আমার বন্ধু জান্নাতবাসি। আমরা ক্লাস ৩ থেকে একইসাথে পড়াশোনা করেছি। SSC ও HSC তেও একই সাথে ছিলাম।জান্নাতবাসি আর্স আর আমি ছিলাম সাইন্স। প্রাইভেট থেকে শুরু করে ঘুরাঘুরি করতাম একইসাথে। HSC এর পর আমি পুরাদমে ব্যাবসা করতে শুরু করলাম। আর জান্নাতবাসী পড়াশোনার মাঝেই থাকলো। HSC এর পর ব্যাবসার খাতিরে অনেক বন্ধু বান্ধব এর সাথেই দেখা সাক্ষাত বন্ধ হয়ে গেছিলো। কারো সাথে দেখা হলেই সবার খবর নিতাম কে কোথাই কিভাবে কেমন আছে। ১৪২১ এর পহেলা বৈশাখ এ আমার নিজের গড়া একটি সামাজিক উন্নয়নশীল প্রতিষ্ঠান লং লাইফ ব্লাড ডোনেশন ক্লাব এর পক্ষ থেকে একটি অনুষ্ঠান করি। জান্নাতবাসিও ছিল আমাদের ক্লাবের সফল ব্লাড ডোনার। ১৪২১ এর পহেলা বৈশাখ আমাদের শেষ দেখা। এর পর আর দেখা হইনি তার সাথে। ১৪২৩ এর পহেলা বৈশাখ এর ২ দিন আগে রাতে যখন আমার বাড়িয়ে ডুকবো তখন এক ছোট ভাই আমাকে দেখে বল্ল, ভাই জান এই ছেলেটা আপনার বন্ধু জান্নাতবাসি না? ফেসবুকের সেই পোস্ট পড়ে আর সেই পোস্টের ছবি দেখে কেমন যানি নিজের বুকটাই একটা ব্যাথা অনুভব করলাম। বাড়ির সামনেই ছিলাম তবুও বাড়িতে হেটে যাবার শক্তি ছিলনা আমার পায়ে। বুকটা হুহু করে উঠলো। সারা রাত ঘুমাতে পারলামনা। পোস্টটা এমন ছিল- দুজন শিবির কর্মির ডিবি পরিচয়ে অপহরনের ৪ দিন পর গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার।জান্নাতবাসি ছিল শিবিরের একজন সাধারন কর্মি এটা আমরা সব্বাই যানতাম। জান্নাতবাসি এতই ভালো ছিল যে সাত চড়ে কথা বলতো না। সাধারন কর্মি হওয়াই এমন মেধাবি ছাত্রের এমন পরিনতি।আর কত মায়ের বুক এমন খালি হবে। আর কতো নিরপরাধ ছাত্র কে হারাতে হবে।হাইরে স্বাধিন বাংলা।
জান্নাতবাসি ছদ্ম নাম।আসল নাম মোঃ শামিম মাহমুদ
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ১১:৫৫