somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রাজনীতিতে 'ধর্ম, জাতীয়তাবোধ, মানবতা, আদর্শ, দেশপ্রেম ও অন্যান্য বিষয়ের' ন্যাক্কার জনক ব্যবহার আর আমরা 'হুজুগে বাঙ্গাল'

১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:২৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

'রাজনীতিতে ধর্মের অবদান থাকতে পারে, কিন্তু ধর্মকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক দল হতে পারে না' এমন একটা কথা বলেই আলেম, ওলামা তথা কাঠমোল্লাদের ফাপরে পড়লেন তারেক রহমান। তওবা না করলে তাকে বাংলাদেশে ঢুকতে দেওয়া হবে না বলে ঘোষণা করেছে 'নাস্তিক মুরতাদ' প্রতিরোধ কমিটি। এই কমিটিডা নিয়া আমার বিশেষ জায়গায় বিশেষ চুলকানী আছে। সাথে আরো একখান আছে। বুইরা ভাম আহম্মক শফির দল। আসলে তেনারা হলেন, আল্লাহ প্রদত্ত, ‘আস্তিকতা’ আর ‘নাস্তিকতার’ সনদ প্রদানকারী, একমাত্র দেশীয় থুক্কু দো- জাহানের এজেন্ট (অবশ্যই আল্লাহর সিল স্বাক্ষর সহ)। ঠিক যেন ‘বি আর টি এ’র মত। যদিও মাঝে মাঝে কতল করার মত ছোট খাট শাস্তি ও (গ্রাম আদালতের মত) প্রদান করার এখতিয়ার রয়েছে এই বিশেষ কমিটির। আমার ব্লগার 'অগ্নি সারথি' নামডাও এদের হিট লিস্টে আছিল এক সময়। বিশেষ করে হেপাচুতিয়াদের। মাঝে মাঝে এদের কিছু ‘বৈধ’ সন্তান, আমার ব্লগে এসে, 'ফি নারে জাহান্নামী বিন খালিদিন লিখে রেখে চলে যেত' সাথে সাথে মেইলে দিত কতল করার হুমকি। সমসাময়িক সময়ে আহম্মক শফির দল নাস্তিকতার সার্টিফিকেট দেয় কিনা জানা নেই তবে এটা জানি যে তারা এখন, আওয়ামী আস্তিকতাবাদের সাথে একাত্বতা ঘোষনা করেছেন।
আওয়ামী আস্তিকতাবাদ!!! বর্তমান সময়ে আল্লাহ, খোদা, ইমান, আমল, ধর্ম, ধার্মিকতা ইত্যাদি সকল মানবিক বিষয়কে দলীয় করন করা হয়েছে। রয়েছে আওয়ামী আস্তিকতাবাদ, জাতীয়তাবাদী আস্তিকতাবাদ, বাম দলীয় নাস্তিকতাবাদ, সাম্প্রদায়িকতাবাদ, আল্লাহর দল, ইসলামের দল ইতাদি ইত্যাদি ইত্যাদি।
এটা আসলে খুব বিশাল একটা রাজনীতি। যেখানে জনমত তথা একই মত তৈরি করে মানুষের একত্রিততা অনেক বেশি জরুরী হয়ে পড়ে (রাজনৈতিক দল) আর সেই একত্রিততায় আসে সফলতা, ব্যার্থতা (সরকার গঠন, বিরোধী দল)। আর যখন একই মত তৈরিতে প্রতিযোগীতা থাকে তখন বিষয়টা আরো বেশি জটিল হয়ে ওঠে। প্রশ্ন এসে যায় কালেক্টিভনেসের। ব্যাক্তিক পর্যায়ের চিন্তা গুলোকে জোড়া দিলে কালেক্টিভনেস চর্চা করা যায় না (ব্যাক্তি ছাড়া কালেক্টিভনেস সম্ভব নয়, স্বীকার করছি) । তখন এমন কিছু বিষয়ের দিকে দৃষ্টিপাত করা হয় যেগুলোর চিন্তা চেতনায় অনেক মানুষ একই রকম। এর মধ্যে ধর্ম, জাতীয়তাবোধ, মানবতা, আদর্শ এই বিষয় গুলো উল্লেখযোগ্য। এগুলো এমন বিষয় যেগুলো মানুষকে একটা নির্দিষ্ট চিন্তার/ ভাবনার মধ্যে সীমিত রেখে ধারনকারী সকলকে এক কাতারে নিয়ে আসে।
দেশের রাজনৈতিক দল গুলোর আসলে এমন কোন গুন বা সফলতা নেই যা তার গুনে নিজস্ব একটা কালেক্টিভনেস তৈরি করবে। আর এই ব্যার্থতায় তারা দ্বারস্থ হচ্ছে ধর্ম, জাতীয়তাবোধ, মানবতা, আদর্শ, দেশপ্রেম এই বিষয়গুলোর উপর, যেগুলো অনেক মানুষ একইসাথে একই রকম ভাবে চর্চা করে। এগুলোকে তারা একটা টুল তথা পন্য হিসেবে ব্যবহার করা শুরু করেছে। গ্রামসীর হেজেমনিকে এখানে টেনে নিয়ে আসা যেতে পারে। তারা শুধু এটা ব্যবহার করেই খান্ত হচ্ছে না বরং তাদের মতধারার বাইরে যারা, তাদেরকে তারা সেই টুল তথা পন্যের আঙ্গিকে (ধর্ম, জাতীয়তাবোধ, মানবতা, আদর্শ) চিত্রায়ন করছে। বিষয়টা এমন যে, জামাত না করলে তার ঈমান নেই। আওয়ামীলীগ না করলে রাজাকার আর করলে ভারতের দালাল। বি এন পি করলে পাকি প্রেমী আর না করলে ভারতের দালাল। হেপাজত বিরুধী মানে নাস্তিক।
১। ভোট দিবেন পাল্লায়, ভাল করবে আল্লায়- জামায়াত
২। হাতে মদের গ্লাস, মুখে বিসমিল্লাহ। বিদেশী বেগানা পুরুষের সাথে উল্লাসরত বি এন পি নেত্রী খালেদা জিয়া।– আওয়ামীলীগ
৩। আওয়ামী লীগে ভোট দিলে মসজিদে মসজিদে উলুদ্ধনী শুরু হবে- বি এন পি
৪। ৬৮ হাজার গ্রাম বাচলে, বাংলাদেশ বাচবে- জাতীয় পার্টি
উপরোক্ত চারটি নির্বাচনী প্রচারনা, কোন এক নির্বাচনের আগে দেশের প্রধান চারটি দলের। চারটা প্রচারনাতেই একটা বিষয় উল্লেখযোগ্য যে তারা কখনোই ব্যাক্তিক কোন বিষয়কে ইন্ডিকেট করেন নি। তাদের টার্গেট বিশাল একটা কমিউনিটি।
আমার এসব হযবরল উপাস্থাপনার মূল কারন হল একটা বিষয় সামনে নিয়ে আসা। সেটা হল ‘বিকল্প’ এবং ‘ব্যার্থতা’। আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোর নিজস্ব এমন কোন গুন নেই যেটাকে সামনে রেখে মানুষ কালেক্টিভনেস তৈরি করবে, তারা ব্যার্থ আর এই ব্যার্থতার বিকল্প হিসেবে খুব ন্যাক্কারজনক ভাবে ব্যাবহার করে যাচ্ছে ধর্ম, জাতীয়তাবোধ, মানবতা, আদর্শ এই বিষয়গুলোকে। তারা এসব ব্যবহার করার সাথে সাথেই দু একটি দল কিন্তু নিজেদের কিছু আদর্শ জাহির ও তার চর্চার চেষ্টা করে যাচ্ছে। যেমন- আওয়ামী লীগের জাতির পিতা আর বিএনপির স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমান। জাতির পিতা আর স্বাধীনতার ঘোষক দুটো কম্পোন্যান্টের মধ্যে বিরোধ থাকার কারনে তা ঠিক ভাবে স্ট্যাবলিশ হতে পারছেনা এবং আরো অনেক বিষয় রয়েছে।
যাই হোক, দেশে সুস্থ ধারার রাজনীতির চর্চা হোক ধর্ম, জাতীয়তাবোধ, মানবতা, আদর্শ ইত্যাদির নেতিবাচক ব্যবহার বন্ধ হোক। দেশের মানুষ হুজুগে বাঙ্গাল ট্যাগিং থেকে বের হয়ে আসুক এই কামনা থাকল সর্বদা।
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মত প্রকাশ মানে সহমত।

