামিকা
তাহসান খান এবং মৌসুমি হামিদ অভিনীত নাটক ‘অনামিকা’। পরিচালনায় ছিলেন শিহাব শাহীন। নাটকে দেখা যায় তাহসান একজন ইংরেজির স্কুল শিক্ষক। পত্রমিতালি করতে পছন্দ করে। একদিন রাজশাহীর অনামিকা নামের একজনের সাথে পত্রমিতালির সূত্রপাত হয়। কিন্তু অনামিকা নামধারী মেয়েটি পত্রমিতালিতে আগ্রহী না। তাই সে তার বান্ধবীকে বলে চিঠি লিখে দিতে। এদিকে অনামিকার বান্ধবী চিঠি লিখতে লিখতে সে নিজেই স্কুল শিক্ষকের প্রেমে পড়ে যায়। কিন্তু ঘটনা মোড় নেয় অন্য দিকে যখন স্কুল শিক্ষক পত্রের অনামিকার সাথে দেখা করার জন্য সুদূর সিলেট থেকে রাজশাহী চলে আসে।
নব্বই দশকে পত্রমিতালির অনেক চল ছিল। সেই সাথে পত্রের মাধ্যমে সম্পর্ক হওয়ারও কাহিনী আছে অনেক। সেই সময়টাকে পরিচালক সুন্দর করে তুলে ধরেছেন। অভিনয়ও করেছেন সবাই বেশ সাবলীল ভাবে। তাহসানকে গোঁফওয়ালা রূপে দেখা গেছে প্রথমবারের মত নাটকে।
১০) ভানুমতির খেল
শরাফ আহমেদ জীবনের পরিচালনায় ভানুমতির খেল নাটকে অভিনয় করেছেন নাইম, মনোজ কুমার, পিয়া বিপাশা, আজমেরি আশা, কচি খন্দকার প্রমুখ। নাটকের গল্পে দেখা যায় নাইমের প্রেম থাকে আশার সাথে। নাইম তার ডেটের সব খরচ ভুলিয়ে ভালিয়ে মনোজকে দিয়ে বহন করায়, এমনকি গার্লফ্রেন্ডের কসমেটিকস কেনার খরচও। একদিন মনোজদের বাসায় পিয়া এবং তার পরিবার আসে ভাড়ার জন্য। পিয়াকে ভালো লেগে যায় মনোজের। কিন্তু অন্যদিকে নাইমের গার্লফ্রেন্ড থাকা সত্ত্বেও সে পিয়ার সাথে ভাব জমানোর চেষ্টা করে। কাহিনী মোড় নেয় অন্যদিকে।
কমেডি ঘরনার নাটকটি বেশ মজার ছিল।
১১) প্রেমের অলি গলি
কিছুটা ভিন্ন ধারার মনে হল নাটকটা। এজাজ মুন্নার রচনা এবং পরিচালনায় নাটকের নাম ‘প্রেমের অলি গলি’। বিজরী বরকতউল্লাহ, সাবিলা নূর এবং ফেয়ার অ্যান্ড হ্যান্ডসাম তারকা সাজ্জাদ অভিনীত নাটকটির কাহিনী আবর্তিত হয় জনপ্রিয় লেখক রেহনুমা আজিমকে (বিজরী) ঘিরে যার সাথে প্রচুর পাঠক দেখা করতে চায় কিন্তু কারো সাথে দেখা করেনা তিনি। একদিন সাদ (সাজ্জাদ) নামের এক পাঠক দেখা করতে নয়, শুধু অটোগ্রাফের জন্য আসে। রেহনুমা দারোয়ানকে বলে সাদকে ডেকে পাঠাতে। সাদ দেখা করে লেখকের সাথে। এরপর বেশ কয়েকবার দেখা করে সাদ। আর এভাবেই লেখকের প্রেমে পড়ে যায়। কিন্তু অন্যদিকে টানাপড়েন শুরু হয় তার গার্লফ্রেন্ড সম্প্রীতির সাথে।
নাটকটি কিছুটা ধীর গতির ছিল, কিন্তু দেখতে বিরক্ত ভাবটা লাগেনি। সবার অভিনয় মন্ত্রমুগ্ধের মত উপভোগ করেছি।
১২) ফ্লিপার
সম্পূর্ণ মনস্তাত্ত্বিক একটি বিষয় নিয়ে নাটক ‘ফ্লিপার’। তানিম রহমান অংশুর পরিচালনায় নাটকটিতে অভিনয় করেছে অপূর্ব এবং মিথিলা। গল্পে দেখা যায়, রাশেদ এবং রুহি দুজনেরই হাত টানের অভ্যাস। কোন একভাবে দুজনের পরিচয় হয়। এরপর ধীরে ধীরে প্রেম এবং পরিণয়। দুজনেই বিয়ের পর চেষ্টা করে টুকটাক জিনিসগুলো চুরির বদঅভ্যাস ত্যাগ করতে। কিন্তু শত চেষ্টা করেও পারে না তারা। পরিনামে জীবন হয়ে ওঠে বিষাদময়।
