ফিরে আসা আবার ইকো পার্ক ট্রেইলে- ৩য় পর্ব
রাত প্রায় ১০ টা, সব দোকানপাট বন্ধ হয়ে গেছে। একটা ছোট খাওয়ার হোটেল খোলা পেলাম, তাও প্রায় বন্ধ হয় হয়। খাবার কিছু আছে কিনা জানতে চাইলাম, জানাল সব শেষ। ভিতর থেকে একজন বেড়িয়ে বলল কিছুক্ষণ অপেক্ষা করলে হয়ত কিছু ব্যাবস্থা করতে পারবে। সায় দিয়ে পিঠের বোঝাটাকে নামিয়ে একটু হাতমুখ ধুয়ে ফ্রেশ হয়ে নিলাম, এরই মধ্যে কিছুক্ষণের জন্য সে উধাও। অরেকজন জানাল যে সে তাঁর বাড়িতে গেছে আমাদের খাবারের সন্ধানে। মিনিট দশেক পরে সে হাজির খাবার নিয়ে। ভাত, আলুর ভর্তা আর ডাল, তাই দিয়ে আমরা খাওয়া আরম্ভ করলাম। এরই মধ্যে দুইজন হোটেলে এসে চায়ের খোঁজ করল। হোটেল মালিক জানাল যে চা শেষ তাছাড়া চুলাও বন্ধ করে দিয়েছে অনেক আগেই, তাই চা খাওয়ানো যাবে না। অতএব একজন একটা সিগারেট ধরিয়ে পাশের টেবিলে বসে অপরজনের সাথে ফিসফাস করে কিছু একটা আলাপ করছে। আমাদের খাওয়া প্রায় শেষ, আঁচ করলাম যে তাঁরা আমাদের নিয়ে কিছু একটা আলাপ করচ্ছে। যাই হোক একজনকে জিজ্ঞেস করলাম যে তিনি এইখানে স্থানীয় কিনা, সরাসরি উত্তরে না দিয়ে জিজ্ঞেসের কারন জানতে চাইল।
তখন আমাদের পরিচয় দিয়ে আশেপাশে কোথাও রাতে থাকার ব্যাপারে সাহায্য চাইলাম। আমরা ঢাকাতে কে কোথায় থাকি, কি করি, এখানে কেন এসেছি... নানা প্রশ্ন আরম্ভ করলেন, আরেকজন এসে আমার পাশে দাড়িয়ে রইলেন কিছুক্ষণের জন্য। হারিকেনের মৃদু আলোয় কিছুক্ষণ আমাকে দেখে দাড়িয়ে থাকা লোকটি আমাকে বললেন আপনি এর আগেও এদিকে এসেছিলেন, উত্তরে হ্যাঁ বললাম। সে আবার বলল আপনার সাথের অন্য তিনজন লোক ছিল তাঁরা কোথায়? জানালাম তাঁরা এইবার আসে নাই। তনময় ও আরিফকে দেখিয়ে বলল উনাদের আগে দেখি নাই, উনারা নূতন, উত্তরে হ্যাঁ বললাম। তখন সে পাঁশের অন্যজনের কাছে যেয়ে বলল স্যার আমি ওনাকে চিনেছি, উনি এর আগেও এদিকে এসেছেন, আগেরবার রংটিয়া ক্যাম্পের সামনে আমাদের কম্যান্ডার স্যারের সাথে উনার কথা হয়েছিলো। বুজতে পারলাম যে রংটিয়া ক্যাম্পের কম্যান্ডারকে বেশ বিরক্ত হয়ে রাগ দেখিয়েছিলাম তা এই সার্জেন্টের মনে আছে। পরিচয়ে জানলাম যে অপরজন হাতিপাগার বিজিবি ক্যাম্পের কম্যান্ডার। তখন কম্যান্ডার সাহেব সার্জেন্টকে বললেন চিনেছেন যখন, তখনতো আর অসুবিধা নাই এইবার উনাদের থাকার একটা ব্যাবস্থা করে দেন। আমরা গতরাতে রংটিয়া স্কুলের মাঠে তাঁবুতে থেকেছি জানিয়ে এই রাতটাও কোন খোলা স্থানে বা মাঠে তাঁবুতে থাকতে ইচ্ছুক জানালাম। কম্যান্ডার সাহেব তখন হোটেলের পিছনেই মুক্তিযোদ্ধা স্কুলের দারোয়ানকে ডেকে পাঠালেন। দারোয়ান বাড়িতে নেই তার ছেলে আসার পর তিনি দারোয়ানের ছেলেকে বললেন যে এই স্যারদের স্কুলে নিয়ে উনাদের থাকার ব্যাবস্থা করে দাও। কম্যান্ডার ও সার্জেন্টকে ধন্যবাদ জানিয়ে আমরা দারোয়ানের ছেলের সাথে স্কুলে রওনা হলাম।
