কি হলো আজ ! সবাই দেখি চুপচাপ। কেউ কোন কথা বলছে না।। আবার ঝগড়া হলো নাকি ? কাল রাতেই তো ঝগড়ার বিচারের কাজ মিমাংসিত করলাম। আর তো ঝগড়া হওয়ার কথা নয়। ভাগিনা ভাগনিটা সব সময় ঝগড়া লেগে থাকে কারন একটাই যে সবার বড় তাকে সম্মান করতে হবে। তার কথা মানতে হবে। দাবিটা ভাগিনার,, কিন্তুু এতে ভাগনির আপত্তি আছে,, এ বয়সে কিসের সম্মান,, সে স্কুলে পড়ে,, আমি ও স্কুলে পড়ি। স্কুলের পড়ুয়া ছেলেকে সম্মান করতে পারবো না,, কলেজে উঠলেই তুকে সম্মান করবো এর আগে নয়। ছোটখাটো কথাকাটাকাটি তে যে মারপিট হবে তা আমি জানতাম।। প্রায় নিত্যদিনের স্বভাব, শেষমেষ আমাকেই সমাধান করতে হয়।।
কিরে,, কি হয়েছে তোদের ? প্রতিদিন ঝগড়া করিস। ভালো লাগেনা এসব। মামা বড় ভাই বলে তার কথা মতো চলতে,, আমি কিন্তুু পারবো না। জানেন সাঈদ(ছোট ভাগিনা) কে দিয়ে প্রতিদিন মশারি টানায়, পানি আনায়,, এমনকি গায়ের শার্টিও নিজে পড়তে চায়না,, সাঈদ গায়ে দিয়ে দিলে তারপরে পরে। সাঈদ আমার কাছে প্রতিদিন বিচার দেয়, সে তার কাজ করতে করতে এখন ব্যাশ ক্লান্ত। তাই নাকি ! এ-তো খারাপ জিনিস। কিন্তুু আমি তো কোন দিন দেখিনি। আপনি বাড়িতে থাকলে এসব করে না। আপনি অফিসে চলে গেলেই তার আধিপত্তের বিস্তার চালু হয়। আমি জানি,, একটু কিছু হলেই অনেক লম্বা করে কাহিনী বানাতে ওস্তাদ আমার ভাগ্নি। তবে কেউ কারো থেকে কম নয়। এখন বিচার শুরু হবে। সবাইকে ডাকলাম,, বললাম আমাকে মানবে কে কে,, হাত তুলো। তিন জনেই তুললো। আপা পাশে থেকে তার হাতটাও তুললেন। সবাই এক সাথে হেসে উঠলো। মামা, দেখো আম্মুও হাত তুলেছে। আমি হাসতে গিয়েও গিলে ফেললাম। এ অবস্থায় হাসবো না, মনে মনে তাই স্থির করলাম। হাসি গিলে ফেলার মন্ত্র আছে আমার। তাই চোখ রাঙ্গিয়ে বললাম। আমাকে যদি মানো তাহলে আমি যা বলবো তাই হবে। কেউ কাউকে সম্মান করতে হবেনা। সবাই তোমাদের নিজের কাজ নিজে করবে। কেউ কাউকে অর্ডার দেওয়া চলবেনা। পড়াশুনাই মন দিতে হবে। যাও এখন উপড়ে পড়তে যাও। ভাগিনাটা কিছু না বলে সবার আগেই উঠে গেল। কিছু রাগ ছিল চোখে, হয়তো অাধিপত্তের রাজ্য হারিয়ে ফেলেছে। যাই হউক সবাই আমাকে মেনে নিতে হা জয়যুক্ত করে পড়তে চলে গেল। কিছুক্ষন পর হঠাৎ সাঈদ উপরে চিৎকার করে কাঁদতে শুরু করলো। আমি তাড়াহুড়া করে গিয়ে দেখি নিচে প্লাষ্টিকের একটা ভাঙ্গা স্কেল পড়ে আছে। বড় ভাগিনাটা ভেঙ্গে ফেলেছে। মেজাজ চরম হয়ে গেল, জিজ্ঞাস করলাম কেন ভাঙ্গলে?