নিউমার্কেট কাঁচাবাজারে গিয়ে দেখা গেল, শীতের সবজিগুলো বিকোচ্ছে দেদার। দেশের দূরদূরান্ত থেকে আসা কৃষকের মাঠের সবজিগুলো বাজারের ব্যাগে চড়ে ঠাঁই নিচ্ছে নগরবাসীর রসুইঘরে। নতুন আলু আর ক্যাপসিক্যাম কিনতে নিউমার্কেটে এসেছিলেন পলাশীর বাসিন্দা রুহুল আনসার। তিনি জানালেন, তাজা সবজি কিনতে হলে সকাল সকাল বাজারে চলে আসাটাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে।
তবে নগরের বেশ কিছু বাজার আছে, যেগুলো আবার কেবল সকালেই বসে। এসব বাজারে কম দামে সবজি কেনা যায়। মিরপুর শাহ আলী মাজার এলাকা থেকে মিরপুর ১ নম্বর যাওয়ার রাস্তায় বোধহয় শহরের সবচেয়ে বড় সবজির বাজারটা বসে। আর এখানকার বিক্রেতারা কিন্তু নিজেরাই কৃষক। তাঁরা সরাসরি জমি থেকে শীতের মুলোটা, বাঁধাকপিটা, ঘরের চালের লাউটা, মাঠের বেগুনটা তুলো নিয়ে আসেন। কত পদের সবজি যে আছে বাংলাদেশে, তা এখানে না এলে বোঝা যাবে না বলে জানালেন সাভারের হরিণধরা থেকে সবজি বিক্রি করতে আসা রহমান বেপারি। আসলেই তাই। রাস্তার দুই ধারে যত দূর চোখ যায়, কেবল লাল-সবুজ রঙের মেলা। ভ্যানের ওপর সাজানো লাউশাক, পালংশাক, লালশাক, পুঁইশাক, ডাঁটাশাকের রাজ্য। নিচে ঝুড়িতে যেন আলু, পটল, শিম, বেগুন, সবুজ কুমড়া, ঢ্যাঁড়স, করলার মেলা বসেছে। কী নেই এখানে। থানকুনিপাতা, লেটুসপাতা, তেলাকুচাপাতা, নিমপাতা থেকে শুরু করে কচুশাক, বেতশাক, সুরসুরিশাকের মতো দুর্লভ শাকের দেখা মিলবে এই বাজারে। তাই আসল সবজির মজা পেতে চাইলে ভোর থাকতে থাকতেই মিরপুরের পথে রওনা দেওয়াটা বুদ্ধিমানের কাজ হবে।
কারওয়ান বাজারও কম যায় না রকমারি সবজি দেখাতে। ট্রাকে চেপে আসা সবজিগুলো সকাল থাকতে থাকতেই বিলি হয়ে যায় নগরের বিভিন্ন ছোটখাটো বাজারে। তবে সাজিয়ে-গুছিয়ে শীতের সবজি বিক্রিতে পিছিয়ে নেই মতিঝিল কলোনির কাঁচাবাজার, হাতিরপুল বাজার, রামপুরা বাজারও। এ ছাড়া শীতের সময় সাত-সকালে রাস্তার ধারে অনেককেই কাঁচা সবজি বিক্রি করতে দেখা যায়। চলতি পথে কিনে নিতে পারেন কয়েক আঁটি পালংশাক। আগোরা, নন্দন, স্বপ্ন—এ রকম বড় চেইন শপগুলোতেও গিয়ে দেখতে পারেন শীতকালীন সবজির রকমারি। স্থানভেদে দামে কিছুটা তারতম্য হলেও নগরে এখনো বেশ সুলভ শীতকালীন সবজির বাজার। তাই রসনাটাকে তৃপ্ত করার সঙ্গে সঙ্গে পুষ্টিমানের জন্যও এই কটা দিন উপভোগ করা যেতে পারে শীতের সবজি।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই জানুয়ারি, ২০১১ রাত ৩:৪৯