somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

মোহাম্মদ আলী আকন্দ
আমি ময়মনসিংহ জেলা স্কুল থেকে ১৯৭৭ সালে এস.এস.সি এবং আনন্দ মোহন কলেজ থেকে ১৯৭৯ সালে এইচ.এস.সি পাশ করেছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৮৪ সালে এলএল.বি (সম্মান) এবং ১৯৮৫ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএল.এম পাশ করি।

অবাস্তব থেকে পরাবাস্তব পররাষ্ট্রনীতি

১৫ ই জুলাই, ২০২৪ রাত ১১:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

"ব্যাপক কৌশলগত সহযোগিতামূলক অংশীদারিত্ব" প্রতিষ্ঠার বিষয়ে ১১ জুলাই ২০২৪ চীন এবং বাংলাদেশ একটি যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করেছে।

এই বিবৃতির কোন কোন অংশ শুধুমাত্র অবাস্তব না একেবারে পরাবাস্তব। কোন কোন বাস্তবতাকে একেবারে নতুনভাবে দেখার চেষ্টা করা হয়েছে। বাস্তবতা বর্জিত নেতৃবৃন্দের অবচেতন মন, স্বপ্ন, এবং কল্পনার জগতকে গুরুত্ব দিয়ে নতুন পররাষ্ট্রনীতির ধারা সৃষ্ট করার চেষ্টা করা হয়েছে। এই বিবৃতির কোন কোন কথা অদ্ভুত, অযৌক্তিক, এবং রহস্যময়, যা সাধারণ বাস্তবতার ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করে এবং নতুন অর্থ ও অভিজ্ঞতার দিগন্ত উন্মোচিত করেছে।

এই বিবৃতির তৃতীয় দফায় বলা হয়েছে, "দুই পক্ষ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ভবিষ্যৎ উন্নয়নের জন্য একসঙ্গে পরিকল্পনা করতে এবং চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ককে আরো নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার জন্য ২০২৫ সালে চীন-বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৫০তম বার্ষিকী উদযাপনের সুযোগ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।" (The two sides decided to take the opportunity of celebrating the 50th anniversary of the establishment of China-Bangladesh diplomatic relations in 2025 to plan together for the future development of bilateral ties and take the China-Bangladesh relationship to another new height.)

চীন-বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্ক কবে স্থাপিত হয়েছে?

বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর জাতিসংঘের সদস্য হওয়ার জন্য আবেদন করলে চীন ভেটো প্রদান করে বাংলাদেশকে সদস্য হতে বাধা দেয়। এটা ছিল চীনের প্রথম ভেটো। ১৯৭৪ সাল পর্যন্ত চীন বার বার ভেটো দিয়ে বাংলাদেশকে জাতিসংঘের সদস্য হওয়া থেকে বিরত রাখে। ফলে যুদ্ধ বিধ্বস্ত বাংলাদেশের পক্ষে জাতিসংঘের সাহায্য সহায়তা লাভ অনেক অসুবিধার সম্মুখীন হয়। চীনের স্বীকৃতি আদায়ের জন্য শেখ মুজিবুর রহমান আপ্রাণ চেষ্টা করেন, কিন্তু তিনি ব্যর্থ হন। তিনি চিনে নিযুক্ত পাকিস্তানী রাষ্ট্রদূত খাজা মোহাম্মদ কায়সার, কবি ফয়েজ আহমেদ প্রমুখের মাধ্যমেও চীনের স্বীকৃতি জন্য চেষ্টা করেন। শেষ পর্যন্ত আমেরিকা অনেক বুঝিয়ে শুনিয়ে চীনকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ভেটো দেয়া থেকে বিরত রাখে। ফলে ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশ জাতিসংঘের সদস্য পদ লাভ করে।

শেখ মুজিবুর রহমানেই শত চেষ্টা সত্ত্বেও এমন কি জাতিসংঘের সদস্য পদ লাভ করার পরেও চীন বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয় নাই। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট শেখ মুজিবুর রহমান নিহত হওয়ার পর চীন ৩১ আগস্ট বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়। কেন চীন ১৫ আগস্টের ঘটনার পর বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিল তা সবার কাছে পরিষ্কার।

