আমার প্রিয় কবি Felix Römer এর একটি কবিতা র ভাবানুবাদ করার চেষ্টা করেছি । আপনাদের মন্তব্য পেলে খুব খুশি হব ।
Felix Römer জার্মানীর অত্যন্ত জনপ্রিয় এক কবিয়াল । এখনও কোন কবিতার বই প্রকাশিত হয়নি তাঁর । যে কবিতাটা এখানে অনুবাদ করার চেষ্টা করেছি সেটারও কোন টেক্স্ট খুঁজে পাইনি । শুনে শুনেই অনুবাদ করতে হয়েছে ।
কিভাবে আমি একবার (অনেকটা) অন্যদের মত হয়ে গেছিলাম অথবা সেকেন্ডক্লাসে প্রতিদিন
কখনও কখনও টুপ টুপ করে গড়িয়ে পরে সবকিছু
একটি বিরতিহীন ধীর গতির রেলগাড়িতে বসে আছি আমি নিশ্চুপ
নেই সাথে কোনও গভীর অনুভুতি বা সামান্যতম কষ্টও
দেখি জানালা দিযে বাইরে সময়ের বয়ে চলা
যাক না সে বয়ে যেখানে ইচ্ছা, বিরক্তি নেই তাতে কোনও আমার
এয়ার কন্ডিশনড্ ঘরে বসে ইচ্ছাও করেনা ভাবতে এসব নিয়ে
ভাল আছি বেশ এখানে, সহজ গৎবাঁধা জীবন
জীবনে না আছে কোনও সন্দেহ, না আছে খোদার কাছে কোনও প্রশ্ন
শুনি মাঝে মাঝে নতুন কোনও গান বা কবিতা
খুলে দেয় তারা আমার মনের জানলা
বন্ধ করে দিই জোর করে আবার তাদের
কারণ খোলা বাতাসে স্বাদ পাই ভাঙ্গনের আর ঘর ছাড়ার ব্যাথার
সে ব্যাথার তীব্রতায় কুঁচকে যায় আমি
নিম্নচাপের নিঃশ্তব্দ প্র্রহরে পারি না বুঝতে
যে, এই খোলা বাতাসে না থাকলে পারব না আর বাঁচতে
ভাবি শুধু ....
ভাল আছি বেশ এখানে, সহজ গৎবাঁধা জীবন
জীবনে না আছে কোনও সন্দেহ, না আছে বিধাতার কাছে কোনও অনুরোধ
মনে পরে এখনও একলা পথ চলার কথা
যখন আমার ইচ্ছাতেই র্নিভর করতো সামনে যাওয়া
জানতাম, আমি ছিলাম খুব ধীর গতির
কিন্তু আমি নিজেই ঠিক করতাম চলার দিক
এবং অজানার পথে চলা নিয়ে থাকতাম সদা সংশয়ে
আজকাল আরামে শুয়ে থাকি শুধু বালিশে মাথা দিয়ে
আছে শুধু এখন নিয়মের এই তন্ত্র, নতুন কোনও অভিজ্ঞতার নেই সুযোগ কোনও
সন্দেহ নেই কোন আর বিধাতায়, জীবনের কাছে নেই কোনও প্রশ্ন
এভাবেই সময়ের হাতে ছেড়ে দিয়েছি নিজেকে
অলসতাকেই পুঁজি করে পেতে চাই কিছু মাঝে মাঝে
যখন একটা বই পড়ি নিচের শিরোনামে
“স্বাধীনতা, তুমি আমার স্বাধীনতা”
এরই মাঝে বয়ে চলে গাড়ি বিরতিহীন
শেষ র্পযন্ত প্রশ্ন করতে বাধ্য হয় আমি, নিজেকে,
যাস কোথায় তুই, প্রতিবন্ধী বীর ?
পারিনা দিতে কোনও উত্তর, পারিনা বলতে কোনও কিছুই
না পারার এই অনুভুতি হয়ে যাচ্ছে ধীরে ধীরে অসহ্য
যে পথে চলছি এখন, নেই সেখানে পরির্বতনের সুযোগ কোনও
চাহিদা মেটাতেই কেটে যায় সেখানে প্রতি টি দিন
ভাবি মাঝে মাঝে, অন্য কামরার যাত্রীরা, আছে মনে হয় ভাল, আমার চেয়ে
পারিনা দেখতে নতুন কোনও স্বপ্ন, যা আমার নিজের,
পারিনা নিজেকে বোঝাতে জঘন্য এই রেলগাড়ি থেকে ঝাঁপ দিতে
জানালা খুলে নিঃশ্বাস নিই বুক ভরে
বুঝতে পারি আর বন্দী থাকতে পারব না এখানে
চলন্ত ট্রেন থেকে লাফ দেয়া বিপদজনক, তা জানি
কিন্তু ধীরে ধীরে নিজেকে হত্যা করতে চাই না আমি
ঝাঁপ দিই, আঁছড়ে পরি মাটিতে, হই মারাত্মক আহত
প্রচন্ড এই ব্যাথা কিভাবে যেন জাগিয়ে তোলে সারাদেহ
ছিঁড়ে ফেলি জামাটাকে, বাঁধি ক্ষতগুলোকে
খুঁজে পাই ছোট্ট একটি নদী, ধুয়ে ফেলি নিজেকে,
নগ্ন এবং পরিচ্ছন্ন, একটু এলোমেলো,
খোলা মাঠে দৌড়ে খুঁজে পাই নিজেকে নতুন করে,
স্বর্গীয় এক নেশায় ভরে উঠে মন,
নেই কোনও প্রশ্ন জীবনের কাছে, নেই বিধাতাকে আর কোনও প্রয়োজন |
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে আগস্ট, ২০০৯ রাত ৩:৩২