somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

★*★বাবার বাড়ি ফেরা★*★

১০ ই মে, ২০১৬ বিকাল ৩:৪৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


মেয়ে বাবার বন্ধু। বাস্তবে অন্যতম কাছের বন্ধু। অন্যতম কেন? বাবার জন্য মেয়ের মত কাছে আর কে আছে? তা সে চিন্তায়ই হোক কিংবা অনুভূতিতে অণুক্ষণ নি:শ্বাসে প্রশ্বাসে বিশ্বাসের ফল্গুধারার মত, বাবার জন্য মেয়ের ভালোবাসা সতত বহমান!
ভালোবাসা আদি ও অকৃত্তিম রুপে যেটুকুই বিদ্যমান, কিশোরির হৃদয়ে বাবা নামের মানুষটিকে ঘিরে যেভাবে সেগুলো 'এক্সিকিউট' হয় কিংবা হৃদয়গুলো যে 'মাস্টার হৃদয়ের' সাথে লিংকড, সেখানেও বুঝিবা ভালোবাসার আকাল পড়ে যায়!

বাবার ফেসবুক ফ্রেন্ড হওয়াতে সে অতিপ্রিয় কাছে-দূরের ' এই আছে এই নাই' অনুভূতিতে অণুক্ষণ ডুবে থাকা মানুষটির আরো অনেক কাছে চলে এসেছে। দুইজন ভিন্ন মানুষ ভালোবাসায় ভর করে চেতনায় ক্রমশঃ কাছে আসতে থাকে।

সবার মাঝে থেকেও বাবা বড্ড একেলা। প্রিয় মানুষগুলো এত নি:সংগ কেন?
বাবার গতকালের স্ট্যাটাস মনে পড়ে মিথিলার। বাবা লিখেছেন,

" ... Am just stuck at the middle of this long long life journey. Am confused and tired to carry on. I want to end this... I want to go back home... "

বাবা বাড়ি ফিরতে চান।
জীবন এতোটাই দু:সহ যে এ জীবন বয়ে বেড়ানোর ইচ্ছেগুলোই মরে যাচ্ছে!
নিজের কিশোরি হৃদয়ে ঝড় তুলে ধেয়ে আসা বেদনাগুলো ও কি কিশোরি? কিন্তু আজ কেন এক পূর্ণ রমণী হৃদয়ে উদ্ভুত যাতনার সবটুকু অনুভূতি নিজের বাবাকে নিয়ে ভাবনা-চিন্তার সময় মিথিলা বড্ড তীব্র ভাবে উপলব্ধি করে!
ভালোবাসার মোড়কে বেদনারা যখন হৃদয়ে আঘাত হানে, হৃদয়গুলোরও কি বিস্তার ঘটে? তিনমাত্রা থেকে চারমাত্রায় ঘটে উত্তরণ?
অবচেতন মনে ওড়না না পরতে চাওয়া দুরন্ত মেয়েটি কখন যে রমনী হয়ে উঠল, সে নিজেও বুঝে কী?

দেয়ালে মায়ের ছবি। স্মৃতিগুলোকে ধরে রাখার চেষ্টা। হৃদয়েও একই ছবি।
মা ছবি হয়ে যাবার পরেই তো বাবার ইচ্ছেঘুড়ির নাটাই নড়বড়ে হতে শুরু করল। ছোট্ট মিথিলা আর বাবা... বাবা আর মিথিলা ...শেষে বাবা আর বাবা... জীবনযুদ্ধে একা একজন মানুষ। সাথীহারার বেদনায় ডানা ভাংগা অনুভূতি নিয়ে বছরের পর বছর অভিনয় করে চলেছেন... সব ঠিক আছে। মিথিলা ওর বুঝার মত অনুভবে বড় হতে থাকে। বাবা ঘানি টানেন, অভিনয় করেন সুখী তৃপ্ত মানুষের। এভাবে সব কিছু তো এতদিন ঠিকই ভালোভাবে চলে আসছিল । হঠাৎই বাবার ইচ্ছেগুলোর অপমৃত্যু হওয়া কেন শুরু হল?

জীবন বাবার ভেতরে- বাইরের নাগরিক দায় শোধরাতেই সময়ের বুকে থাকা আনন্দঘন মুহুর্তগুলোকে কেড়ে নিয়েছে। ইচ্ছেগুলোর অপমৃত্যু আগেও যেমন হয়েছে, এখনো হওয়াতে কি আর হেরফের হবে?
বাবা এখন মানুষের ভিতরে অন্য একজন মানুষ।

এইমাত্র একজন মিথিলা বুঝতে পারে, ' বাবাকে আরো সময় দেয়া দরকার। ' ... ' বাবাকে আরো কাছে পাওয়া প্রয়োজন ... বাবার মিথিলাকে পাশে পাওয়ার দরকার' ... এভাবে বোধের আড়াল থেকে উকি দেয়া সহস্র সুর্যের প্রখরতায় এক দুর্বোধ্য ভাবের উন্মেষ ঘটে বালিকার মনে...মননে...মর্মে!