রাতের অন্ধকারে ধানক্ষেতের মাঝ দিয়ে কিছুটা হেঁটে স্কুলে যেয়ে পৌঁছলাম। ছোট্ট একটা স্কুল মাঠ তাঁর পাশেই দোতলা স্কুল বিল্ডিংএর ঠিক মাঝ বরাবর সিঁড়ি দোতলায় উঠার জন্য আর নীচতলায় সিঁড়ির ডানপাশে কয়েকটা রুম এবং বাঁ পাশ সম্পূর্ণ ফাঁকা। হটাৎ করে দেখলে অনেকটা উপকূলীয় ঘূর্ণিঝড়ের আশ্রয় কেন্দ্রের মত মনে হয়। আর একটু পরে একটা লম্বা টিনশেড ঘর, তাঁর ভিতরে কয়েকটা ক্লাসরুম। আমরা স্কুল মাঠে তাঁবু খাঁটিয়ে থাকতে চাইলাম কিন্তু ছেলেটি নিশেদ করল, তখন স্কুল বিল্ডিং এর নীচ তলার ফাঁকা জায়গাটিতে থাকতে চাইলাম, তাতেও তাঁর আপত্তি। সে টিনশেড ঘরের একটি রুম খুলে কয়েকটা বেঞ্চ সরিয়ে আমাদের সেই জায়গায় থাকার ব্যাবস্থা করে দিল। অতএব আমরা তাঁবু খাঁটিয়ে শুয়ে পড়লাম।
পরদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে পাঁশের বাড়ির টিউব ওয়েলের পানিতে হাতমুখ ধুয়ে সবাই ফ্রেশ হয়ে নিলাম। তনময়ের তাড়া সত্ত্বেও বেশ আয়েশ করেই আস্তেধীরে রেডি হলাম। তাঁবু, ব্যাগপত্র সব গুছিয়ে নিয়ে নাস্তার জন্য হোটেলে আসতে আসতে প্রায় সকাল ৯টা। পরোটা, ডিম ও চা দিয়ে নাস্তা খেতে খেতে পাঁশের টেবিলে বসা এক বৃদ্দের সাথে আলাপ পরিচয় হল। তিনি একজন পঙ্গু মুক্তিযোদ্ধা নাম শাহেদ আলী, নাকুগাও এলাকাতেই তাঁর বাড়ি। বৃহত্তর ময়মনসিংহের উত্তরদিকের এলাকা ছিল তাঁর যুদ্ধক্ষেত্র। তিনি আমাদেরকে তাঁর যুদ্ধকালীন সময়ের বিভিন্ন সৃতির কথা বললেন। পাক বাহিনীর সাথে একটা অপারেশনে তাঁরা বেশ শোচনীয় অবস্থায় পরেন, সাথের কয়েকজন সহ মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। টানা সাতদিন কিভাবে না ঘুমিয়ে শুধু শালুক খেয়ে বিলের পানিতে লুকিয়েছিলেন; কিভাবে গুলিবিদ্ধ হলেন। বিভিন্ন সৃতির কথা বলতে বলতে তিনি আবেগ আপ্লূত হয়ে পরেন, তাঁর চোখ ছলছল করতে লাগলো। বর্তমানে তাঁর অবস্থা বেশ করুণ, এক আত্মীয়ের আশ্রয়ে থাকেন, আপন বলতে তাঁর কেউ নেই শুধু এক পালক মেয়ে ছাড়া। সেই মেয়েকে তিনি কয়েকমাস আগে মুক্তিযোদ্ধার কোটায় পুলিশে চাকুরি পাইয়ে দিয়েছেন। বর্তমানে শারীরিক অশুস্থতার জন্য প্রতিমাসে তাঁকে কয়েকশ টাকার ঔষধ সেবন করতে হয়, যা যোগার করা তাঁরপক্ষে বর্তমানে কষ্টকর। কিছু আর্থিক সাহায্য দিতেই তিনি অপারগতা জানিয়ে মুখ ঘুরিয়ে নিলেন, তনময় তাঁকে জরিয়ে ধরে নিজের ছেলের দেয়া ভেবে নিতে অনুরোধ করাতে, অবশেষে তিনি তা গ্রহন করলেন।
