অনেকদিন ধরেই ভাবছিলাম সিনেমা রিভিউ লেখা শুরু করবো কিন্তু নানান ব্যাস্ততার জন্য হয়ে উঠেনি। ফাইনলি আজকে শুরু করতে পারছি। শুরুটা টাইগার জিন্দা হে দিয়েই হলো আর বছরের একেবারের শেষের দিকে এসে।
গতকাল রাত্রেই শেষ করেছি সালমান খান অভিনীত "টাইগার জিন্দা হে" যেটা মূলত এর "এক থা টাইগার" এর সিকুয়্যাল। এখানেই ঝামেলা! নিখোঁজ টাইগার মানে সালমান কে খুঁজে আনাটা সিকুয়্যাল বুঝলাম কিন্তু এরপর আর সিকুয়্যাল কি ছিল আমার বুঝে আসেনাই। অনেক মনোযোগ দিয়ে দেখার চেষ্টা করেছি সিনেমা যেহুতু রিভিউ লিখবো বলে আগেই ভেবেছিলাম কিন্তু আমি বারবার খাওয়া, ফেসবুকের মেসেজ চেক ইত্যাদির ব্রেক নিচ্ছিলাম। যাইহোক সিনেমার মূল রিভিউতে যাওয়ার আগে আরেকটা বিষয় বলি, আমেরিকার লোকজন হিন্দি বলা শুরু করছে আর আমাদের দেশে আপনারা হিন্দি সিরিয়াল কে মানতে পারেননা এটা কিন্তু ঠিক না হুহ! সিনেমাতে সবাই হিন্দি বলে এটা আমাকে বারবার হাসাতে বাধ্য করছে মনে হচ্ছিল হিন্দি ডাবড দেখতেছি।
এবারে আসি রিভিউতে,
মূল গল্পঃ আট বছর আগে হারিয়ে যাওয়া দুই দেশের দুই এজেন্ট যারা নিজেরা গা ঢাকা দিলেও এজেন্সি যাতে তাদের খুব সহজে খুঁজে পায় সে ব্যাবস্থা করে রেখেছেন যার মাধ্যমে খুঁজে পাওয়া যায় টাইগার আর টাইগার স্ত্রীকে। এরপর শুরু হয় আসল খেলা মানে গল্প, জঙ্গিদের দখলে নেয়া হাসপাতাল থেকে উদ্ধার করতে হবে ৪০ জন নার্সকে। বউ স্ত্রীর মায়া ছেড়ে দেশের ডাকে সাড়া দেন টাইগার। কিন্তু কিভাবে যেনো ভাবীও তাকে ফলো করে পৌঁছে যান ভাইয়ার কাছে। ভাইয়া সারাদিন রাত হোমওয়ার্ক করে নিজের টিম তো ঠিকই বানিয়ে নেন কিন্তু এটা জানেননা যে হোস্টেজ রাখা ৪০ নার্সের ২৫ ভারতীয় আর ১৫ পাকিস্থানী এটা কিন্তু ভাবী গিয়ে তাকে বলবে ওকে। নাইলে ভাবীর এন্ট্রি আসলে জমে না! ফাইনালি কিছু হলিউডি থ্রিলার দিয়ে শেষ হবে এ উদ্ধার কাহিনী মাঝে মাঝে বেশ বিনোদন থাকবে একশানে, থ্রীলিং এ । কিন্তু গল্পের নায়ক নায়িকার বেঁচে থাকার জন্য শেষ অব্দি পরিচালক যা দেখালেন সেটা হলো, যেসব জঙ্গিরা কথায় কথায় গুলি চালায়, সেলিব্রেশানে গুলির মেলা বসিয়ে দেয় তাঁরা কেবল টাইগার ভাই আর ভাবীর সামনে গেলে তরোবারি লাঠি এসব নিয়ে যায়। খুব মজার।
অভিনয়ঃ সালমান ভাইজান! সুপার একশান অভিনেতা। এখানেও তাঁর কমতি নেই। তাঁর ভক্তদের যেভাবে এর আগের সিনেমায় হতাশ করেছেন এখানে সেটা একেবারে পুষিয়ে দিয়েছেন। হতাশ করেননি ভাইজানের পাকিস্থানী ভাবী। সেই সাথে ভিলেন! সবার অভিনয়ই ভালো লাগছে আমার কাছে তবে সবাইকে ছাপিয়ে আমার নজরে সেরাটা ভিলেনই দেখিয়েছে। ভালো স্ক্রিন টাইম ছিল। এছাড়া বাকিদের সবার অভিনয়ই ভালো লাগছে।
একশানঃ একশান যিনি পরিচালনা করেছেন তিনি হলিউডের একশান পরিচালক তাই খুব বেশী একটা খারাপ লাগবেনা কিন্তু আপনি মিশন টাইপের দুই একটা সিনেমা যেমনঃ "এক্ট অফ ভ্যালর" বিহাইন্ড দা এনিমি লাইন" দেখে থাকলে এই সিনেমার একশান আপনাকে বেশ হাসাবে। আর সেগুলো মাথা থেকে ঝেরে বলিউড সিনেমা চিন্তা করলে ঠিক আছে।
সিনেমেটোগ্রাফিঃ ভালোই লাগছে। বেশী কিছু বলার নাই মনোযোগ ধরে রাখতে পারলে হয়তো বেশী কিছু বলতে পারতাম।
ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকঃ খুব বাজে। একেবারেই মানানসই না। এই সিনেমার সব থেকে বাজে ব্যাপারটা মনে হয় এইটাই আমার নজর। একেবারে খাপ ছাড়া একটা ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক।
রেটিংঃ যতটুকু খারাপ আইডিয়া নিয়ে দেখা শুরু করেছিলাম যে পুরাটা ওয়ান ম্যান শো হবে ঠিক ততটা হয়নি সেজন্য একেবারে খারাপ লাগেনি। একটা টিম তাও দেখা গেছে সিনেমায়। সালমান খানের ফি ছাড়া ১৪০ কোটির সিনেমার রেটিং নিয়ে কোন কার্পণ্য নয় আর এটা আমার প্রথম রিভিউ তাই হাত খুলে নাম্বার দিবো।
আইএমডিবি রেটিংঃ ৭.৮।
আমারঃ ৬।
ডাউনলোড লিংকঃ টরেন্ট লিংক সর্বত্র বিদ্যমান খুজলেই পেয়ে যাবেন।
বিদ্রঃ প্রথম রিভউ লিখলাম কেমন হয়েছে জানাবেন আর কিভাবে লিখলে ভালো করতে পারি সেটাও জানাবেন প্লিজ।
গরীবের সিনেমা রিভিউ-০১।