বিচারকের এজলাশ। জামসেদ আসামীর কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে আছে। বিবাদীপক্ষের উকিল তার বাগ্নিতার স্বাক্ষরস্বরুপ অনর্গল জামসেদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমানের চেষ্টা চালাচ্ছেন। জামসেদের বিরুদ্ধে জনৈক আলতাফকে বিনা উসকানিতে খুন করার অভিযোগ আনা হয়েছে। ওমর আলী নামের এক সহযোগী তার সঙ্গে ছিল বলে বলা হচ্ছে। ওমর আলী নামের লোকটি তার পাশেই দাঁড়িয়ে আছে। লোকটিকে সে আগে কখনো দেখেনি বলেই মনে হচ্ছে। বাগ্নি উকিল একের পর এক জেরা করেই যাচ্ছে জামসেদকে খুনি প্রমানের জন্য। কেন খুন করেছে সে এটাও জানতে চাচ্ছে। জামসেদ বিচারককে বারবার বোঝানোর চেষ্টা করছে সে খুন করেনি। তার পক্ষে খুন করার হিম্মত জড়ো করা কঠিন কাজ।
সর্বশেষ অস্ত্র হিসেবে বিবাদী পক্ষের উকিল একজন সাক্ষী হাজির করার অনুমতি চাইলেন আদালতের কাছে। অনুমতি পাওয়ার পরপরই উকিল সাক্ষী হিসেবে জনৈক আলতাফকে তলব করলেন।এজলাশের প্রহরীও উকিলের চাইতে কড়া আওয়াজে 'সাক্ষী আলতাফ' বলে হাক ছাড়লেন। নির্বিকার ভঙ্গিতে এজলাশে প্রবেশ করলেন আলতাফ। সাক্ষীর জন্য নির্ধারিত স্থানে দাঁড়ানো মাত্রই উকিল তার কাছে জানতে চাইলেন কে তাকে হত্যা করেছে। জামসেদের দিকে আঙ্গুল উচিয়ে বললেন, 'এই লোক! আমি তখন মরা রাত দেখতে বাইর হইছিলাম রাস্তায়। এক দুইটা মোরগ ডেকে উঠেছিল এখানে সেখানে। বেতমিজ কুকুরগুলি ঘেউ ঘেউ করছিল ক্রমাগত। তখন এই লোকটা.....'
বিচারক তার সামনে থাকা কাগজে মাথা নিচু করে কিছু একটা লিখতে উদ্যত হলেন। আলতাফকে দেখা গেল জামসেদের দিকে এগিয়ে আসতে। লোকটা মাথা নিচু করে এগুচ্ছে। তার চোখ লাল।
মেরুদন্ড হিম হয়ে আসে জামসেদের।বিহবল হয়ে এজলাশের এক্সিট খুজে সে।খুজে পায় না।
নভেম্বর রেইন গানের টোনে ফোন বাজে জামসেদের। জানালায় কুয়াশার দাপট।আরেকটা দিন শুরু।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ১১:৫০