ভারতের পশ্চিমবঙ্গ (West Bengal) তাদের অফিসিয়াল নাম পরিবর্তন করে "বঙ্গ" বা "বাংলা" যা ইংরেজীতে "Bengal" রাখতে চাইছে। এজন্য বিধানসভায় একটি বিল (প্রস্তাব) উত্থাপন করে বিতর্কের দিন ধার্য্য করা হয়েছে। বিধানসভায় প্রস্তাব পাশ হলে লোকসভা থেকেও প্রস্তাবটি পাশ করিয়ে আনতে হবে। তবেই সাধের! "বাংলা" নামকরণ সম্ভব হবে।
.
পশ্চিমবঙ্গের নাম পরিবর্তনের বিষয়টি বেশ ক'বছর থেকেই আলোচিত হচ্ছে। নাম পরিবর্তন করতে চাওয়ার প্রধান যুক্তি হচ্ছে West Bengal (পশ্চিমবঙ্গ) নামের প্রথম বর্ণ W. যার ফলে ভারতমাতার রাজ্যগুলোর বর্ণানুক্রমিক তালিকায় পশ্চিমবঙ্গ থাকে সবার নীচে। বরাদ্দ ভাগ-বাটোয়ারায় অন্যদের দেবার পর যা থাকে তাই জোটে পশ্চিমবঙ্গের। এজন্য পশ্চিমবঙ্গের দাদা-বাবুরা হালুয়া রুটির ভাগ আরেকটু বেশী পাবার আশায় নিজেদের নাম পরিবর্তন করতে চান। পশ্চিবঙ্গের বাঙ্গালী বাবুরা নির্লজ্জের মতো ভুলে গেছেন অখন্ড বাংলার কথা, তারা হালুয়া-রুটির ভাগ বেশী পেতে নিজেদের নামে পরিবর্তন আনতে রাজী কিন্তু নিজেদের স্বাধীনতার চিন্তা করতে পারেনা।
.
"আসাম আমার, পশ্চিমবঙ্গ আমার, ত্রিপুরাও আমার। এগুলো ভারতের কবল থেকে ফিরে না পাওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মানচিত্র পূর্ণতা পাবেনা"।
------মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী।
.
অখণ্ড বাংলা ভারতমাতার মাথাব্যথার কারণ হতে পারে তাইবলে কি আমরা সবাই বসে থাকবো??? পশ্চিমবঙ্গকে স্বাধীনতার জন্য চেষ্টা করতে হবে। নেপাল যদি স্বাধীন সত্তা নিয়ে ঠিকে থাকতে পারে, পশ্চিমবঙ্গ কেন পারবেনা? স্বাধীন পশ্চিমবঙ্গ আর বাংলাদেশ মিলে একটা স্বাধীন সার্বভৌম ফেডারেল রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়ে তুলা খুবই সম্ভব। দুই জার্মানি এক হতে পারলে দুই বাংলা কেন নয়???
.
পশ্চিমবঙ্গের নীতি নির্ধারকদের ভারতের সাথে থেকে যাবার প্রাণান্তকর চেষ্টার হীন মানসিকতা, স্বাধীন হতে না চাওয়ার মানসিকতা কিংবা বৃহৎ বাংলা (Greater Bengal) গঠনে সম্পৃক্ত না হবার মানসিকতা "রেললাইনে মাথা দেবো, বডী দেবোনা" নীতিরই নামান্তর মাত্র।
.
"প্রাচীনকালে বেঙ্গল ডাইনেস্টি সুদূর রাজস্থান পর্যন্ত বিস্তৃত ছিলো। বাংলা ছিলো এই ভারতীয় উপমহাদেশের প্রাণকেন্দ্র। এমনকি সিরাজ-উদ-দৌলা'র আমল পর্যন্তও বাংলা, বিহার ও ওড়িষ্যা মিলিয়েই ছিলো আমাদের মূল ভূখন্ড। ১৯৪৭-এ ধর্মের ভিত্তিতে ভারত-পাকিস্তান ভাগের সময় বেঙ্গল, কাশ্মীর ও পাঞ্জাবের কলিজার ঠিক মাঝখানে চাকু চালিয়ে নাড়ি ছেড়া হয়েছে। মাঝখানে ঝুলে আছে বিচ্ছিরি সীমান্ত কাটাতার। অথচ আমরা একই ভাষায় কথা বলি, আমাদের সংস্কৃতি এক। আমাদের সাহিত্যে, আমাদের ভালোবাসায়, ভালো লাগায় কোন ফারাক নেই। আমাদের আকাশটা তো আগের মতোই আছে। (সংগৃহীত)"
.
দুই বাংলাকে এক করতে হলে, আসাম-ত্রিপুরা-ওড়িষ্যা-বিহার ফিরে পেতে হলে এখনই আন্দোলনে নামতে হবে। পশ্চিমবঙ্গকে স্বাধীনতার জন্য উজ্জীবিত করতে হবে, প্রয়োজনীয় সহযোগীতা দিতে হবে। বাংলাদেশ-পশ্চিমবঙ্গের বুড়ো-ভাম নেতৃত্ব দিয়ে ঐতিহাসিক বৃহৎ বাংলা গড়া যাবেনা। দুই বাংলার তরুণ সমাজকেই এই স্বপ্নকে, এই ইতিহাসকে ধারণ করতে হবে, এই চেতনাকে লালন করতে হবে।
.
যেহেতু বাংলাদেশ একটি স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র তাই বৃহৎ বাংলা বা গ্রেটার বাংলা গঠনে বাংলাদেশকেই অগ্রণী এবং নেতৃত্বের ভূমিকা পালন করতে হবে।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা আগস্ট, ২০১৬ সকাল ১০:৫১