লিখেছেন অনুপম বলছি, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:২৭

আওয়ামী লীগ আমলে সমাজের একটা অংশের অভিযোগ ছিলো, তাদের নাকি মত প্রকাশের স্বাধীনতা নাই। যদিও, এই কথাটাও তারা প্রকাশ্যে বলতে পারতেন, লিখে অথবা টকশো তে।

এখন রা জা কারের আমলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আত্নমর্যাদা!

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৪৩

রেহমান সোবহান একজন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। তার বাড়ি থেকে বিদ্যালয়ের দূরত্ব প্রায় ৬ কিলোমিটার। রেহমান সাহেব এমন একটি বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতেন যা খুব নির্জন এলাকায় অবস্থিত এবং সেখানে যাওয়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাঁঠালের আমসত্ত্ব

লিখেছেন বিষাদ সময়, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭

কাঁঠালের কি আমসত্ত্ব হয় ? হয় ভাই এ দেশে সবই হয়। কুটিল বুদ্ধি , বাগ্মিতা আর কিছু জারি জুরি জানলে আপনি সহজেই কাঁঠালের আমসত্ত্ব বানাতে পারবেন।
কাঁঠালের আমসত্ত্ব বানানের জন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

ট্রাম্প বলেছে, বাংলাদেশ পুরোপুরি এনার্খীতে, তারা মাইনোরিটির উপর অত্যাচার করছে।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৬



৩ দিন পরে আমেকিকার ভোট, সাড়ে ৬ কোটী মানুষ ভোট দিয়ে ফেলেছে ইতিমধ্যে; ট্রাম্পের জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা শতকরা ৫১ ভাগ। এই অবস্হায় সনাতনীদের দেওয়ালী উপক্ষে ট্রাম্প টুউট করেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। অ্যাকসিডেন্ট আরও বাড়বে

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৯



এরকম সুন্দরী বালিকাকে ট্র্যাফিক দায়িত্বে দিলে চালকদের মাথা ঘুরে আরেক গাড়ির সাথে লাগিয়ে দিয়ে পুরো রাস্তাই বন্দ হয়ে যাবে ।
...বাকিটুকু পড়ুন

×