মেয়ের আকাশে বাবা একজন বর্ণহীন মানুষ। যার রংগুলো অপরকে রাংগাতেই নি:শেষ হয়েছে। একজন রংহীন মানুষ, আকাশের নীলে অন্য রং খুঁজে বেড়ানো বাবা কি এক 'কালার ব্লাইন্ড?'

নিজের আকাশটিও মিথিলা বাবাকে ধার দিবে। দুটো আকাশের সবগুলো বেদনাই নিজের হৃদয়ে এক গোপন দুপুরের মত রেখে দেবে। বেদনারা চলে গেলেও কি আকাশ নীল থাকে?

মেয়ে বাবার স্ট্যাটাসে লাইক দেয়...অনুভূতি প্রকাশে অক্ষরে আংগুলের আলতো পরশে স্ক্রীণ কেঁপে উঠে! জীবন নদীর তটরেখা ধরে একজন হেঁটে চলা বাবা, যার আকাশের ইচ্ছেঘুড়িগুলোর সুতা অনেক আগেই কেটে গেছে-
' বাবা কি কম্পন অনুভব করেন? '
বাবা বাড়ি ফিরতে চান। মিথিলা বাবার স্ট্যাটাসে কমেন্ট করে,

"... A person who falls and gets back up is much better than a person who never fell."

একজন বাড়ি ফিরতে চাওয়া বাবাকে নিয়ে ভাবনা চিন্তা জগতে তোলপাড় হতে থাকে এক কিশোরী... নিজের হৃদয়ই যে বাবার ফিরতে চাওয়া বাড়ি, কিশোরী একবারও ভাবে কি?
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই মে, ২০১৬ বিকাল ৩:৪৫
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমেরিকানরা ভীষণ কনজারভেটিভ

লিখেছেন মুনতাসির, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:২৬

আমেরিকা নিয়ে মন্তব্য করার যোগ্যতা আমার নেই—এটা প্রথমেই বলে ফেলা ভালো। আমি শুধু আমার অভিজ্ঞতার কথা বলছি। আমেরিকা তথা উত্তর আমেরিকাতে আমার যাওয়া হয়েছে বেশ কিছুবার। সবগুলো ভ্রমণ যোগ করলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনী ফলাফলে বাংলাদেশের জন্য দুশ্চিন্তা নেই

লিখেছেন মেঠোপথ২৩, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:২১

যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনী ফলাফলে বাংলাদেশের জন্য দুশ্চিন্তা নেই

ট্রাম্প হচ্ছে একজন আপাদমস্তক বিজনেসম্যান। কমলা হ্যা্রিস যেহেতু ইন্ডিয়ান বংশোদ্ভূত তাই ইন্ডিয়ান ভোটার টানার জন্য সে নির্বাচনের আগে বাংলাদেশ প্রসঙ্গ টেনে জাস্ট... ...বাকিটুকু পড়ুন

চট্রগ্রামে যৌথবাহিনীর ওপর ইসকনের এসিড হামলা সাত পুলিশ আহত।

লিখেছেন তানভির জুমার, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:৪৩

এসিড নিক্ষেপে আহত পুলিশ সদস্য



চট্টগ্রামে পুলিশের ওপর ইসকন সমর্থকদের হামলা ও এসিড নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় সাত পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) সন্ধ্যা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানব সভ্যতা চিরতরে ধ্বংস হবে কি করে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৪৬



সে এক বড় অদ্ভুত বিষয়।
চিন্তা করে দেখুন এত দিনের চেনা পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাবে। বিশাল বিশাল ইমারত ভেঙ্গে যাবে, গুড়িয়ে যাবে। মানুষ গুহা থেকে বেরিয়ে আজকের আধুনিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসকন

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৪৭


INTERNATIONAL SOCIETY FOR KRISHNA CONSCIOUSNESS যার সংক্ষিপ্ত রূপ হলো ISKCON এর বাংলা অর্থ হল আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ। যে সংঘের ঘোষিত উদ্দেশ্য হল মানুষকে কৃষ্ণভাবনাময় করে তোলার মাধ্যমে পৃথিবীতে প্রকৃত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×