মেয়েকে বিয়ে দেয়ার পর যখন
সে আবার বাবার
বাড়ি আসে তখন মা খুব আগ্রহ
ভরে জানতে চায়
যে ঐ বাড়িতে তার কেমন লেগেছে ?
মেয়ে জবাবে বলে-
“ আমার ওখানে ভালো
লাগেনা। মানুষগুলো কেমন
যেন। পরিবেশটাও আমার
ভালো লাগছেনা”। মেয়ের
ভেতর এক ধরনের হতাশা
দেখতে পায় তার মা।
দেখতে দেখতে বেশ কিছুদিন
কেটে যায়। মেয়ের
চলে যাবার সময় চলে আসে।
চলে যাবার ঠিক আগের
দিন মা তার মেয়েকে নিয়ে রান্না
ঘরে প্রবেশ করেন। মা হাড়িতে
পানি দেন এবং তা গরম
করতে থাকেন।
একসময় যখন তা ফুটতে
থাকে তখন মা হাড়িতে গাজর,
ডিম আর কফির বিন দেন।
এভাবে বিশ মিনিট পর মা
আগুন নিভিয়ে ফেলেন।
একটি বাটিতে গাজর, ডিম
এবং কফির বিন নামিয়ে রাখেন।
এবার তিনি মেয়েকে উদ্দেশ্য
করে বলেন- “তুমি এখান
থেকে কি বুঝতে পারলে
আমাকে বল” ?
.
মেয়ে বিস্ময় প্রকাশ করে বলে-
“আমি দেখলাম তুমি গাজর,
ডিম আর কফির বিন সিদ্ধ
করলে মাত্র”।
.
মেয়ের কথা শুনে মা বললেন-
“হ্যাঁ, তুমি ঠিকই দেখেছ।
তবে তুমি কি আরও কিছু
লক্ষ্য করনি?”
মেয়ে বলে- “ না- মা,”
.
মা বলে-
“গাজর মোটামুটি শক্ত ধরনের,
ডিম খুব হালকা আর কফির
বিন খুবই শক্ত। কিন্তু যখন
এগুলিকে গরম পানিতে রাখা
হল তখন তিনটি জিনিসের তিন
রকম অবস্থা হল। গাজর খুব
নরম হয়ে গেল, আর ডিম শক্ত
হয়ে গেল আর কফির বিন
সুন্দর ঘ্রান আর
মিষ্টি স্বাদে পানিতে মিশে গেল”।
.
মা এবার দৃষ্টি অন্যদিকে নিয়ে
যেন অনেক অতীতে চলে যেতে
চাইলেন। তারপর আবার
বাস্তবে ফিরে এসে মেয়ের দিকে
ফিরে বললেন- “আমি তোমাকে
এখন যে কথাগুলি বলব,
আমার মাও ঠিক এইভাবেই
আমাকে এ কথাগুলি বলেছিল।
আমি জানিনা কথাগুলি
তোমার কতটুকু উপকারে
আসবে, তবে আমার জীবনকে
অনেক প্রভাবিত করেছিল”।
.
মা কিছুক্ষন বিরতি দিয়ে বলতে
লাগলেন-
“তুমি যদি তোমার স্বামীর
বাড়িতে নিজেকে কঠিনভাবে
উপস্থাপন কর, তবে প্রতিকূল
পরিবেশের সাথে তোমার সংঘর্ষ
হবে- তোমাকে দুর্বল করে ঠিক
গাজরের মতই নরম
করে ফেলবে- তোমার
ব্যক্তিত্বকে ভেঙে ফেলবে।
.
যদি তুমি নিজেকে নরম-ভঙ্গুর
করে উপস্থাপন কর
তবে প্রতিকূল পরিবেশ
তোমাকে কব্জা করে ফেলবে,
আঘাতের পর আঘাত
এসে তোমার হৃদয়কে একসময়
কঠিন করে ফেলবে ঠিক ডিমের মত।
.
কিন্তু তুমি যদি তোমার
ভালবাসা দিয়ে নিজেকে
প্রতিকূল পরিবেশের সাথে
মিশিয়ে দিয়ে তার
অবস্থাকে নিয়ন্ত্রণে নিতে পার
তবে পরিবেশ সুন্দর হয়ে উঠবে
ঠিক যেমন কফির বিন গরম
পানির সাথে নিজেকে মিশিয়ে
দিয়ে পানিকে সুস্বাদু
আর চারপাশকে মিষ্টি ঘ্রানে
ভরিয়ে দিয়েছে”।
.
পরের দিন যখন মেয়েটি তার
স্বামীর বাড়িতে যাচ্ছিল তখন
তার ভিতর এক আশ্চর্য শান্ত
ভাব আর এক দৃঢ় প্রত্যয়
প্রকাশ পাচ্ছিল।''
(অনুবাদকৃত গল্প-বিমূর্ত)
.
আমাদের চারপাশের পরিস্থিতি
সবসময় অনুকুল থাকবেনা,
তাই বলে নিজেকে পরিস্থিতির
কাবু না করে র্ধৈয্য ,ভালবাসা,
সহমর্মিতা নিয়ে পরিস্থিতিকে
কাবু করতে হবে । সুখ সবসময়
নিজেকেই তৈরি করে নিতে হয়।
(প্রত্যেক মা কে এমন হওয়া উচিৎ)
(পোস্টটি কেমন লাগল জানাতে ভুলবেন না)
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে মে, ২০১৬ সকাল ১১:৩৭