একটি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানির চিফ এক্সিকিউটিভের চেম্বারে হঠাৎ-ই বিষন্নতা নেমে এলো। জানালার কারটেন আরো এডজাস্ট করে অন্ধকারের বন্ধ খাঁচায় নিজেকে সমর্পণ করলেন তিনি। টেবিলের ওপর ড্রয়ার থেকে একটা ফটো ফ্রেম বের করে পাশে রাখেন।
ছবির মেয়েটি হাসি মুখে তাঁর দিকে চেয়ে আছে।
সেই চেনা মুখ!
সেই চোখ... আর সেই পাগল করা দৃষ্টি!
যাতে তিনি নিজেকে হারিয়ে ফেলেছিলেন।
প্রথমে একটু ভালোলাগা... এরপর শিহরণ... বুকের কোথায় যেন উথাল-পাথাল ঢেউ... ধীরে ধীরে সব কিছু স্থির হয়ে আসা। দম বন্ধ করা এক শীতল স্রোত তাকে হঠাৎ-ই নিজের থেকে টেনে নিয়ে যায়। তিনি ফেরার চেষ্টা ও করেন না।
শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষটিতে হারানো সুরের সাথে সাথে বিষন্নতা এবং অচেনা এক কষ্ট তাল মিলিয়ে ভেসে বেড়ায়। এক সময় সেগুলি এক হয়ে হৃদয়ের সেই শেষ সীমায় পৌঁছে যায়... একজন প্রেমিক শিল্পীর হৃদয় পুড়ে পুড়ে বের হওয়া অনুভুতিগুলির কিছু শাব্দিক প্রকাশ, একজন ব্যর্থ প্রেমিকের স্বগতোক্তির মত বের হয়ে আসে-
‘ একটা-ই দুঃখ আমার
বুঝনি তুমি কখনো...’
সুউচ্চ এক টাওয়ারের নির্জন একটি কক্ষে এক বিষন্ন পুরুষ হৃদয়ের ঝরা পাতা গুলোকে বাতাসে উড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করেন... অদম্য আবেগকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে ও ব্যর্থ হন! শব্দ, সুর আর অনুভব - এই তিন মিলিয়ে বাইরের প্রচন্ড দাবদাহের কষ্টের চেয়েও হাজারগুণ বেশী প্রখরতায় তিনি দগ্ধ হতে হতে একসময় আর পারেন না।
তখন নীরবে বৃষ্টি নামে সুউচ্চ টাওয়ারটির সেই নির্জন কক্ষে... প্রত্যাখ্যাত প্রেম অনন্ত জিজ্ঞাসায় নীরবে চেয়ে থাকে ফটো ফ্রেমের মেয়েটির দিকে। এভাবে কুহকী প্রহরগুলি যখন তার চিন্তাগুলো নিয়ে গুলিয়ে খাচ্ছিল, তখন কোথায় যেন একটা ডাক শুনতে পান। একবার শুনেন.. দুইবার শুনেন.. তৃতীয়বারে ফিরে তাকান। মিথিলার মতো দেখতে.. হ্যা! মিথিলাইতো!!
ফটো ফ্রেমের মেয়েটি দরোজা আগলে দাঁড়িয়ে মিটিমিটি হাসছে।
★ মামুনের অণুগল্প
# ছবিঃ নেট থেকে কপি করা।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে মে, ২০১৬ সকাল ৯:২৯