ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি বন্ধের দাবিতে বানিয়াচঙ্গ জনাব আলী ডিগ্রী কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীদের আকষ্মিক আন্দোলনে ছাত্র সংগঠনগুলো যেন ওয়ান এলিভেনের মতো পরিস্থিতির সম্মূখীন হয়েছে। ‘না পারি সইতে না পারি কইতে’ এমন অবস্থায় পড়েছে দীর্ঘদিন ধরে খুঁটির জোরে ক্যাম্পাসে দাপট খাটিয়ে আসা এসব সংগঠনের প্রভাবশালী নেতাকর্মীরা। যেসব রাজনৈতিক দলের নেতারা এতদিন এসব ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীদের ব্যবহার করে আসছিলেন বর্তমান প্রতিকুল পরিস্থিতিতে এসব রাজনৈতিক দলের নেতাদের কাছ থেকেও প্রকাশ্য সমর্থন না পেয়ে হতাশায় পড়েছেন ছাত্রনেতারা। এর মধ্যে অনেক প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের আন্দোলনের পক্ষে অবস্থান নিয়ে পত্র-পত্রিকায় বিবৃতি দেয়ায় আরো বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছেন ছাত্র সংগঠনগুলোর নেতারা। দুএকজন রাজনৈতিক নেতা ছাত্র সংগঠনগুলোর পক্ষে মৃদু সমর্থন জানালেও কেউই প্রকাশ্যে মন্তব্য করতে নারাজ। ক্যাম্পাসে ছাত্র সংগঠনগুলোর সন্ত্রাসনির্ভর দাপটের রাজনীতির কারণে আদর্শবাদী রাজনীতির ধারক-বাহক ছোট ছাত্রংগঠনগুলো কখনোই ক্যাম্পাসে অবস্থান নিতে পারেনি। সে কারণে ছাত্ররাজনীতি মানেই মারামারি-কাটাকাটি এমন বদ্ধমুল ধারণা এলাকার সাধারণ মানুষের মনে তীব্রভাবে গেঁথে রয়েছে। এছাড়া দীর্ঘদিন ধরে কলেজে ছাত্রসংসদ নির্বাচন না হওয়ায় সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে নেতৃত্ব বিকাশের চর্চা সম্ভব হয়নি। এ কারণে সন্ত্রাসনির্ভর ছাত্ররাজনীতির যাতাকলে পিষ্ট হতে হতে ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা সোচ্চার হয়ে উঠেছেন। ছাত্র সংগঠনগুলোর পদবী বহনকারী কোন কোন নেতাও ক্যাম্পাসের বাইরে ছাত্ররাজনীতি নিয়ে যাওয়ার পক্ষে প্রকাশ্য মত দিয়েছেন। এছাড়া সাধারণ শিক্ষার্থীদের উত্থাপিত দাবি শিক্ষকমাজ থেকে শুরু করে এলাকার প্রবীণতম রাজনৈতিক নেতৃত্ব, জনপ্রতিনিধি, অভিভাবকমহল এমনকি গভর্নিং বডির সদস্য পর্যন্ত যৌক্তিক বলে মন্তব্য করে আন্দোলনে একাত্মতা ঘোষণা করায় গোটা বানিয়াচঙ্গে ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি বিরোধী তুমুল সেন্টিমেন্ট সৃষ্টি হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত রবিবার ক্যম্পাসে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিতে জনাব আলী কলেজের সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা জেলা প্রশাসক বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করেন। এরপর থেকে এ নিয়ে এলাকায় তোলপাড় চলছে।