হবিগঞ্জ নার্সিং ইনস্টিটিউট ইনচার্জের পুত্র কর্তৃক প্রশিক্ষণরত ছাত্রীদের উত্যক্ত, ছাত্রীদের ব্ল্যাকমেইল করে অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনসহ মা-পুত্রের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ করেছে ছাত্রীরা। দিনভর নাটক শেষে রাতে সিভিল সার্জন বরাবর একটি অভিযোগ দায়ের করে প্রশিক্ষণরত ছাত্রীরা। অনাকাক্সিক্ষত ঘটনায় নার্সিং ইনস্টিটিউটের ছাত্রীদের মধ্যে চরম উত্তেজনা ও ক্ষোভ বিরাজ করছে। এ নিয়ে নার্স সুপারভাইজার ও ছাত্রীদের পরস্পর বিরোধী বক্তব্য পাওয়া গেছে। আর সুপারভাইজার নিজ পুত্রকে বাঁচাতে বিভিন্ন মহলে দৌঁড়ঝাপ শুরু করেছেন।
অভিযোগে প্রকাশ, হবিগঞ্জ নার্সিং ইনস্টিটিউটের ইনচার্জ সুপার উম্মে কুলসুমের পুত্র কামরুল ইসলাম মায়ের দাপটে অবৈধভাবে নার্সছাত্রীদের বিভিন্ন ক্লাস নেয়। ক্লাস নেয়ার সুবাদে সে ছাত্রীদের বিভিন্ন প্রলোভন দেয় ও কৌশলে সখ্যতা গড়ে তোলে। প্রায় সময়ই কামরুল ইসলাম ইনস্টিটিউটের ৩য় তলায় কম্পিউটার ল্যাবে ছাত্রী নিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয় বলে অভিযোগ করেছে ছাত্রীরা।
সম্প্রতি কামরুল ইসলাম ইনস্টিটিউটের ছাত্রীদের উত্যক্ত করে আসছে। সর্বশেষ গত মঙ্গলবার গভীর রাতে কামরুল ইসলাম এক ছাত্রীকে বিভিন্ন প্রলোভন দিয়ে আমোদ ফূর্তিতে মেতে উঠে। ছাত্রীর সহপাঠিরা তাকে ওই রুমে দেখতে না পেয়ে খোঁজাখুঁজি শুরু করে। গভীর রাতে নিচতলায় একটি বাথরুমে কামরুল ইসলাম ও ছাত্রীকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখতে পেয়ে তাদের আটক করা হয়। কিন্তু কামরুল ইসলামের মা ইনচার্জ সুপার হওয়ার কারণে সে রক্ষা পায়। বিষয়টি নিয়ে গত দু’দিন নার্সিং ইনস্টিটিউটে চলে চরম উত্তেজনা ও ক্ষোভ। গতকাল দিনভর প্রশিক্ষণরত ছাত্রীদের নিয়ে সুপার উম্মে কুলসুম সমঝোতার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। গতকাল বিকেলে প্রায় ৩০ জন ছাত্রী ডেপুটি সিভিল সার্জন ডাঃ আবুল হোসেনের কাছে মৌখিক অভিযোগ করে। সন্ধ্যায় ছাত্রীরা নার্স সুপারভাইজার উম্মে কুলসুম ও তার পুত্র কামরুল ইসলামের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে।
বিষয়টি সাংবাদিকরা জানতে পেরে সিভিল সার্জন অফিসে যাওয়ার সাথে সাথে অফিসের কয়েকজন কর্মকর্তা অফিস গেইটে তালা ঝুলিয়ে দেয়। সাংবাদিকদের সাথে ছাত্রীদের কথা বলতে দেয়নি অফিসের লোকজন। দীর্ঘ সময় নাটকের পর রাত সাড়ে ৯টায় ডেপুটি সিভিল সার্জন ডাঃ আবুল হোসেন অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি সাংবাদিকদের কাছে স্বীকার করেন। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, নার্সিং ইনস্টিটিউটের সুপার ও তার পুত্রের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে ছাত্রীরা একটি অভিযোগ দায়ের করেছে। তিনি বলেন, অপরাধী যেই হোক তার বিচার হবে। তিনি জানান, নার্স সুপার উম্মে কুলসুমার পুত্রকে ছাত্রীদের ক্লাস নেয়ার অনুমোদন সিভিল সার্জন অফিস দেয়নি। যদি তার পুত্র ক্লাস নিয়ে থাকে তারা বিষয়টি জানেন না।
এ ব্যাপারে নার্সিং ইনস্টিটিউটের ইনচার্জ উম্মে কুলসুমা সাংবাদিকদের জানান, পুত্রসহ তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সাজানো নাটক। ইনস্টিটিউটের ৩য় বর্ষের এক ছাত্রী ঘটনাটি সাজিয়েছে। তিনি জানান, ছাত্রীদের একটি পক্ষ ইন্ধন দিচ্ছে। এর মধ্যে ইনস্টিটিউটের ভিতর ও বাইরের লোক জড়িত। তিনি তার পুত্র কম্পিউটার রুমে যাওয়া আসার কথা স্বীকার করে বলেন, আমার পুত্র আমার সাথে কম্পিউটার রুমে যায় আবার চলে আসে। তার পুত্র কামরুল ইসলামের ক্লাস নেয়ার বিষয়টি স্বীকার করে তিনি বলেন, আমি সিভিল সার্জন অফিসকে জানিয়েছি। তারপর থেকে কামরুল গত জুন মাস পর্যন্ত ক্লাস নিয়েছে।