১৩) সে রাতে বৃষ্টি ছিল
শিহাব শাহীনের পরিচালনায় ‘সেই রাতে বৃষ্টি ছিল’ নাটকে অভিনয় করেছেন তাহসান খান, রিচি সোলায়মান এবং সুষমা সরকার। বর্তমান এবং ফ্ল্যাশব্যাকের মিশেলে নির্মিত হয়েছে নাটকটি। ফ্ল্যাশব্যাকে দেখা যায় আবিদ(তাহসান খান) এবং বৃষ্টি (রিচি) স্বামী- স্ত্রী। কিন্তু আবিদ বৃষ্টিকে সন্দেহ করে বসে বৃষ্টির কাজিনের সাথে দেখা করা নিয়ে। বলা বাহুল্য, বৃষ্টির সাথে তার কাজিনের বিয়ে ঠিক হয়েছিল কিন্তু কোন কারণে বিয়েটা আর হয়নি। বিয়ে হয় আবিদের সাথে। এদিকে আবিদও জড়িয়ে পড়ে পরকীয়ায় সুষমার সাথে। এই নিয়ে আবিদ আর বৃষ্টির মধ্যে দ্বন্দ্ব। দুজনেই দেড় বছর ধরে আলাদা থাকে। আবিদের গার্লফ্রেন্ড যখন আবিদকে ফুসলাতে থাকে বৃষ্টিকে ডিভোর্স দেবার জন্য ঠিক তখনই উন্মেচিত হয় আরেক সত্য।
পরিচালনা এবং অভিনয় দুটোই ভালো লেগেছে। বিশেষ করে বাচ্চা মেয়েটার অভিনয় ভালো ছিল।
১৪) কাকতাড়ুয়ার প্রেম
সিয়াম আহমেদ, অপূর্ব, শারলিন এবং মৌ অভিনীত ‘কাকতাড়ুয়ার প্রেম’ নাটকের গল্প লিখেছেন আসাদুজ্জামান সোহাগ । পরিচালনায় ছিলেন মেহেদী হাসান জনি । গল্পে দেখা যায়, সিয়াম এবং শারলিন বেস্ট ফ্রেন্ড থাকে। এর মধ্যে শারলিন টমবয় টাইপের থাকে, অন্যদিকে সিয়াম চুপচাপ টাইপের ছেলে। তার উপর তার গার্লফ্রেন্ডও থাকে। কিন্তু গার্লফ্রেন্ড শর্ত দেয় যে রিলেশন রাখতে হলে সিয়ামকে তার বেস্ট ফ্রেন্ড শারলিনের সঙ্গ ছাড়তে হবে। কিন্তু বিশ বছরের বন্ধুত্বের সম্পর্ক ছিন্ন করার কথা ভাবতে পারেনা সিয়াম। পরিণামে ব্রেকআপ হয়। অন্যদিকে শারলিনের বাবা মেয়ের বিয়ে ঠিক করে তারই বন্ধুর ছেলে অপূর্বর সাথে। বলাবাহুল্য শারলিন যে সিয়ামকে পছন্দ করে তা সে আগেই জানিয়ে দেয়। কিন্তু সিয়াম ব্যাপারটাকে পুরোই উড়িয়ে দেয়। আর সে অপূর্বকে সময় দিতে থাকে। কিন্তু কাকতালীয় ভাবে গল্প মোড় নেয় অন্যদিকে।
সব কিছু মিলিয়ে ভালো লেগেছে নাটকটি। সবার অভিনয়ও ছিল যথেষ্ট ভালো, বিশেষ করে শারলিনের টমবয় চরিত্রটি বেশী নজর কেড়েছে।
১৫) ব্রেকআপ থিওরি
রোম্যান্টিক কমেডি ঘরানার নাটক ‘ব্রেকআপ থিওরি’ পরিচালনা করেছেন রিয়াদ বিন মাহবুব। নাটকের কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন তিশা, আফরান নিশো, অবাক প্রমুখ। নাটকের কাহিনী আবর্তিত হয় তিশা আর নিশোর ব্রেকআপকে ঘিরে। ব্রেকআপের পর পরই দুজনই ভিন্ন ভিন্ন মানুষের সাথে আবার সম্পর্কে জড়ায়। কিন্তু তাদের নতুন সম্পর্কের মানুষগুলো আবার একে অপরের পরিচিত। অর্থাৎ, তিশার নতুন বয়ফ্রেন্ড নিশোর পরিচিত, আবার নিশোর গার্লফ্রেন্ড তিশার পূর্ব পরিচিত। পরবর্তীতে তিশা শর্ত জুড়ে দেয় যে তারা কেউ একে অন্যের পরিচিত কারো সাথে সম্পর্কে জড়াতে পারবেনা।
এভাবেই খুনসুটির সাথে এগিয়ে যায় নাটকের কাহিনী। হাস্য রসাত্মক নাটকটি বেশ ছিল। বিশেষ করে ঝগড়ার দৃশ্যগুলো বেশী মজার ছিল।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই জুলাই, ২০১৬ রাত ২:৪১