প্রিয় আরব, তোমার সম্মান কোথায়, তুমি কি জান? কোথায় তোমার উচ্চতা, অনন্যতা? তোমার মর্যাদার আসন নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন স্বয়ং বিধাতা। যেখানে তুমি অনন্য। আর কেউ নেই তোমার মত। তোমার মর্যাদা তো দুনিয়াবি কোন জিনিসের সাথে সম্পর্কিত নয়, তোমার ব্যাপার সম্পূর্ণ ঐশী।
তোমাতে রয়েছে এক পবিত ভূমি, হেজাজ ভূমি। যা আর কারো নেই। সে হেযাযের বুকে রয়েছে ‘বালাদিল আমীন’ মক্কা নগরী, যা পৃথিবীর সৃষ্টিগতভাবেই কেন্দ্র, প্রাচীন্তম নগরী, পবিত্র আর নিরাপদ নগরী হিসেবে আল্লাহ কর্তৃক ঘোষিত আর সংরক্ষিত।
তোমাতে রয়েছে আল্লাহর ঘর পবিত্র ‘কাবা শরীফ’ যার দিকে মুখ করে সিজদা করে দুনিয়ার কোটি মুসলমান। যেখানে নামাজ পড়লে এক রাকাতের মিনিময়ে এ লাখ রাকাতের পুন্য পাওয়া যায়। যে ‘কাবা’ বরাবর সাত আসমানের উপরে আল্লাহর আরশ স্থাপিত। যেখানে অহর্নিশি বর্ষিত হচ্ছে রহমত ও বরকত।
হে আরব,
তুমি কি ভুলে গেছে, তোমর কাছে রয়েছে ‘আরাফাত’ যেখানে বিচ্ছেদের পরে মিলন হয়েছিল আদম আঃ ও মা হাওয়ার। এই পবিত্র স্থানে অনুষ্ঠিত হয় পবিত্র হজ্ব। আর মিনা, সেখানে রয়েছে হযরত ইব্রাহীম আঃ ও শিশু ঈসমাইল আ: স্মৃতি-বিজরিত কত ঘটনা। তোমাতে আছে পবিত্র ‘যমযম’ কূপ, যে কূপের সৃষ্টি হয়েছে একান্ত আল্লাহর কুদরতী হাতে।
হে আরব,
তুমি তো নবীদের পুন্যভূমি। তোমার বুকে আসতেন মহান ফেরেশতা জিব্রাঈল আঃ। তোমার বুকে নাযিল হত ওহী, তোমার বুক এসেছে মহা-গ্রন্থ আল-কোরান। পবিত্র নবীর পদ-চারনা ছাপ তোমার ধুলিতে।
হে আরব,
তোমার কি মনেই নেই, তোমার বুকে রয়েছে পবিত্র ‘মদিনা’ নগরী, মসজিদে নববী, আর শুয়ে আছেন শ্রেষ্ঠ মহামানব, শেষ নবী, সাইয়েদুল কাওনাইন হযরত মুহাম্মাদ মুস্তফা সাঃ। শুয়ে আছেন খলিফা-ত্রয় আবু বক্বর, ওমর ও ওসমান রাঃ। আরো আছেন কত সাহাবী রাঃ, যারা ইসলামের জন্য জীবন বিলিয়ে দিয়েছেন।
হে আরব,
তোমার না আছে পবিত্র হারামাইন শরীফাইন, যেখানে কোন অন্যায় ও পাপ একেবারেই নিষিদ্ধ। নিষিদ্ধ মশা-মাছি হত্যা করাও। তোমার বুকে ফি বছর হজ্ব করতে যায় লাখ লাখ ধর্ম-প্রান মুসলিম; যারা তোমার মাটি থেকে ঈমানী তেজ নিয়ে আসয়ে যায়, ধর্মীয় আবহে অবগাহন করে পরিবর্তিত নতুন জীবনের পাঠ নিতে যায়। যারা তোমার বুকে যেয়ে গোনাহ মাফের জন্য কান্নাকাটী করে, আল্লাহর কাছে ক্ষমা চায়।
সুতরাং হে সৌদি আরব,
তুমি ভুলে যেও না, ইব্রাহীম আঃ এর দোয়া ও শেষনবীজীর (সাঃ) বরকতেই তোমরা টিকে আছে, তোমরা সুখে শান্তিতে আছে। উৎস-কে ভুলে যেও না। মূল-কে আকড়ে ধর। তোমাদের ব্যাপার দুনিয়াবী না, বরং আসমানী, ঐশী।
তোমাদের টিকে থাকার জন্য আমেরিকা-রাশিয়ার কাছে ধর্না দিতে হবে না। তোমাদের সম্মানের জন্য মহিলাদের আশ্লীল বানানো লাগবে না, ফ্যাশন শো দরকার নেই তোমাদের; সিনেমা হল-নাচ-গান দিয়ে তোমাদের কি হবে বলো; তোমাদের মাথায় এসব পোকা কিভাবে ঢুকল? ফুটবল, বেসবল, বক্সিং খেলা কি না হলেই নয়? এগুলা তো ধ্বংসের বাজনা।
তোমাদের ঐতিহ্য ও ধর্ম সংরক্ষন কর। তোমরা দয়া করে সেই পতিত ‘আইয়ামে জাহিলিয়াতের’ যুগে ফিরে যেও না, যেখান থেকে মহানবী সাঃ তোমাদের বের করে নিয়ে এসেছিলেন।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই মার্চ, ২০১৮ সকাল ১০:৪২