বেশ কিছুক্ষণ তাঁর সাথে আলাপ হল, তিনি খুড়িয়ে খুড়িয়ে আমাদের ভুগাই নদীর ব্রিজ পর্যন্ত এগিয়ে দিলেন। তাঁর কাছে দোয়া চেয়ে তাঁকে বিদায় জানিয়ে আমরা সামনের পথে পা বাড়ালাম। ভুগাই নদীর এই ব্রিজটি নুতন, কিছুদিন আগেই এইটার কাজ সমাপ্ত হয়েছে এখন উদ্বোধনের অপেক্ষায় বলে জানতে পারলাম, মুক্তিযোদ্ধা শাহেদ আলীর কাছে। তিনি আরও জানালেন যে আগের লোহার ব্রিজটি কয়েক বৎসর আগেই ভেঙ্গে পরেছে। মেঘালয়ের পাহাড় থেকে নেমে আসা ভুগাই নদীটি কিছুক্ষণ দেখার জন্য ব্রিজের উপর কিছুক্ষণ যাত্রা বিরতি করলাম। বলা বাহুল্য যারা দুর্গাপুরের সোমেসস্বরি নদী, টেকেরহাটের জাদুকাটা নদী, ডালুরার চলতি নদী, ভোলাগঞ্জের ধালাই নদী, বিছানাকান্দির নদী, জাফলংএর পিয়াইন নদী দেখেছেন, তারা ভাল বলতে পারবেন যে কোন নদীটি বেশী সুন্দর বা কোন নদীটি বেশী আকর্ষণীয়। অনেকেই একবাক্যে বলবেন যে সবগুলোই, কারন মেঘালয়ের পাহাড় থেকে নেমে আসা প্রতিটি নদীই তার আপন সৌন্দর্য ও আকর্ষণ নিয়ে আপন গতিতে বয়ে চলেছে। বৃহত্তর ময়মনসিংহের পাগলা, চেলাখালি বা ভুগাই কোনটাই এর ব্যাতিক্রম নয়। ভুগাই নদীর সৌন্দর্যে কিছুক্ষণ চোখ বুলিয়ে ব্রিজ পার হয়ে আমরা কালাকুমার নামক এলাকায় এসে পৌঁছলাম প্রায় সাড়ে ১০টায়।
এইদিকে ব্রিজের সংযোগ সড়কটি প্রায় কয়েক কিলোমিটার পর্যন্ত পাঁকা। ব্রিজের তৈরির সাথে সাথে এই সড়কটিও পাঁকা করা হয়েছে কয়েক কিলোমিটার। পাঁকা রাস্তা ধরে এগুতে থাকলাম বেশ কিছুক্ষণ। গতদিনের মত আজও বেশ রোদ, অনেক গরমও পরেছে, কাহিল হয়ে পরছি, বরাবরের মত একটু বিশ্রাম নিতেই তনময়ের তাড়া খেয়ে আবার এগুতে হচ্ছে। এইদিকে বনবাদরের তুলনায় লোকালয়ই বেশি, শুরুতে কিছুটা বনাঞ্চল পেলেও সামনে যতই এগুচ্ছি বনের আধিক্য ধীরে ধীরে কমে আসছে। যাও আছে তা বেশ দূরে দূরে, প্রায় কয়েক কিলো মিটার উত্তরে প্রায় বর্ডারে। বেশ কিছুদূর পর পর দু একটা ঘর বাড়ি বা লোকালয়, আর পথের দুপাশে সবুজ ধানের বিস্তৃতি।
পথিমধ্যে এক জায়গায় কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে প্রায় ঘণ্টা খানেক হেঁটে আমরা বৈশাখী বাজারে এসে পৌঁছলাম। চা, পানি খেয়ে কিছুক্ষণের বিরতি নিয়ে আবার রওনা হলাম। বাজারের পরই রামচন্দ্রকুরা বিজিবি ক্যাম্প চোখে পরল। কয়েকজন বিজিবি কর্মী ক্যাম্পের সামনে অবস্থান করছিল। আমাদের দেখে তাঁরা কোন রকম সন্দেহ বা জিজ্ঞাসার প্রয়োজনবোধ করল না, তাই আমরাও তাদের কিছু না বলে সামনে এগুতে থাকলাম। আধ ঘণ্টা হেঁটে আবার মায়াকাশির হাট নামে আরেকটি বাজারে এসে পৌঁছলাম। তবে এই বাজারটি বৈশাখী বাজার থেকে অপেক্ষাকৃত ছোট এবং নামেই বুজা যায় যে সপ্তাহের বিশেষ দিনে এই বাজারে হাট বসে। মায়াকাশির হাটে দেরী না করে সামনে এগুতে থাকলাম। কিছুটা এগিয়ে যেতেই গাছপালা দেখে সামনে বনাঞ্চলের উপস্থিতি টের পেলাম। দূরে পানিহাটার বনাঞ্চল ও টিলাগুলো কিছুটা চোখে পড়ল।
