সাম্প্রতিক জঙ্গিবাদী তৎপরতার প্রেক্ষিতে বাংলাদেশে যে ক'টা গোয়েন্দা সংস্থা (Secret Service Agency) আছে তাদের দক্ষতা, সক্ষমতা এবং পেশাদারিত্বের প্রতি জনসাধারণের বড় একটা অংশ আস্থা রাখতে পারছেনা। যদিও বিগত সরকারগুলো এবং বর্তমান সরকার আইন প্রয়োগকারী (Law Enforcement) সংস্থা সমূহ, গোয়েন্দা সংস্থা এবং তদন্ত সংস্থা সমূহের আধুনিকায়ন, প্রশিক্ষণ, যন্ত্রপাতি ইত্যাদি খাতে যথেষ্ট ব্যয় বরাদ্দ দিয়েছে এবং দিচ্ছে। যে ক'টা গোয়েন্দা ও তদন্ত সংস্থা আছে যেমন DGFI, NSI, পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (CID), পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চ (SB), পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (PBI), Military Intelligence, Neval Intelligence, Air Intelligence এবং বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে RAB এর গোয়েন্দা ইউনিট।
.
এই সংস্থা সমূহ বিগত দিনগুলোতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ গোলাবারুদ, আগ্নেয়াস্ত্র ও সমরাস্ত্র এবং এর সাথে জড়িতদের গ্রেপ্তার বা আটক করলেও বাংলাদেশে জঙ্গিবাদী তৎপরতার প্রেক্ষিতে বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদ এবং জঙ্গিবাদ মোকাবেলায় বাংলাদেশের গোয়েন্দা বা তদন্ত সংস্থা সমূহের সামর্থ্য যথেষ্ট নয় এবং বিশ্বমানের নয় বলেই প্রতীয়মান হয়।
.
২০০৫ সালে সারাদেশব্যপী জেএমবি'র বোমা হামলার প্রেক্ষিতে RAB এর গোয়েন্দা ইউনিট যে দক্ষতা এবং পেশাদারীত্বের পরিচয় দিয়েছিলো, জেএমবি'র একটা বিস্তৃত নেটওয়ার্ককে গুড়িয়ে দিতে পেরেছিলো, এর শীর্ষ নেতৃত্বকে গ্রেপ্তার করে বিচারের কাঠগড়ায় দাড় করিয়েছিলো আজ তাদের সেই দক্ষতা বা সামর্থ্য বিস্মৃত প্রায়। রাজনৈতিক পঠ-পরিবর্তনের পর RAB এর মতো বাহিনীকে রাজনৈতিক ব্যবহারে তাদের সামর্থ্যের যে অপপ্রয়োগ হয়েছে জাতিকে এখন তার প্রায়শ্চিত্ত করতে হবে।
.
বাংলাদেশে যেসব গোয়েন্দা সংস্থা আছে তাদের যেকোন একটিকে ২০০৫ পরবর্তী সময়ে RAB এর গোয়েন্দা ইউনিট যেভাবে দায়িত্ব নিয়েছিলো সেভাবে দায়িত্ব নিতে হবে। পাশাপাশি সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে গোয়েন্দা ও তদন্ত সংস্থা সমূহের কাজের সমন্বয় করতে হবে।
.
দেশের ভূ-রাজনৈতিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিক, সামরিক, ভূ-কৌশলগত স্বার্থ সমুন্নত রাখা, তথ্য-প্রযুক্তিগত নিরাপত্তা, আর্থিক নিরাপত্তা এবং বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদ মোকাবেলার জন্য এই একবিংশ শতাব্দীর নানাবিধ জটিল সমস্যা মোকাবেলায় সক্ষম ও উপযোগী একটি গোয়েন্দা সংস্থা গঠন করা এখন সময়ের দাবী, এই প্রজন্মের দাবী।
.
প্রস্তাবিত এই বাহিনীকে হতে হবে নিদেনপক্ষে ভারতের RAW কিংবা পাকিস্তানের ISI এর সমমানের এবং সমান সক্ষমতা সম্পন্ন। এই বাহিনীকে ব্রিটেনের MI-6, রাশিয়ার KGB, ঈসরাইলের MOSSAD, মার্কিন যুক্তরাষ্টের FBI এবং CIA এর সমান সক্ষমতা অর্জনের স্বপ্ন দেখতে হবে।
.
জানি আমার এই স্বপ্নকে অনেকেই অত্যুক্তি বলবেন। কিন্তু আমি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি, আমার এই স্বপ্নের সফল বাস্তবায়নের উপরই অনেকাংশে নির্ভর করে আমার মাতৃভূমির নিরাপত্তা ও উন্নতি। এ স্বপ্নের বাস্তবায়নই রুখতে পারে উগ্র জঙ্গিবাদী মতবাদের উত্থান। এই স্বপ্নের বাস্তবায়ন বিশ্ববাণিজ্যে সফলতা দেবে, গার্মেন্টস ব্যবসায়ে আরো সফলতা দেবে, কূটনীতিতে সফলতা দেবে। পাশাপাশি দেশের নিরাপত্তা, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই জুলাই, ২০১৬ রাত ৩:২৬