অনেকে বলে শিক্ষকের মাইর না খেলে পোলাপান মানুষ হবেনা, তাহলে এইযে লক্ষ লক্ষ ঘুষ খোর, চোর চাট্টা, টাকা পাচার কারী, প্রায় সব সেবা মূলক পেশা তেই ঘুনে ধরা, এরা সবাই তো মাইর খেয়ে মানুষ হয়েছে! এখন বলেন মাইর খাওয়াইয়া কেমন মানুষ বানাইলেন যে ঘুষ ছাড়া কোনো ভাবেই আগাইতে পারেন না? আপনি শিশু কে মারবেন সে বড় হলে অমানবিক হবে, কারণ ওরা যাই দেখে তাই শিখে, আপনি মানবিক গুণাবলী দেখাবেন সেও বড় হয়ে তাই দেখবে। এবার তাহলে কিভাবে শিশুদের মানুষ করবেন? ব্যপার টা সিম্পল, একজন দোষ করবে পুরো ক্লাস কে সেই শাস্তি দেবেন, কিভাবে সম্ভব?
পুরো ক্লাস ২০ মিনিট চুপ থাকবে একভাবে বসে, উন্নত বিশ্বে এটাই করা হয়। একজনের দোষে সবাই শাস্তি টা পায়। এরপরেও একই শিশু আবার একই কাজ করলে গার্ডিয়ান ডাকাবেন, বারংবার একই রকম হলে টিসি দেবেন দরকার পরে, অন্য স্কুলে ভর্তীর ঝামেলায় বাবা মায় ই নিজের শিশুর আরও ভালোভাবে দেখাশোনা করবেন।
আমাদের বাবা মায়েরা স্কুলে ভর্তীর সময় বলে যায়, টিচার মাংশ আপনার হাড্ডি আমার, ঠিক মত না চললে মারবেন ইচ্ছা মতন।
আসলে এসব বাবা মা খুবই অলস, বাচ্চা কে অ আ শিখিয়ে দিয়েই এরা টিচারের হাতে তুলে দেয়। যার ফলে বাচ্চা পরিবার থেকেও কিছু শিখতে পারেনা। আমি এমনও বাবা মা দেখেছি, মাস্টার্স পাশ সত্যেও নিজের ক্লাস ফোরের বাচ্চা কে সময় দেয় না। বাসায় টীচার, বিকেলে কোচিং সারাদিন স্কুল, মানে প্যারেন্টস যতটুকু না পরিশ্রম করে তারচেয়ে বেশী পরিশ্রম একটা বাচ্চাকে দিয়ে করায়, না আছে খেলার মাঠ, না রাখে খেলার জন্য পর্যাপ্ত সময়।
অনেকে বলে ইউরোপ আমেরিকার সাথে আমাদের তুলনা দিলে হবেনা, কেন হবেনা ভাই? ওরা কি জানোয়ার? ওরাও তো আমাদের মতন মানুষ।
অনেকে আরও বলে এখন টিচার রা মারেনা বলে কিশোড় গ্যাং এর উতপত্তি, না কথাটা ভুল, আমি যেখানে থাকি প্রায় ৬ থেকে ৭ বছর আগে কিশোর অপরাধী দের কারণে সন্ধ্যার পরে মোবাইল নিয়ে ঘর থেকে বের হতে পারতাম না। কিন্তু এখন আর এই সমস্যা নাই, রাতের ৩ টা বাজেও চলাচল করতে পারি, তার কারণ প্রশাসন এর দিন রাত টহল থাকে। কিশোর গ্যাং কন্ট্রোল করার দায়িত্ব পুলিশের, শিক্ষকের না। এবং পুলিশ চাইলে তা কন্ট্রোলে থাকে তার প্রমাণ আমার এলাকা।
আর সবচেয়ে বড় কথা বাংলাদেশে ছাত্র ছাত্রী পেটানো মোটেই কমেনাই, প্রতিদিন ই পত্রিকায় খবর আসে, হাসপাতালে আর আইসিইউ তে ভর্তীর খবর। যেহেতু পেটানো বন্ধ হয় নাই তবে কেন কিশোর গ্যাং এর এতো উতপাত? এর জন্য দায়ী প্রশাসন আর রাজনৈতিক ছত্র ছায়া।
এবার আমার অভিজ্ঞতায় আসি বাংলাদেশে কিভাবে পড়ানো হয়,
এখানে বোঝানোর কোনো বালাই নাই- কালে ভদ্রে নতুন কোনো টিচার আসলে সে প্রথমে খুবই ভালো মতন বুঝিয়ে পড়ানোর চেষ্টা করেন এ কিন্তু একটা সময় বায়োজেষ্ঠ্য টিচার দের বুলিং এর কবলে পড়ে সেও শুধু মুখস্থের ওপরে চলতে থাকেন।
৪৫ মিনিটের ক্লাসে যদি বাড়ির কাজ কে করেছে আর কে করেনাই, সেটা চেক করা, শুধু পৃষ্ঠা টা দেখা করেছে কি করেনাই। ভুল ভ্রান্তি দেখার সময় নাই। ১৫ মিনিট চলে গেলো যারা আনেনাই তাদের মারতে মারতে, তারপরে বাকী ১৫ মিনিট গেলো ক্লাস ক্যাপ্টেনের লেখা নাম নিয়ে বিচার করতে করতে, তারপরে বাকী ১৫ মিনিট স্যারে অমুক একটা পৃষ্ঠা থেকে মিনমিনিয়ে কিছু বলে বাড়ির কাজ দিয়ে দিলো আর বাকী সময় চেয়ারে ঝিমালো। এভাবে পড়ালে লাভ নাই। যতই মারেন, মুখস্থ লিখে এ প্লাস পাবে বড় হয়ে অমানবিক আর চোর হবে।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:৫৫