বেশ কিছুক্ষণ হেঁটে চললাম, রোদে যদিও অনেকটা কাহিল হয়ে পরছি। প্রায় ঘণ্টাখানেক হেঁটে এক জায়গায় কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে আবার হাঁটতে আরম্ভ করলাম। পানিহাটা পার হয়ে আরও অনেকটুকু এগিয়ে এসেছি, এইদিকে পাহাড় টিলা ও বনাঞ্চল নেই বললেই চলে। দুই পাশে শুধু সবুজ ধানেরক্ষেত আর গ্রামের ঘরবাড়িগুলো চোখে পরে। আরও প্রায় ঘণ্টা খানেক হেঁটে আমরা তেলিয়াখালি বিজিবি ক্যাম্পের কাছে এসে পৌঁছলাম। ঘড়িতে ততোক্ষণে প্রায় সোয়া ২টা। হালুয়াঘাট আর খুব বেশী দূরে নয়, এইভাবে এগুতে থাকলে আর দুই আড়াই ঘণ্টায় হালুয়াঘাট পৌঁছান সম্ভব, মনে মনে এই ভেবে অনেকটা আশ্বস্ত হলাম। ক্যাম্পের সামনে বাঁশের তৈরি বেঞ্চে বসে কয়েকজন বিজিবি কর্মীর সাথে বেশ কিছুক্ষণ খোলামেলা আলাপ হোল।
সকাল থেকে সমস্ত আকাশ জুড়ে সূর্যিমামা দাপটের সাথে প্রভাব বিস্তার করে আসছিল। তার রোদের দাপটে মাথার ঘাম শুধু পায়ে নয় মাটিতে ফেলেও হাঁটা খুব কষ্টসাধ্য মনে হচ্ছিল। প্রায় দুইটার পর থেকে সাদা সাদা মেঘগুলো এসে তার একচ্ছত্র আধিপত্যকে খর্ব করে আকাশে জড়ো হতে লাগলো। আমরাও কিছুটা ছায়ার আভাষ পেয়ে এইভেবে সস্থি পেলাম যে বাকি পথটুকু তাহলে আরামেই এগুতে পারব। বিজিবি কর্মীর সাথে আলাপে আলাপে প্রায় ২০/২৫ মিনিট পার করে দিলাম। ভালই লাগছিলো আলাপ করতে, কিন্তু তনময়ের তাড়া খেয়ে আলাপের ইতি টানতে হল।
বিজিবি কর্মীদের বিদায় জানিয়ে ক্যাম্পের পাশেই তেলিয়াখালি মুক্তিযুদ্ধের সৃতিস্তম্ভের দিকে এগিয়ে গেলাম। তেলিয়াখালি সৃতিস্তম্ভে কিছুক্ষণ থেকে ও ছবি তুলে আবার সামনের পথে পা বাড়ালাম। তেলিয়াখালি বাজার পেরিয়ে কিছুটা এগিয়ে যেতেই আকাশ কালো হয়ে বেশ মুশলধারে বৃষ্টি আরম্ভ হল। তিনজনই দৌড়িয়ে তিন জায়গায় আশ্রয় নিলাম। একটা ছোট চা, সিগারেটের দোকানে অনেকক্ষণ ধরে দাড়িয়ে রইলাম, বৃষ্টি কমার কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। এদিকে আরিফ ও তনময়েরও কোন খবর নাই, তাঁরা কোথায় তাও বুঝা যাচ্ছে না। বাতাসে বৃষ্টির জাপটায় দোকানে দাড়িয়েও অনেকটা ভিজে যাচ্ছি। উপায় না দেখে বৃষ্টি মাথায় নিয়ে কিছুটা দৌড়িয়ে সামনের একটি চায়ের দোকানে যেয়ে আশ্রয় নিলাম। এখানে আরিফের দেখা পেলাম। কয়েকবার তনময়ের মোবাইলে ফোন দিলাম, কিন্তু সে ফোন ধরচ্ছে না। হয়ত বৃষ্টির শব্দে সে রিং শুনচ্ছে না। বেশ কিছুক্ষণ পর সে ফোন দিয়ে জানাল যে সে কিছুটা পিছনে এক বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে।
