Click This Link

উখিয়ায় বনভূমি রোহিঙ্গাদের নিয়ন্ত্রণে
সরওয়ার শাহীন,উখিয়া
উখিয়া উপজেলা সদরসহ বৃহত্তর ইনানী বনভূমিতে অবৈধ রোহিঙ্গাদের বসতবাড়ী নির্মাণের হিড়িক চলছে। স্ব স্ব বনবিটের কতিপয় বিট কর্মকর্তা হেডম্যান ও ভিলেজারদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহযোগিতায় বর্তমানে উখিয়া ও ইনানীর প্রায় ৯ হাজার হেক্টর বনভুমি দখল করে রোহিঙ্গা ও স্থানীয় ভূমিগ্রাসী চক্র প্রায় ৬ হাজার অবৈধ বসত বাড়ী নির্মাণ করার সত্যতা স্বীকার করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তা ব্যক্তিরা। সূত্র মতে সোনার পাড়া হতে মনখালী বিটের তত্বাবধানে প্রায় ১৮ হাজার হেক্টর বনভুমি কাগজে কলমে সীমাবদ্ধ থাকলেও বাস্তবে তা নেই বলে স্থানীয় সচেতন মহলের অভিযোগ।
জানা গেছে, উপজেলার রাজাপালং ইউনিয়নের মধুর ছড়া, হরিন মারা ,দুছড়ি,কুতুপালং, উখিয়া কলেজ সংলগ্ন এলাকায় বনবিভাগের কর্তাব্যাক্তিদের ম্যানেজ করে চলছে বনজ সম্পদ দখল ও বাড়ি নির্মান। উখিয়া বন বিভাগের কর্মকর্তা- কর্মচারীদের বিরুদ্ধে রয়েছে বনজ সম্পদ বিত্রি“ করার গুরুতর অভিযোগ। তাদের বন অফিসে চাকুরী করার চেয়ে গাছ চোরদের সাথে আড্ডা দিতেই বেশী দেখা যায়। তাছাড়া জালিয়া পালং ইউনিয়নের সোনাইছড়ি গ্রামের অদূরে প্রায় ২ শত একর বনভুমি গাছপালা সাবাড় করে বিরাণভুমিতে পরিণত করা হয়েছে। স্থানীয় একটি প্রভাবশালী পরিবার উক্ত ২ শত একর পাহাড় কেটে মাটি বিক্রি করার ঘটনায় এলাকাবাসীর পক্ষে মোঃ শাহজাহান বাদী হয়ে প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ করেও কোন কাজ হয়নি। বর্তমানে ইনানীর সংরক্ষিত বনভুমি অরক্ষিত হয়ে পড়েছে বলে স্থানীয়রা দাবী করছেন। অপরদিকে সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে অনুপ্রবেশ করা প্রায় ৪ হাজার রোহিঙ্গা ও স্থানীয় ভুমিগ্রাসী চক্র বর্তমানে ইনানীর বিভিন্ন বনাঞ্চল দখল করে অবৈধ বসত বাড়ী নির্মাণ করে বসবাস করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে ইনানী বিট কর্মকর্তা এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে এসব অবৈধ বসতবাড়ী উচ্ছেদ করার প্রস্তুতি চলছে বলে জানান। অপরদিকে ইনানীর পাহাড় কাটা, অবৈধ বালি উত্তোলন পাথর উত্তোলন, কাঠ পাচার, চোরাই কাঠ দিয়ে নৌকা তৈরী সবকিছুতে ইনানী রেঞ্জের এম,এল,এস,এস রফিকুল ইসলাম, বন প্রহরী আহমদ নবী, নজির আহমদ ও ফরেষ্টার মোছলেহ উদ্দিনের সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে জানা গেছে।
এদিকে উখিয়া রেঞ্জরে ৮টি বনবিটের আওতায় প্রায় ২৫ হাজার হেক্টর এর মধ্যে ২০০৮ সাল পর্যন্ত প্রায় ৭ হাজার হেক্টর বনভূমির জায়গা অবৈধ দখলে চলে গেছে বলে বিদায়ী রেঞ্জ কর্মকর্তা গাজী মতিউর রহমান স্বীকার করেছেন। ২০০৯ সালে মায়নমার থেকে আসা প্রায় ৪০ হাজার রোহিঙ্গা স্থানীয় হেডম্যান ভিলেজারদের ম্যানেজ করে প্রায় ২ হাজার বসতবাড়ী তৈরী করে বসবাস করছে বলে স্থানীয় বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে। বর্তমানে স্থানীয় প্রভাবশালী জবর দখলকারী চক্র ও রোহিঙ্গারা সরকারী বন সম্পদের উপর অবাধ লুটপাট চালিয়ে নির্বিচারে গাছ ও পাহাড় কর্তন অব্যাহত রাখার অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় বখতিয়ার মেম্বার জানান রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সংগ্রাম কমিটির পক্ষ থেকে রোহিঙ্গা হটাও দেশ বাচাঁও আন্দোলন শুরু করার পর থেকে পুলিশ প্রশাসন রোহিঙ্গা ধড়পাকড় করে জেল হাজতে প্রেরণ করায় বর্তমানে রোহিঙ্গারা স্বপরিবারে কুতুপালং এলাকা ছেড়ে পালাচ্ছে। রোহিঙ্গারা বিভিন্ন বনাঞ্চলের জায়গা দখল করে বসতবাড়ী নির্মাণ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে উখিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা জানান, অবৈধ স্থাপনার তালিকা করা আছে এবং যত দ্রুত সম্ভব এসব স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে।
: ২০১০-১২-২২ ০৭:১৮:৫৮
Click This Link