পঞ্চাশের দশকের মাঝামাঝি নিঝুমদ্বীপে জনবসতি শুরু হয়। মূলত হাতিয়ার জাহাজমারা ইউনিয়ন হতে কিছু জেলে পরিবার প্রথম নিঝুমদ্বীপে আসে। নিঝুমদ্বীপ সংলগ্ন এলাকায় প্রচুর ইছা মাছ (চিংড়ি মাছ) ধরা পড়তো বিধায় জেলেরা এই দ্বীপের নাম দেয় ইছামতির দ্বীপ। এ দ্বীপের মাটি চিকচিকে বালুকাময়, তাই জেলেরা নাম দিলেন বাল্লারচর বা বালুর চর। এই দ্বীপটিতে মাঝে মাঝে বালির ঢিবি বা টিলার মত ছিল বিধায় স্থানীয় লোকজন এই দ্বীপকে বাইল্যার ডেইল বা বাল্লারচর বলেও ডাকতো। কালক্রমে ইছামতি দ্বীপ নামটি হারিয়ে গেলেও স্থানীয় লোকেরা এখনো এই দ্বীপকে বাইল্যার ডেইল বা বাল্লারচর বলেই সম্বোধন করে। নিঝুম দ্বীপ বা বাইল্যার ডেইল বা বাল্লারচর যে নামই হোক না কেন ভূমি মন্ত্রণালয়ের দিয়ারা জরিপ বিভাগ এই দ্বীপের জমি চর ওসমান মৌজা হিসেবে জরিপ করে। কথিত আছে সর্দার ওসমান নামের এক সাহসী বাথানিয়া ১০০ মহিষ নিয়ে প্রমত্তা মেঘনা পাড়ি দিয়ে প্রথম এই দ্বীপে অসে এবং দিয়ারা জরিপ কর্মচারীদেরকে জরিপ কাজে প্রভূত সহায়তা করে বিধায় তার নামে অনুসারে নিঝুম দ্বীপে মৌজার সরকারী নাম হয় চর ওসমান। ৭০ এর ১২ নভেম্বর প্রলয়কারী ঘূর্ণিতে সব নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। বিরান হয়ে যায় জনপদ। স্বাধীনতা পর বন বিভাগ এর দায়িত্ব নেয় এবং শুরু করে বনায়ন। সমগ্র নিঝুম দ্বীপের প্রায় ৩০০০.০০ একরে মানুষের বসতি রয়েছে এবং অবশিষ্ট অংশে ম্যানগ্রোভ বনায়ন রয়েছে। ইছামতির দ্বীপ বা বাইল্যার ডেইল বা বাল্লারচর বা চর ওসমান যে নামেই স্থানীয় ভাবে প্রচলিত হোক না কেন - ১৯৭৪ সালে হাতিয়ার তত্কালীন সাংসদ এবং যুব, ক্রীড়া ও বন প্রতিমন্ত্রী মরহুম আমিরুল ইসলাম ওরফে কালাম দেশী-বিদেশী পর্যটকদের চর ওসমানে নিয়ে যান এবং অবাক বিষ্ময়ে মুগ্ধ দৃষ্টিতে সবাই অবলোকন করলেন এর শান্ত স্নিগ্ধ রূপ এবং এই দ্বীপের নাম দিলেন নিঝুম দ্বীপ। সেই থেকে নিঝুম দ্বীপ হিসেবেই এর খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে।
যাতায়ত ব্যবস্থা
বাসেঃ
ঢাকার সদরঘাট থেকে প্রতিদিন পানামা ও টিপু ৫ নামের লঞ্চ হাতিয়ার উদ্দেশে ছাড়ে সন্ধ্যা ৬টায়। ভাড়া ডেক ২০০ টাকা, সিঙ্গেল কেবিন ৭০০ টাকা, ডাবল কেবিন ১২০০ টাকা এবং ভিআইপি ১৬০০ টাকা। সময়মতো লঞ্চ ছাড়লে এবং আবহাওয়া ঠিক থাকলে ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া লঞ্চটি পরদিন সকাল ১০টার মধ্যে হাতিয়া লঞ্চঘাটে পৌছবে। পানামা লঞ্চের যোগাযোগ : ০১৭৪০৯৫১৭২০। এ ছাড়া বন্দরনগরী চট্টগ্রামের সদরঘাট থেকেও সপ্তাহের একটি নির্দিষ্ট দিনে চট্টগ্রাম থেকে একটি জাহাজ হাতিয়ার উদ্দেশে ছেড়ে যায়।
বিস্তারিত দেখুনঃ
Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১০ রাত ১০:১৪