ফ্যাটম্যানের ব্যানারে নির্মিত ইফতেখার চৌধুরী পরিচালিত ছবিটির নাম রাজত্ব। পরিচালকের চতুর্থ ছবি এটি। ২০১৪ সালের ৭ মার্চ মুক্তিপ্রাপ্ত ছবিটিতে অভিনয় করেছেন শাকিব খান, ববি, প্রবির মিত্র, রেবেকা প্রমুখ।
দুই ঘণ্টা পঁয়তাল্লিশ মিনিট ব্যাপ্তি ছবিটির কাহিনী আবর্তিত হয় শহরের নতুন পুলিশ কমিশনার সম্রাটকে(শাকিব খান) নিয়ে যে কিনা আন্ডার মাফিয়া ডনকে ধরতে নিজের পরিচয় গোপন করে নিজেকে নতুন ডন বলে পরিচয় দেয়। শহরের চাঁদাবাজি বন্ধ করতেও তৎপর থাকে সম্রাট।
নিজের মাকে বাবার পুরনো বাইকে করে গ্রামের বাড়ি রেখে এসে ফেরার পথে দুর্ভাগ্যবশত বাইক নষ্ট হয়ে যায়। গভীর রাতে আশেপাশে কোন গ্যারাজ না পেয়ে একটা বাড়ি দেখতে পেয়ে সেখানে রাতটা আপাতত বাইকটা রাখার সিদ্ধান্ত নেয় সম্রাট। সেই বাড়িতেই দেখা হয় রিহানার(ববি) সাথে। ডাক্তার রিহানার বাবা আর ছোট বোনকে নিয়ে ছোট্ট পরিবার। সেই রাতেই রিহানার বোনের জন্মদিন থাকে। বাইকটা রাখার পর জন্মদিনে সামিল হতে অনুরোধ জানায় সবাই। কেক কাটার পর সম্রাট ফিরে যায় তার শহরে। যাবার আগে রিহানার সাথে একটু আলাপ করে যায়। সেই সাথে বলে যায় পরে এসে বাইকটা নিয়ে যাবে সে। দুদিন বাদে সম্রাট যখন বাবার সৃতি বিজড়িত বাইকটা ফেরত নিতে রিহানার বাসায় আসে তখন দেখা যায় অন্য দৃশ্য। রিহানা এবং রিহানার বাবা সম্রাটকে না চেনার ভান করে চলে যেতে বলে। এমনকি বাইক রাখার কথাও অস্বীকার করে সে। কাহিনী মোড় নেয় অন্য দিকে।
এবার আসি মূল রিভিউয়ে। ছবির কাহিনী মোটামুটি মানের হলেও জাত মেরেছে অভিনয়টা। কেন্দ্রীয় চরিত্রগুলো ভালো অভিনয় করলেও পার্শ্ব চরিত্রগুলোর অভিনয় একদম ভালো ছিল না। শাকিব খানের কিছু কিছু দৃশ্যে মাত্রাতিরিক্ত মেয়েলীপনা দেখা গেছে। একজন পুরুষ পুলিশ কমিশনার কিভাবে মায়ের সাথে এইভাবে মেয়েলী ঢং করে তা আমার বোধগম্য হয় না। আবার নায়িকাকে প্রথম দেখে শাকিব নিজের মুখে নিজে সেক্সি স্টাইলে কেন হাত বুলালো তাও বুঝলাম না। এত ওভার অ্যাকটিং না করলেও পারতো। প্রথম দেখায় প্রেমে পড়ার দৃশ্য নানা উপায়ে পুরুষালি ভাবে প্রকাশ করা যায়। আরেকটি গানের দৃশে যখন নায়ক নায়িকাকে বাথ ট্যাবে দেখা গেল তখন শাকিবের মেয়েলী ভাবে বাবলে ফুঁ দেওয়াটাও দৃষ্টিকটু লেগেছে। নায়িকা হিসেবে ববি ভাল করেছে কিন্তু বোনের জন্মদিনে ববি ডাক্তার হয়েও এমন গ্লামারাস খোলামেলা গাউন কেন পরলো তা বুঝলাম না। নিজেকে ডাক্তার নায়লা নাইমের মত প্রকাশ না করে সাধারণ ডাক্তার রূপে প্রকাশ করলেই ভাল হত। ববির ছোট বোনের চরিত্রে অভিনয়কারীরও মাত্রাতিরিক্ত ন্যাকামি ভাল লাগেনি।
ছবির দৃশ্যায়ন ভাল লেগেছে। সেই সাথে গান গুলোও ছিল শ্রুতি মধুর। অদিতের সংগীতায়জনে ছবিটিতে রাখা হয়েছে পাঁচটি গান। সবচেয়ে ভাল লেগেছে হাসিব আর দোলার কণ্ঠে ‘তুমি ছাড়া’ শিরোনামের গানটি। গানটির জন্য দোলা মেরিল প্রথম আলো পুরস্কারে মনোনয়নও পেয়েছিল।
সবশেষে বলবো ছবিটি থেকে শিক্ষণীয় কিছু হয়ত পাবেন না তবে পরিপূর্ণ বিনোদন পাবেন সেই ব্যাপারে গ্যারান্টি দিতে পারি।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:২৪