অধুনা একটি বৃটিশ হরটিকালচার ফার্ম গ্রাফটিং পদ্ধতিতে এ্কই গাছে মাটির নীচে মুল অংশে আলু ও উপড়ের অংশে টমেটু জন্মানোর জন্য চারা বানিজ্যিক ভিত্তিতে বাজারে ছেড়েছে । উদ্ভাবনকারী প্রতিষ্ঠানটি এ কথাও বলেছে যে প্লান্টটিতে( উদ্ভিদ ) কোন প্রকার জেনিটিক্যাল মডিফিকেশন আনা হয়নি । এতে প্রাকৃতিকভাবে জন্মানো টমেটু ও পটেটু গাছের মুল জেনিটিক বৈশিষ্ট বিদ্যমান আছে ।
উল্লেখ্য এই পদ্ধতিটি একেবারে নতুন নয় , এটা নিয়ে আমাদের বাংলাদেশী বেশ কিছু বিজ্ঞানিও কাজ করেছেন এবং জানা যায় যে ড: সুবিমল দত্ত নামে একজন বাংলাদেশী বিজ্ঞানী প্রথম সাফল্য জনকভাবে গ্রাফটিং পদ্ধতিতে একই গাছে টমেটু ও পটেটু জন্মানোর কৌশল উদ্ভাবন করেন । তবে বানিজ্যিক ভিত্তিতে বৃটিশ হরটিকালচার ফার্মটি এর কার্যক্রমের সুচনা করে , আর এ লক্ষে তাদের প্রয়োজনীয় কারিগরী পরিবেশ ও স্ব্যাস্থ সম্পর্কিত বিষয়াদি সাফলল্যজনক ভাবে উত্তীর্ন হতে হয়। ।
এই নব উদ্ভাবিত গাছটির বিষয়ে বৃটিশ রয়াল হরটিকালচার সোসাইটি তাদের গভীর আশাবাদ ব্যক্ত করেছে । তারা তাদের পর্যবেক্ষনে এ কথাও বলেছে যে অতীতে গ্রাফটিং পদ্ধতিতে উৎপন্ন ফসলে স্বাদের কিছুটা সমস্যা পরিলক্ষিত হয়েছে। তবে বর্তমান উদ্ভাবিত প্লান্টে এরকমটা হবেনা বলে তারা মনে করেন, কারণ ইদানিংকালে গ্রাফটিং পদ্ধতির অনেক কারিগরী উন্নয়ন সাধন হয়েছে ।বিবিসির সংবাদ ভাষ্য হতে দেখা যায় যে বৃটিশ হরটিকালচার ফার্ম কতৃপক্ষও দাবী করেন যে তাদের পদ্ধতিতে উৎপন্ন ফসল বাজারে প্রাপ্ত আলু ও টমেটু হতেও অনেক বেশী স্বাদের ।
আমরা সবাই জানি গ্রাফটিং হলো দুটো গাছকে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির মাধ্যমে একটি গাছে পরিনত করা ।
একটি সফল গ্রাফটিং এর জন্য প্রয়োজন যথেস্ট কারিগরী দক্ষতার ও পুর্ব অভিজ্ঞতার । এ জন্য স্থানীয় পর্যায়ের হরটিকালচার বিশেষজ্ঞের পরামর্শ গ্রহণ বাঞ্চনীয় । তবে নিন্ম বর্ণীত বিবরণ ও লিংকে প্রদর্শিত গাইড লাইন অনুযায়ী উৎসাহী যে কেও নীজ বাগানে , বাড়ীর ছাদে বা বেলকুনীতে এটা পরীক্ষামুলক ভাবে নিছক সখের বসে হলেও করে দেখতে পারেন । উপকরণ তেমন দামী কিছুই নয় । মাটির বড় দুটি টব , তাতে প্রয়োজন অনুযায়ী সার মিশ্রিত কিছু মাটি । একটিতে টমেটু অন্যটিতে আলুর চারা রোপনের জন্য, যার যার ইচ্ছা ও প্রয়োজন অনুযায়ী এ সংখ্যা বেশীও হতে পারে । তারপর গাছের চারা একটু বড় হলে Tometo and potato লিংকে প্রদত্ত ভিডিওতে প্রদর্শনকৃত গাইড কিংবা নীচের ছবি বিবরণ অনুযায়ী গ্রাফটিং করা যেতে পারে :
১) বাজার/ নার্সারী হতে নীজ পছন্দ অনুযায়ী জাতের টমেটুর চারাগাছ সংগ্রহ কিংবা নীজের টবে তা জন্মানো যেতে পারে
২) মাটির বড় টবে সারমাটিতে আলু চারাগাছ জন্মাতে হবে/ বা বাজার নীজ পছন্দ অনুযায়ী জাত কিনে টবে লাগানো যেতে পারে
৩) টমেটু চারাগাছ থেকে ডাল বা গাছ কেটে নিতে হবে যেমনটি নীচে দেখানো হয়েছে
৪) ডালটিকে আলুগাছে ড্রাফট করার জন্য নীচের মত করে কাটতে হবে ( দুদিকে ৪৫ ডিগ্লী এঙ্গেল হতে হবে ) এবং কাটার পর পাশে দেখানো গ্লাসের মত কোন পাত্রে রাখা পানিতে একটু ভিজিয়ে নিতে হবে ।
৫) এবার আলুগাছের টব থেকে আলু গাছের কান্ডকে মাঝ বরাবর কাটতে হবে নীচের মত করে
(লক্ষ রাখতে হবে আলো ও টমেটু গাছের কান্ডের পুরুত্ব যেন প্রায় সমান সমান হয় )
৬) কাটা আলুগাছে এবার পানির গ্লাসে রাখা কাটা টমেটু গাছটিকে যত্ন করে প্রতিস্থাপন করতে হবে, যেমনটি নীচে দেখানো হয়েছে ( আলু গাছের কান্ডটিকে ধারালো ব্লেড দিয়েএকটু পরিমানমত চিরে নিতে হবে )
৭) আলুগাছে টমেটু গাছটিকে ঠিক মত বসানোর পর একে টেপ দিয়ে নীচের মত মোরাতে হবে
৮) মোরানো শেষ হলে এমন দেখাবে তারপর পর্যাপ্ত আলো বাতাস পায় এমন জায়গায় টব রাখতে হবে ।
৯) তারপর নিয়মিতভাবে পরিমান মত পানি দিয়ে গাছের পরিচর্চা করলে নিম্মের মত একটি গাছে সিজনে ৫০০ এর মত চেরী টমেটুর ( ছবির গাছের মত যদি চেরী জাতীয় টমেটু হয় ) ফলন হতে পারে ।
বিষয়টি সম্পর্কে এখানে শুধু একটি সার্বিক ধারণা দেয়া হয়েছে । স্থানীয় হরটিকালচার বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিলে সঠিকভাবে এই গ্রাফটিং কর্মটা সম্পাদন করা যাবে ও সুফল পাওয়া যাবে ।
উল্লেখ্য যে স্প্রিং ২০১৫ তে টমট্যটুর একমাত্র বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান প্রতিটি টমট্যাটু চারা বৃটিশ বাজারে ১৪.৯৯ পাউন্ডে বিক্রয় করেছে । একটি টমট্যাটুর চারাগাছের এত উচ্চ মুল্য প্রমান করে যে সুফল পাওয়া না গেলে এর দাম নাটকীয়ভাবে পতনের সম্মুখীন হতো ।
ছবি সুত্র : ইন্টারনেট
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই জুলাই, ২০১৬ সকাল ১০:০২