আমার পিছন থেকে ভাগনিটা বলে মামা, সাঈদ তার মুখটা বড় ভাইয়ের কাছে নিয়ে শুধু বলছিলো দেখলে - মামা সঠিক বিচার করেছে আর অর্ডার চলবে না । তাতেই জিদ করে সাঈদের স্কেলটা ভেঙ্গে ফেলেছে। আমি আপনাকে বলেছিলাম না এবারতো নিজেই দেখলেন।। তুই পড় তুকে কিছু জিজ্ঞাস করেছি ? তুই কথা বলিস কেন ? এই আমার দিকে তাকা কেন ভাঙ্গলি স্কেল টা। কিছু বলে নাই বলে, রাগ করে কষে দু'গালে দু চর বসালাম। কাল নিজের টাকা দিয়ে সাঈদকে স্কেল কিনে দিবি। না হয় আরো মার খাবি, কিছুক্ষণ শাসিয়ে নিচে চলে আসলাম। এগুলো তো গতকালের কথা,, কিন্তুু আজ কি হলো !! আম্মাকে দেখছি চোখ রাঙ্গানো, আক্রমণাত্মক চেহেরা, মারবে নাকি আমাকে। কিন্তুু আমি কি করলাম ? কোন অঘটনা।। ভাবলাম, কাল ভাগিনাকে মারলাম তাই জ্বর টর হলো না তো,, আম্মা আবার ওদের গায়ে হাত তুললে ভীষন রাগ করেন। এমন কিছু কি ? ভাগ্নিটা একটু আরাল করে ডেকে নিয়ে বলে, মামা আপনি শেষ। বড় ভাই নানুকে আপনার ল্যাপটপ থেকে আপনার মদ খানার সব ছবি দেখিয়েছে। নানু সারা দিন কান্না করছে ।কি বলসি এ সব ! যে ছেলেটা সিগারেট খাই না, সে কবে থেকে মদ খেতে শিখলো। তাই তো বলি, মাঝে মাঝে অফিস থেকে এসে বাসায় কিছু খায় না। আমার ছেলে শেষ। খারাপ মানুষের সাথে চলাফেরা শুরু করে দিয়েছে। হায়রে কপাল।। আমি কিন্তুু নানুকে বলেছি, এগুলো মদ না, বিয়ার। বিয়ার খেলে কিছু হয়না। যাদের সাথে খাচ্চে দেখো সবাই মামার কলিগ। তুমিতো সবাইকে চিনো ওনারা এক সাথে চাকরি করে। আম্মু ও বলেছে কিন্তুু কিছুই শুনেন নি। ছবিগুলো তো পাসওয়ার্ড ছিলো ?? বড় ভাই পাসওয়ার্ড জানে গত রাতে তাকে মারলেন না,, হ ! তাই সব ছবি ও ভিডিও নানুকে দেখিয়েছে । কথা বলার ভাষা নেই। সত্যর বহিঃপ্রকাশ হবেই। হারাম খাবার হালাল হবে কি করে, বিয়ার কি হারাম নয়। অনেক সময় লাগলো মাকে বুঝাতে, তবে ভালো ভাবে নেন নি ব্যাপারটি,, ছোট ছোট এই খাবার গুলো একদিন নেশা হয়ে যাবে। তখন মা, বাবা, ভাই, বোন সবাই বড় জিনেসের কাছে ছোট হয়ে যাবে। হারাম খাবার আপন হয়ে যাবে। সব উপর ওলার ইচ্ছা সব কিছুই তার কাছে পুনঃনির্ধারিত । তবে আর কখনো ছবি সঞ্চয় করবো না, মাঝে মাঝে ছবিও কথা বলে। মামা বড় ভাইকে কিন্তুু ছাড়বেন না তাকে শাস্তি দিতে হবে। আমি আছি আপনার পাশে ।। ভাগ্ননি আকুল আবেদন রাখতেই হবে।।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই নভেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১:৩৩