অনেকক্ষণ পার হয়ে গেল, বৃষ্টি কমারও কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। এর মধ্যে কয়েক কাপ চা খেলাম। দিনটা ছিল দুর্গাপূজার দশমী। শুনেছি দুর্গা বিসর্জনের কারনে এইদিনে আকাশ ও প্রকৃতি কাঁদে, তাই এইদিনে বৃষ্টি হয়। প্রায় আরও আধ ঘণ্টা পার হয়ে গেল কিন্তু আমাদের অপেক্ষার পালায় আকাশ ও প্রকৃতির এই কান্নাকাটি কমার কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। এর মধ্যে তনময় এসে হাজির।
ঘড়িতে তখন প্রায় পৌনে ৪টা, কি করব সিদ্ধান্ত নিতে পারচ্ছিলাম না। বৃষ্টিতে ভিজেই রওনা দিব নাকি বৃষ্টি থামার জন্য অপেক্ষা করব। স্থানীয়দের কাছে জানতে পারলাম যে হালুয়াঘাট থেকে ঢাকার শেষ বাস ছেরে যায় বিকেল ৫টায়। তনময় আগে থেকেই জানিয়েছিল যে করেই হোক আজ রাতের মধ্যে তাকে ঢাকা পৌছাতে হবে এবং সেভাবে সে তাড়াও দিয়ে আসছিল। ১০/১৫ পর বৃষ্টি কিছুটা কমে আসল, ঠিক করলাম এই অবস্থায়ই রওনা দিব। কিছুটা এগিয়ে যেতে বৃষ্টি অনেকটা কমে গেল। গুড়িগুড়ি বৃষ্টিতে প্রায় ২০/২৫ মিনিট হেঁটে আমরা মাঝরাকুড়া বাজার পার হলাম। সময়ের স্বল্পতার কারনে বাজারে দেরী না করে আরও সামনে এগুতে থাকলাম। এদিকে রাস্তাঘাট পাকা, রিক্সা ও মোটর সাইকেলের চলাচল দেখা যাচ্ছে। প্রায় পৌনে ৫টা বাজে, তনময়ের পরামর্শে বাস ফেল না করার জন্য শাপলা বাজারের কয়েক কিলোমিটার আগে থেকে রিক্সা নিলাম হালুয়াঘাট বাসস্ট্যান্ডের উদ্দেশ্যে। ঠিক ৫টা ১০ মিনিটে বাসস্ট্যান্ডে এসে পৌঁছলাম এবং সৌভাগ্যক্রমে শেষ বাসটাও পেয়ে গেলাম। অতএব তিনদিনে প্রায় ৭৫ কিলোমিটার হাঁটার ইতি টেনে বাস চরে বসলাম ঢাকার উদ্দেশ্যে।
ফিরে আসা আবার ইকো পার্ক ট্রেইলে- শেষ পর্ব
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
কমলার জয়ের ক্ষীণ ১টা আলোক রেখা দেখা যাচ্ছে।
এই সপ্তাহের শুরুর দিকের জরীপে ৭টি স্যুইংষ্টেইটের ৫টাই ট্রাম্পের দিকে চলে গেছে; এখনো ট্রাম্পের দিকেই আছে; হিসেব মতো ট্রাম্প জয়ী হওয়ার কথা ছিলো। আজকে একটু পরিবর্তণ দেখা... ...বাকিটুকু পড়ুন
বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?
সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন
শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী
বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন
শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন
জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন
=বেলা যে যায় চলে=
রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।
সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন