তারা ত ফার্মের মুরগি, তাদের ত ক্যাম্পাস ই নাই, তাদের বিশ্ববিদ্যালয় ত মুরগির খোপ। এই ধরনের নেতিবাচক কথা প্রায়ই আমরা প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলে থাকি। অবশ্য তাদের শিক্ষাব্যাবস্থা ও ক্যাম্পাসের চেহারা দখে যে কেউই এই ধরনের মন্তব্য করবে। আর সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কথা না হয় বাদ ই দিলাম। তাদের ত অহংকারে পা ই মাটিতে পরে না। কিন্তু এইবার আমি একটা বাস্তব সত্য বিষয় নিয়ে আপনাদের দৃষ্টি আর্কষন করতে চাই।
প্রায় প্রতি সপ্তাহে ই কোন না কোন প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির কনভকেশন অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকার বিভিন্ন নামী দামী জায়গা, যেমন-বসুন্ধরা কনভেনশন সেন্টার, বঙ্গবন্ধু কনভেনশন সেন্টার সহ বিভিন্ন স্থানে সমাবর্তন অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। আমাদের মহামান্য রাষ্ট্রপতি থেকে শুরু করে দেশের গন্যমান্য ব্যাক্তিরা এই সব অনুষ্ঠানে যোগদান করে এর তাৎপর্য আরও বাড়িয়ে দেয়। পাশকরা শিক্ষার্থীদের উদ্দ্যেশে তারা বিভিন্ন নীতি কথা বলেন। শুনতে ভালই লাগে।
অপর দিকে গত ২৯ নভেম্বর দেশের একটি স্বনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সলর হলেন আমাদের মহামান্য রাষ্টপতি জিল্লুর রহমান। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী রাষ্ট্রপতির হাত থেকেই সমাবর্তন এ সার্টিফিকেট নেয়ার কথা। কিন্তু আমাদের রাষ্ট্রপতি ঐদিন অজ্ঞাত কারনে সমাবর্তন অনুষ্ঠানে আসতে পারেন নাই। আমারা জানি না কি সেই কারন, হয়ত তিনি অসুস্থ বা এর চাইতে ও গুরুত্তর্পুন কোন কাজ ছিল। তিনি তার পরিবর্তে তার প্রতিনিধি হিসেবে শিক্ষামন্ত্রী সাহেবকে পাঠালেন ডিগ্রি প্রাদনের জন্যে। চুয়েটের শিক্ষার্থীরা শিক্ষামন্ত্রির কাছ থেকেই তাদের সার্টিফিকেট গ্রহন করে খুশি থাকল।
কিন্তু আমার প্রশ্ন অন্য জায়গায়। আমরা যারা সচেতন নাগরিক, যারা দেশ নিয়ে ভাবি এবং যারা সরকারী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করেছি বা পাশ করার অপেক্ষায় আছি, তারা সবাই কিন্তু মুখে মুখে বলি প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি কোন ইউনিভার্সিটি ই না। কথায় কথায় আমরা প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির পোলা মাইয়াদের ইনসাল্ট করি। কিন্তু একবার ভেবে দেখুন ত আমরা যতই বিশ্বাস করি না যে প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির শিক্ষা ব্যাবস্থা নিন্ম মানের তবুও ত তারা বুক উচিয়ে আমাদের সামনে বলে তাদের সমাবর্তনে রাষ্ট্রপতি এসেছিল। তারা রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে সার্টিফিকেট নিয়েছে। তার মানে কি দাড়াচ্ছে?? মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছে নিশ্চই চুয়েট থেকে যে কোন প্রাইভেট ইউনিভাসির্টির মুল্য অনেক বেশি। তা না হলে কেন তিনি চুয়েটের সমাবর্তন এ না এসে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে অংশ নেন???
এই থেকে কি আমরা এটা শিক্ষা নিতে পারি না যে, যেখানে দেশের সবোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী রা সরকারী বিশ্ববিদ্যালয় ফেলে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষ্টানে যোগ দেয়, সেখানে আমরা যতই চিল্লাই না কেন তাদের শিক্ষার মান খারাপ, তাতে তাদের কিছুই যায় আসে না। সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের কনভকেশনে আসতে তাদের এত দ্বিধা কেন?? এই একিটি জায়গায় কি প্রাইভেট ইউনিভাসির্টির শিক্ষার্থীরা আমাদের চাইতে এগিয়ে আছে না?? তাহলে কেন আমরা তাদরে ফার্ম বলি, কেন তাদের শিক্ষার মান নিয়ে প্রশ্ন তুলি?? আমাদের কি তাদের কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত না??
দু:খিত প্রাইভেট ইউনিভাসির্টির শিক্ষার্থীরা, আমাদের তোমরা ক্ষমা কর।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, আগামী ৮ ডিসেম্বর খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন। এবং সেখানেও মহামান্য রাষ্ট্রপতি যাচ্ছেন না।