এইচএসসি পরীক্ষার্থী হলেও তাকে তার মা কলেজে নিয়ে আসতেন এবং নিয়ে যেতেন। এই নিয়ে সহপাঠীদের উস্কানি সে মোকাবেলা করত হাসি দিয়ে। তার চেহারায় হাসি লেগে থাকত সবসময়। পড়াশোনায় খুব সিরিয়াস। একদিনও ক্লাস কামাই নেই। পরীক্ষার জন্য সেইরকম প্রস্তুতি নিলেও ভাল নম্বর পেত না। পরীক্ষার হলে হঠাৎ অন্যমনস্কতা পেয়ে বসত তাকে। শিক্ষক ধমক দিলে তখন আবার লেখা শুরু করত।কথা বলত মাথা নিচু করে। তার দুনিয়া খুবই ছোট। কুড়ি ছুই ছুই জীবনে মিরপুরের বাইরেই যায়নি কখনো। নেই বন্ধু। নেই বান্ধবী। বয়সের চেয়ে কম মানসিক পরিপক্কতা নিয়ে বেড়ে উঠা আবিরকে তার শিক্ষকেরা ভালবাসেন। মায়া মিশ্রিত ধমক দেন। হাসে সে। দুই তিনজন শিক্ষকের সাথে একটু বেশি বোঝাপড়া তার। তার অস্বাভাবিকতা দেখা যেত বিভিন্ন সময়। সমগ্র নগরবাসী যখন গভীর নিদ্রায় তখন দেখা গেল সে জেগে আছে। পরীক্ষায় কম নম্বর পেয়েছে এই তথ্য দেওয়ার জন্য রাত তিনটায় ভুল ইংরেজিতে মেসেজ পাঠিয়েছে তার এক শিক্ষিকাকে। মেসেজে লেখা :Exam is failed.
অটিস্টিক হিসেবে বিবেচনা করে অনেকে। একটা গন্ডির মধ্যে বেড়ে ওঠার ফলে মানসিক পরিপক্কতার বিকাশ ঘটেনি বলেও মনে করেন অনেকে।পরিবারকে দায়ী করেন কেউ কেউ।তার পিতা ডাক্তার । বোন ডাক্তার।
এই মহামারী আবিরের পরিবারকে ঝাঁকি দেয় একটা। তার ডাক্তার পিতা ভাইরাসের থাবায় আইসিইউতে লড়াই করছে। আক্রান্ত বোনও। অস্বাভাবিক মানসিকতার এই বিনয়ী ভদ্র বালকটির কথা ভেবে শিউরে উঠেন কেউ কেউ।
গত রাত্রে তিনটায় আবিরের ফোন থেকে একটা মেসেজ আসে সেই শিক্ষিকার ফোনে।লেখা,Father is ICU.
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই জুন, ২০২০ রাত ৯:৪২