১৯৭৫ সালের ৩১ আগস্ট স্বীকৃতি দিলেও চীন বাংলাদেশের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করে ১৯৭৬ সালের জানুয়ারী মাসে। অর্থাৎ বাংলাদেশের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের ব্যাপারেও চীনের অনীহা ছিল। তৎকালীন বাংলাদেশ সরকার অনেক দেন দরবার করে চীনের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করতে সক্ষম হন।

আগামী বছর এই মূল্যবান কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৫০তম বার্ষিকী উদযাপন করার সিদ্ধান্ত যৌথ ঘোষণার মাধ্যমে জানান দেয়া হয়েছে। এটা নাকি বাংলাদেশের বাস্তববাদী কূটনীতি। এটাকে বাস্তববাদী কূটনীতি বলে না, এটা একটি পরাবাস্তব কূটনীতি।

সূত্র:
১. Ministry of Foreign Affairs of the Peoples' Republic of Chian
https://www.fmprc.gov.cn/eng/wjdt_665385/wshd_665389/202407/t20240711_11451960.html

২.China's First U. N. Veto Bars Bangladesh
The New York Times; August 26, 1972
https://www.nytimes.com/1972/08/26/archives/chinas-first-un-veto-bars-bangladesh-soviet-union-and-india-are.html

৩. UNITED NATIONS: China’s First Veto
Time, September 4, 1972
https://time.com/archive/6844248/united-nations-chinas-first-veto/

৪. International Affairs Review
https://internationalaffairsreview.com/2020/08/21/should-china-apologize-to-bangladesh/
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই জুলাই, ২০২৪ রাত ১১:২১
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পাগলের প্রলাপ' যখন সত্যি হয়......

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:১৯

'পাগলের প্রলাপ' যখন সত্যি হয়......
[/সব

আমার এক মামা ততকালীন পূর্ব পাকিস্তানে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে জব করতেন হোটেলের শুরু থেকেই। সেই মামা মাঝেমধ্যে আমাদের জন্য হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল থেকে মুখরোচক কেক, পেস্ট্রি ছাড়াও বিভিন্ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তার চাওয়া পাওয়ার কিছু ছিল না, তবুও

লিখেছেন খাঁজা বাবা, ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:৩২



শেখ হাসিনার নাকি বায়ক্তিগত চাওয়া পাওয়ার কিছু ছিল না। শেখ মুজিবের বেয়ে নাকি দুর্নীতি করতে পারে না। সে এবং তার পরিবার যে হাজার হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি করতে পারে... ...বাকিটুকু পড়ুন

দেশের বর্তমান পরিস্থিতি সংক্রান্ত বিষয়ে সামু কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি

লিখেছেন সাড়ে চুয়াত্তর, ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৩:৪৬

ছাত্র-জনতার সম্মিলিত অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গত ৫ আগস্ট, ২০২৪ তারিখে ফ্যাসিস্ট হাসিনা এবং তার দলের পতন ঘটানো হয়। এটা আমাদের একটা জাতীয় গৌরবের দিন। এটা নিয়ে কারও সন্দেও থাকলে মন্তব্যে লিখতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জ্বীনভুতে বিশ্বাসী বাংগালী ও ঢাকায় ৫০ হাজার ভারতীয় একাউন্টটেন্ট

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৩




ব্লগার সাড়ে চুয়াত্তর ব্লগে লিখেছিলেন যে, উনার ভগ্নিপতিকে জ্বীনেরা তুলে নিয়ে গিয়েছিলো; ২ সপ্তাহ পরে ভগ্নিপতিকে দিয়ে গিয়েছে; এই লোক, সামুর কাছে আমার বিরুদ্ধে ও অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

বেছুর নিজস্ব একটি জ্বীন ছিলো!

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ৮:২৪



আমাদের গ্রামের খুবই সুশ্রী ১টি কিশোরী মেয়েকে জংগলের মাঝে একা পেয়ে, প্রতিবেশী একটা ছেলে জড়ায়ে ধরেছিলো; মেয়েটি ঘটনাকে সঠিকভাবে সামলায়ে, নিজের মাঝে রেখে দিয়েছিলো, এটি সেই কাহিনী।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×